এএফসি কাপে নেপালি ক্লাব মানাংকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে শীর্ষে আবাহনী
শেষ বাঁশি বাজার পর পশ্চিম গ্যালারিতে সমর্থকদের উল্লাসমুখর স্লোগান, ‘আবাহনী …আবাহনী।’ চিৎকার করতে করতে কয়েকজনের গলাও ভেঙেছে। মাঠের বেশির ভাগ দর্শকই বিস্মিত। নিজের চোখকেও যেন তারা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। এএফসি কাপে আবাহনীর ফুটবল ভুলে যাওয়ার যে বদনাম, সেই দলটাই আজ নেপালের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব মানাং মার্শিয়াংদিকে বিধ্বস্ত করে ৫ গোল দিলে তো অবাক হওয়ারই কথা! এএফসি কাপে নিজেদের ইতিহাসে এটাই আবাহনীর সবচেয়ে বড় জয়।
প্রথমার্ধে দুই গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধে এসেছে আরও তিন গোল। একটি করে গোল করেছেন নাবীব নেওয়াজ জীবন, কেভিন বেলফোর্ট, সানডে চিজোবা, জুয়েল রানা ও মামুনুল ইসলাম। এ জয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি কাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল আবাহনী। ৫ ম্যাচ শেষে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আবাহনী।
এএফসি কাপের ম্যাচ মানেই দুই বিদেশি চ্যাম্পিয়নদের লড়াই। অথচ নাবীব নেওয়াজ জীবন, কেভিন বেলফোর্ট , জুয়েল রানাদের সামনে নেপালের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবকে মনে হচ্ছিল ঢাকার তৃতীয় বিভাগের কোন দল! সানডে চিজোবা যতগুলো গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন, তাঁর অর্ধেক গোল হলেও দুই হালি গোল ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারত দেশের চ্যাম্পিয়নরা। আসলে আবাহনীর প্রতিপক্ষ মানাং নামে মাত্র বড় দলগুলোর মত ৪-৩-৩ ফরমেশনে মাঠে নামলেও লড়াই করার ন্যূনতম পুঁজি নেই। রক্ষণভাগ ঠুঁটো জগন্নাথ, মাঝমাঠে তিন- চারটা পাস খেলার মতো খেলোয়াড়ের অভাব। আর এই দুই বিভাগে ডাহা ফেল মারলে ফরোয়ার্ড ভালো না মন্দ, সে প্রশ্নে আর যাওয়া কেন ?
আর নিজেদের মাঠে আবাহনী দেখাল পাসের বৈচিত্র্য। কখনো ত্রিকোণ, কখনো চতুষ্কোণ, কখনো আয়তক্ষেত্র। পাঁচ-ছয়-সাতটা পাস খেলতে খেলতে বিপক্ষ বক্সে পৌঁছে আক্রমণ করা আরকি। যেগুলোতে গোল হলো না, পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যাওয়ায় গ্যালারি থেকে ভেসে এসেছে সমর্থকদের আফসোস, ইশ! দুই প্রান্ত দিয়ে বেলফোর্ট ও জুয়েল যেভাবে ঝড়ের গতিতে ওপরে উঠেছেন মনে হয়েছে ফর্মুলা ওয়ান গাড়ি চালাচ্ছেন!