ঋতু পরিবর্তনের কারণে রোগী বেড়েছে চমেকে

তিনদিন আগে বাঁশখালী থেকে এসে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) মেডিসিন বিভাগের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন আমিন। সিজনাল জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। তার এখনো জ্বর এখনো কমেনি। রাঙ্গুনিয়ার জরিনা বেগমও জ্বর নিয়ে তিনদিন আগে ভর্তি হয়েছিলেন। তারও জ্বর কমছে না। বেডে স্থান না পেয়ে বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকেই। এই বারান্দায় আরো অনেকে জ্বর সর্দি ও বমি রোগের চিকিৎসা নিচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবে এই ওয়ার্ডে দৈনিক গড়ে ১৫০ রোগী ভর্তি হলেও বর্তমানে ২০০-২৫০জন রোগী ভর্তি আছেন।

নয় নম্বর শিশু ওয়ার্ডে হাটহাজারী থেকে আসা খায়রুল মোস্তফা, রোয়ালখালী থেকে শাহেদ করিম জ্বর,সর্দি -কাশি নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই ওয়ার্ডে দৈনিক ১৫ শিশু ভর্তি হলেও বর্তমানে গড়ে ৪০ শিশু ভর্তি আছে।

cmc-fever patient

উপজেলাগুলোতে খবর নিয়ে জানা যায়, একজন ডাক্তার ৪০-৫০ রোগী দেখলেও বর্তমানে তারা ৮০-১০০ রোগী দেখছেন। উপজেলার ফার্মেসিগুলোতে এজিথ্রোমাইসিন, সেফিকজিম, সেফোরকজিম, ক্লাভুনিক এসিড, (প্যারাসিটিমল ট্যাবলেট, সিরাপ, সাপোজিটরি), রুপাটাডিন,ডেসলুরাটাডিন, ওনাসেরন,মনটেলুকাস্ট ট্যাবলেটের বিক্রয় বেড়ে গেছে।

ঋতু পরিবর্তন ও অসহনীয় গরমের কারণে নগরীতে জ্বর, সর্দি-কাশি বমিসহ নানান রোগের প্রকোপ বেড়েছে। হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডাক্তারের চেম্বারে বেড়েছে রোগীর চাপ। সাধারণত ভাইরাস জ্বরের কারণে শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, মাংসপেশীতে ব্যথা, ক্লান্ত লাগা, মাথা ঘোরানো, শীত অনুভব, খাবারে অরুচি সমস্যা দেখা দিতে পারে। ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রভাবে শিশু ও বয়স্কদের মাঝে জ্বর, সর্দি-কাশি ও বমিসহ নানা রোগের প্রভাব বেড়েছে। এ সময় শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা, হাঁচি, বমিভাব ও দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।

উল্লেখ্য, নগরীতে সর্বশেষ ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ডের পর হঠাৎ বৃষ্টির দেখা মিলেছে। এতে সাধারণ মানুষ কিছৃটা স্বস্তি অনুভব করেছেন। তবে এই ঋতু পরিবর্তনের ফলে নগরীতে দেখা দিয়েছে ভাইরাস জ্বর, সর্দি-কাশি, বমিসহ নানা রোগ।

চমেক হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে দেখা যায়,‘রোগীরা বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শিশু বিভাগে সাধারণ সময়ের চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। নগরের কয়েকেটি ক্লিনিক ও উপজেলার কয়েক ডাক্তারের চেম্বারের চিত্র প্রায় একইরকম দেখা গেছে। নিয়মিতর চেয়ে প্রায় দেড়গুণ বেশি রোগী দেখছেন ডাক্তাররা।

এ ব্যাপারে চমেকের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন বলেন, অসহনীয় গরম ও ঋতু পরিবর্তনের কারণে সিজনাল রোগ জ্বর, সর্দি-কাশি, বমিসহ নানা রোগের প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে। এ সময় আতংকিত না হয়ে বেশি করে পানি পান, তরল খাবার গ্রহণ, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ গ্রহণ না করা উচিত। এরকম কিছু নিয়ম মেনে চললে এ ধরনের রোগ থেকে দ্রুত সেরে ওঠা যায়।

চমেকের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক অনুপম বড়ুয়া বলেন,অসহনীয় গরম ও ঋতু পরিবর্তনের কারণে সিজনাল রোগ যেমন-জ্বর সর্দি-কাশি,বমিভাব বাড়তে পারে। কিছুদিন পর এই রোগের প্রভাব কমে যাবে। বৃষ্টি হয়ে গরম কিছুটা কমলে রোগের প্রভাব কিছুটা কমতে পারে।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!