এপিক ল্যাবে করোনা সন্দেহে রোগী লাঞ্ছিত, না দেখেই দেওয়া হল প্রেসক্রিপশন

করোনা উপসর্গ সন্দেহে এক রোগীকে লাঞ্ছিত করা হল চট্টগ্রামের বেসরকারি ল্যাব এপিক হেলথ কেয়ারে। এমনকি উপস্থিত লোকজনের সামনে অপমান করে চেম্বার থেকে বেরও করে দেওয়া হয়— এমন অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের বেসরকারি ল্যাব এপিক হেলথ কেয়ার লিমিটেডের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. প্রতীক চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

করোনা উপসর্গ আছে— শুধুমাত্র এমন সন্দেহে প্রিয়তোষ দাশ নামে এক রোগীকে চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা সিটি করপোরেশনের সামনে অবস্থিত এপিক হেলথ কেয়ারের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. প্রতীক চৌধুরী লাঞ্ছিত করেন।

শুধু তাই নয়, পরে ওই রোগীকে না দেখেই সঙ্গে আসা তার স্ত্রীর কথামতো চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দেন ওই ডাক্তার। এতে ফি বাবদ ৮০০ টাকার দেওয়ার পরও সঠিক চিকিৎসাসেবা না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন এই রোগী।

জানা গেছে, গত ২৯ জুন সকালে পায়ের ব্যাথা নিয়ে স্ত্রীকে সঙ্গে চিকিৎসা করাতে যান ভূক্তভোগী প্রিয়তোষ দাশ। সিরিয়াল অনুযায়ী ডাক্তারের চেম্বারের ঢোকেন তিনি। প্রিয়তোষ বলেন, ‘চেম্বারে ঢোকামাত্রই রোগের বিস্তারিত তথ্য বলার আগে হঠাৎ খারাপ আচরণ শুরু করেন ডাক্তার। এরপর ওই সময় অন্যান্য রোগীদের সামনে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে লাঞ্ছিত করেন।’

ভুক্তভোগী প্রিয়তোষ দাশ বলেন, ‘গত ১৮ জুন অফিস থেকে নামার পথে সিঁড়িতে পড়ে পায়ে প্রচণ্ড ব্যাথা পাই। এরপর ওইদিন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে টিকিট কেটে চিকিৎসা নিই। পরে ব্যাথার কারণে শরীরে চলে আসে গায়ের জ্বর। ওইদিন (২৯ জুন) সকালে হালকা জ্বরও ছিল শরীরে। আমার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ডা. প্রতীক চৌধুরীকে দেখাতে যাই সেখানে। ওই সময় চেম্বারে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে আমার পুরো বক্তব্য না শোনার আগেই উনি শুরু করেন চিৎকার চেঁচামেচি। এরপর উপস্থিত লোকজনের সামনে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার পাশাপাশি লাঞ্ছিতও করেন। পরে আমাকে বের করে দিয়ে আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দেন তিনি।’

ওইদিন সেখানে আগত রোগীদের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, দূরত্বের মধ্যে রোগী দেখেন তিনি (ডা. প্রতীক চৌধুরী)। সেখানে মিনিট যেতে না যেতেই প্রেসক্রিপশন লেখার পর রোগীপ্রতি ফি হিসেবে নিয়ে নেন ৮০০ টাকা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক্তার প্রতীক চৌধুরী বলেন, ‘আমি একজন ডাক্তার হিসেবে কেন এ ধরনের আচরণ কেন করব? রোগীরা যদি সামান্য বিষয় নিয়ে আমাদের ওপর অভিযোগ করেন, তাহলে তো করোনার মধ্যে আর চেম্বার করা যাবে না।’

‘ওই রোগী ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন ভেঙ্গে চেম্বারে এসেছেন ওইদিন। চেম্বারের এ খবর শোনার পর অন্য রোগীদের মধ্যে একধরনের করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আমার পরিবারের নিষেধ থাকার পরও ঝুঁকি নিয়ে চেম্বার করছি।’— যোগ করেন এই চিকিৎসক।

এপিক হেলথ কেয়ারের নির্বাহী পরিচালক টিএম হান্নান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ডা. প্রতীক চৌধুরী এপিকে কর্মরত কেউ না। তিনি এপিক আন্দরকিল্লা শাখায় চেম্বার করেন মাত্র। রোগীর সঙ্গে যদি এ ধরনের কোন আচরণের ঘটনা হয়ে থাকে— এর দায় তার নিজের, এপিকের নয়।’

মুআ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!