অপারেশনের ভুলে মায়ের মৃত্যু/ এখনও থামেনি শিশু অবুঝের কান্না

চট্টগ্রামের সিএসসিআর হাসপাতালের ভুল অপারেশনে মারা যাওয়া গৃহবধূ চম্পার একমাত্র ছেলে অবুঝ। ভুল চিকিৎসায় মাকে হারানোর চারটি বছর পেরিয়ে গেলেও সে এখনও খুঁজে বেড়ায় মাকে। মায়ের ভালোবাসা আজও পড়ে আছে তার মনে। ছেলেটির যখন মায়ের কথা মনে পড়ে তখন চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে। মায়ের মৃত্যুর আগে যে ছেলেটি নাইক্ষ্যংছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (তৃতীয় শ্রেণী) এক নম্বর ছাত্র ছিল। মাকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মেধাবী ছেলেটি এখন লেখাপড়ায় অমনোযোগী হয়ে ঘুরে বেড়ায় পাড়া-মহল্লায়। প্রতিরাতেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠে মায়ের আদর-স্নেহের বঞ্চিত ১২ বছরের অবুঝ মনের শিশু ‘অবুঝ শর্মা’। কথাগুলো বলছিলেন অবুঝের বাবা জীবন হরি শর্মা।

২০১৫ সালের ৩ জুন সিএসসিআর হাসপাতালে ভুল অপারেশনে মারা যান চম্পা শর্মা (২৮)। শ্বশুরবাড়ি বান্দরবানের নাইক্ষংছড়ির দুর্গম পাহাড়ে হওয়ায় শহরে থাকা ছোট বোনের ওপর আস্থা রেখেই সুচিকিৎসার আশায় ওই বছরের ২৭ এপ্রিল নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে এসেছিল গৃহবধূ চম্পা।

চম্পাকে নিয়ে যায় গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. ফাহমিদা ইসলাম চৌধুরীর কাছে। তিনি অনেক প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চম্পার জরায়ুতে ছোট্ট একটি মাংসপিণ্ড অপারেশনের পরামর্শ দেন। চম্পা অপারেশনকে ভয় পেত তাই তাকে লাইক্রোস্কপির মাধ্যমে ওই মাংসপিণ্ড সরানো হবে বলে জানান চিকিৎসক। পরে ডা. ফাহমিদা ইসলাম চৌধুরীর পরামর্শে তাকে ২০১৫ সালের ৩ জুন দুপুর ১২ টায় সিএসসিআর হাসপাতালে ভর্তি করি। ভর্তির একঘণ্টা পরই চম্পাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার হয়। সেখানে নেওয়ার মাত্র ৩০ মিনিটেই মারা যান চম্পা শর্মা।

চম্পা শর্মার ছোট বোন পিংকি শর্মা অভিযোগ করে বলেন, দুপুর দুইটার আগেই অপারেশন থিয়েটারেই ভুল অপারেশনে মৃত্যু হয় আমার দিদির। এরপরও জীবিত আছে বলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় দীর্ঘ সময়। পরে রাত আনুমানিক ৯টায় ডা. ফাহমিদা ইসলাম চৌধুরী এসে মৃত ঘোষণা করেন। অথচ মৃত্যু হয়েছিল দুপুরেই অপারেশন থিয়েটারেই। তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে সিএসসিআর কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!