এবার বাংলাদেশেও প্লাজমা থেরাপির পথে করোনা ‍মুক্তির স্বপ্ন

করোনাভাইরাসের সুনির্দিষ্ট কোন প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কার না হলেও থেমে নেই করোনা থেকে মুক্তির উপায় বের করার প্রচেষ্টা। অনেকগুলো প্রচেষ্টার একটি হলো প্লাজমা থেরাপি। ইউরোপের একাধিক দেশের পর প্রতিবেশী ভারতও প্লাজমা থেরাপির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। রাজধানী ঢাকায় প্লাজমা থেরাপি নিয়ে কাজ করছেন চিকিৎসকদের একটি দল।

তাদের একজন ডা. আশরাফুল হক। তিনি শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন এন্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারির সহকারী অধ্যাপক। সেল থেরাপি বিশেষজ্ঞ ডা. আশরাফুল হক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, করোনা আক্রান্ত থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের শরীরের অ্যান্টিবডি বা প্রোটিন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কাজ করে। সুস্থ হওয়া রোগীর রক্তের প্লাজমায় পাওয়া যায় এই অ্যান্টিবডি।

প্লাজমা হলো রক্তের মূল অংশ দুটি অংশের একটি। অপরটি হলো রক্ত কণিকা। রক্তের তরল, হালকা হলুদাভ অংশকে প্লাজমা বলে। রক্তকণিকা ব্যতীত রক্তের বাকি অংশই প্লাজমা। মেরুদন্ডী প্রাণীদের রক্তের প্রায় ৫৫ ভাগ প্লাজমা।

আক্রান্ত যেসব রোগীর দেহে ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় না, তাদের দেহে সুস্থ ব্যক্তির প্লাজমা ব্যবহার করা যাবে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যে প্লাজমা থেরাপি শুরু করেছে। ভারতেও ট্রায়াল চলছে। ইতিপূর্বে ২০০২ থেকে ২০০৪ সালে সার্স মহামারির সময় প্লাজমার চিকিৎসা কার্যকর প্রমাণ হয়েছিল বলেও তিনি জানান।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘ডা. আশরাফুল হকের এই প্রচেষ্টা যদি সফল হয় আমরা দ্রুত প্লাজমা ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় যাবো। তখন করোনা চিকিৎসায় এটা হবে একটা মাইলফলক।’

ডা. আশরাফুল হক বলেন, রাজধানী ঢাকায় করোনা থেকে সুস্থ হয়ে এক চিকিৎসক প্লাজমা দান করেছেন। ঢাকায় ব্লাড ব্যাংকের আদলে প্লাজমা ব্যাংক প্রস্তুত করা হচ্ছে।

তিনি জরুরিভিত্তিতে সারা দেশে প্লাজমা ব্যাংক ডেভেলপ করারও আহ্বান জানান।

কিছুদিন ধরেই ভারতের কয়েকটি রাজ্যের হাসপাতালে পরীক্ষামূলকভাবে প্লাজমা থেরাপি শুরু হয়েছে। যেসব রোগীর দেহে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে না তাদেরকেই এ মুহূর্তে এই প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হচ্ছে। দিল্লির স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, প্লাজমা সংগ্রহ করে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা করা হবে। এতে কয়েক জন সুস্থও হয়ে উঠেছেন বলে জানা গেছে।

৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন মোট ৭ হাজার ৬৬৭ জন। মারা গেছেন ১৬৮ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন মোট ১৬০ জন ব্যক্তি। সারা বিশ্বে এ যাবৎ করোনায় মৃত্যু সোয়া ২ লক্ষ ছাড়িয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে ৩২ লাখের বেশি মানুষ। সুস্থ হয়েছে ১০ লাখের অধিক মানুষ।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!