‘এন্ডে আইলে অনুমতি লই আইবান, লাস্ট ওয়ার্নিং’— ছাত্রলীগ সভাপতির হুমকি!

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ানের গাড়িবহরে হামলা ঘটনায় পাওয়া এক অডিও ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে।

১ মিনিটের ওই অডিওতে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বোরহান উদ্দিন নিজের পরিচয় দিয়ে বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আবুকে ফোনে হুমকি দেন। অনে ক্ল্লিাই আস্যন দে— এই প্রশ্ন দিয়ে শুরু হওয়া ফোনালাপের একপর্যায়ে ছাত্রলীগের সভাপতি বোরহান পৌর মেয়র আবুকে হুমকি দেন এই বলে—’এন্ডে আইলে অনুমতি লই আইবান, লাস্ট ওয়ার্নিং’ (এখানে আসলে অনুমতি নিয়ে আসবেন, শেষবারের মতো সতর্ক করে দিচ্ছি)।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে বিএনপি এক নেতার প্রয়াত আত্মীয়ের লাশ দেখে ফেরার পথে পৌরসভার কধুরখীল ২ ওয়ার্ডের পাটানপাড়া নামক স্থানে চট্টগ্রাম ৮ আসনে ধানের শীষের সম্ভাব্য প্রার্থী আবু সুফিয়ানের গাড়িতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। চরণদ্বীপ এলাকা থেকে জানাজার নামাজ পড়ে আসার সময় কধুরখীলে আকস্মিকভাবে আবু সুফিয়ানের গাড়ির গতিরোধ করে রাতের আঁধারে ইট নিক্ষেপ করতে থাকে গাড়ি লক্ষ্য করে।

বিএনপি নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বোরহানের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি দল হামলা চালিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ানের গাড়ির কাঁচ ভাংচুর করে। বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ আবু, নগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন লিপু, মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জানে আলম জিকু ওই গাড়িতে ছিলেন। গাড়ির চালক ইয়াসিন এ ঘটনায় আহত হন।

এদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ানের উপর শুক্রবার রাতে হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিএনপি। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান।

'এন্ডে আইলে অনুমতি লই আইবান, লাস্ট ওয়ার্নিং'— ছাত্রলীগ সভাপতির হুমকি! 1

চট্টগ্রাম ৮ আসনের আসন্ন উপনির্বাচনকে ঘিরে আতঙ্ক ছড়াতে এই হামলা করা হয়েছে জানিয়ে আবু সুফিয়ান বলেন, আসন্ন চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে মানুষ যাতে ভোট কেন্দ্রে যেতে না পারে, মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্যই এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা মনে করি, সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা, মামলা ও নির্যাতনের যে মহোৎসব আওয়ামী লীগ শুরু করেছে গতকালের ঘটনা ছিল তারই ছোট্ট একটি উদাহরণ।

এ হামলার জন্য দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বোরহান উদ্দিনকে দায়ী করে তিনি বলেন, দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বোরহান উদ্দিনের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনার পর পর বোয়ালখালীর পৌর মেয়র আবুল কালাম আবুকে ফোন করে হুমকি প্রদান করে। সন্ত্রাসীরা হুমকি দিয়ে বলে, আগামীতে বোয়ালখালীতে আসতে হলে ছাত্রলীগের অনুমতি নিয়ে আসতে হবে।

হামলার বিষয়ে বোয়ালখালী থানায় অভিযোগ করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছি। আশা করি পুলিশ সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে।

এ সময় বোয়ালখালী পৌর মেয়র আবুল কালাম আবু ঘটনার বিবরণ দিয়ে জানান, শুক্রবার রাতে আমার গাড়িতে করে আবু সুফিয়ানসহ নেতাকর্মীদের নিয়ে চরণদ্বীপের ইউনিয়ন বিএনপির নেতা কামাল উদ্দিনের আত্মীয়ের জানাজা শেষে শহরে ফিরছিলেন। পথে ২ নম্বর ওয়ার্ডের পাঠানবাড়ি স্কুলের সামনে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বোরহান উদ্দিনের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এসময় ভাংচুর করে এবং আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মোস্তাক আহমদ খান, বোয়ালখালী পৌর মেয়র আবুল কালাম আবু।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলী আব্বাস, সদস্য অধ্যাপক শেখ মো. মহিউদ্দিন, এনামুল হক এনাম, মোশাররফ হোসেন, কামরুল ইসলাম হোসাইনী, মনজুর উদ্দিন চৌধুরী, মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, বদরুল খায়ের চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন লিপু, মোশাররফ হোসেন দিপ্তী প্রমুখ।

এআরটি/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!