একদিনে ৬৮৩০ শনাক্তও দেখল বাংলাদেশ, মৃত্যু আরও ৫০

আগের দিনের রেকর্ড ভেঙে সারাদেশে একদিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তের ফের নতুন রেকর্ড হয়েছে। ভাইরাসে নতুনভাবে ৬ হাজার ৮৩০ জন শনাক্ত হয়েছেন। একই সময়ে সারাদেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গেছেন আরও ৫০ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল নয় হাজার ১৫৫ জনে। অন্যদিকে, এ নিয়ে মোট শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ছয় লাখ ২৪ হাজার ৫৯৪ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৪৭৩ জন।

শুক্রবার (২ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোভিড ইউনিটের পরিচালন ডা. মো. ইউনুসের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, কেবল সংক্রমণ নয় গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষাতেও নতুন রেকর্ড হয়েছে। এদিন সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি ২২৬টি আরটি-পিসিআর, জিন এক্সপার্ট ও র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে মোট নমুনা সংগ্রহ করা হয় ৩০ হাজার ২৯৩টি। এর মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৯ হাজার ৩৩৯টি। একদিনে এর আগে এত বেশি নমুনা কোনোদিন পরীক্ষা করা হয়নি।

গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা করা এসব নমুনার মধ্যে ৬ হাজার ৮৩০টি নমুনায় করোনা সংক্রমণের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে। এটি একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্তের নতুন রেকর্ড। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবারই (১ এপ্রিল) দেশে ৬ হাজার ৪৬৯টি সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল। দেশে একদিনে ছয় হাজারের বেশি সংক্রমণ শনাক্ত হলো এ নিয়ে এই দুই দিনই।

গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। এটিও গতকালের চেয়ে বেশি। গতকাল এই হার ছিল ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টার ৬ হাজার ৮৩৯ জন নিয়ে দেশে মোট করোনায় আক্রান্ত হলেন ৬ লাখ ২৪ হাজার ৫৯৪ জন। আর এখন পর্যন্ত দেশে মোট নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে মোট সংক্রমণ শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ১৫ শতাংশ।

এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ হাজার ৪৭৩ জন। এ নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৪১১ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন। সংক্রমণ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৫০ জন করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গেছেন, তা নিয়ে দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন মোট ৯ হাজার ১৫৫ জন। সংক্রমণ শনাক্তের বিপরীতে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৫০ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৪০ জন পুরুষ, ১০ জন নারী। তাদের মধ্যে মাত্র একজন বাড়িতে মারা গেছেন। বাকি ৪৯ জনই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

এই ৫০ জনের মধ্যে ৩২ জনের বয়স ষাটোর্ধ্ব, ১১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। এছাড়া ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী চার জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী দুই জন ও ২১ থেকে ৩০ ব্ছর বয়সী একজন মারা গেছেন। এই ৫০ জনের মধ্যে ৩৬ জনই ঢাকা বিভাগের, সাত জন চট্টগ্রাম বিভাগের। এছাড়া খুলনা বিভাগে তিন জন এবং রাজশাহী ও সিলেট বিভাগে দুই জন করে মারা গেছেন।

দেশে গতবছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়।

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চূড়ায় উঠেছিল গত বছরের জুন-জুলাই মাসে। ওই সময়ে, বিশেষ করে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চার হাজার রোগী শনাক্ত হতো। বেশ কিছুদিন পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকার পর এক মাসের বেশি সময় ধরে সংক্রমণ আবার ঊর্ধ্বমুখী। এর মধ্যে ছয় দিন ধরে সাড়ে তিন হাজারের বেশি রোগী (প্রতিদিন) শনাক্ত হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আরেকটি চূড়ার দিকে যাচ্ছে দেশের সংক্রমণ পরিস্থিতি।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!