ঋণ কলঙ্কে চট্টগ্রামের ১২ শিল্পপতির ডাক পড়েছে হাইকোর্টে

আলোচিত পি কে হালদার কাণ্ডে চট্টগ্রামের অন্তত ১২ জন ঋণখেলাপি শিল্পপতিকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে দুজনের নাম এসেছে দুই দফায়। এই ১২ জনসহ আরও ১১৭ জন ব্যবসায়ী-শিল্পপতিকে আগামী ২৪ ও ২৫ মে হাইকোর্টে হাজির হতে হবে। তলব করা ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা আইএলএফএসএল থেকে ঋণের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

জানা গেছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে ঋণ নিলেও তা পরিশোধ করেনি বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান। আইএলএফএসএলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১২৯ ঋণগ্রহীতাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।

বুধবার (৭ এপ্রিল) বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের নেতৃত্বাধীন একক হাইকোর্ট বেঞ্চের স্বাক্ষরের পর লিখিত আদেশে আইএলএফএসএল থেকে উত্তোলনকৃত ঋণের টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুদককে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে ২ সপ্তাহের রুল জারি করেন আদালত।

পাশাপাশি আইএলএফএসএল থেকে ঋণের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় জড়িত ১২৯ জনকে ব্যক্তিগতভাবে আগামী ২৪ ও ২৫ মে সকাল সাড়ে ১০ টায় হাইকোর্টে তলব করা হয়। আগামী ২৪ মে ১০০ জনকে এবং ২৫ মে অবশিষ্ট ২৯ জনকে হাজিরের নির্দেশ দেন আদালত।

হাইকোর্টের আদেশের সঙ্গে তলব করা ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে অন্তত ১২ জন রয়েছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী-শিল্পপতি। এর মধ্যে দুজনের নাম এসেছে দুই দফায়। এদের প্রত্যেকেই আইএলএফএসএল থেকে ঋণের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

চট্টগ্রামের যেসব শিল্পপতিকে তলব করা হল

ইয়াকুব সিএনজি ফিলিং লিমিটেডের ইয়াকুব আলী, ইয়াকুব সিনথেটিকের ইয়াকুব আলী, ক্রিস্টাল ফিশারিজ লিমিটেডের মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম, ফারুক অ্যান্ড সন্স লিমিটেডের ফয়সাল মুরাদ ইব্রাহিম, মিনহার ফিশারিজের দেবব্রত বড়ুয়া, এফএমসি ডকইয়ার্ড লিমিটেডের ইয়াসিন চৌধুরী, লিবার্টি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের মোহাম্মদ ইলিয়াছ, এহসান স্টিল রি রোলিং মিলসের আবু আলম, সামান্নাজ সুপার অয়েল লিমিটেড, রহমান শিপ ব্রেকারস লিমিটেড ও এমএম শিপ ব্রেকারস লিমিটেড, ইটারনাল ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড ও ইউনিমিক্স রেডিমিক্স কনক্রিট লিমিটেডের একেএম ইমতাজুল ইসলাম এবং মিনহার সী ফুডস লিমিটেডের দেবব্রত বড়ুয়া।

কার কাছে কতো পাওনা

ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের শীর্ষ ১০০ ঋণখেলাপির মধ্যে সামান্নাজ সুপার অয়েলের কাছে পাওনা ৪৪ কোটি টাকা, ইয়াকুব সিএনজি ফিলিংয়ের কাছে পাওনা ৪৫ লাখ টাকা, ইয়াকুব সিনথেটিকের কাছে পাওনা ১৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা, রহমান শিপ ব্রেকার্স লিমিটেডের কাছে পাওনা ১১ কোটি ১৭ লাখ টাকা, এম এম শিপ ব্রেকার্সের কাছে পাওনা ৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা, ক্রিস্টাল ফিশারিজের কাছে পাওনা ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা, মিনহার ফিশারিজের কাছে পাওনা খেলাপি ঋণ ১ কোটি ১২ লাখ টাকা, এফএমসি ডকইয়ার্ড লিমিটেডের কাছে পাওনা ২০ কোটি টাকা।

হাইকোর্টে আরও যাদের তলব করা হয়েছে

নিউট্রিকুয়াল লিমিটেডের পলাতক প্রশান্ত কুমার হালদার, কুলাসিন লিমিটেডের উত্তম কুমার মিস্ত্রী, গ্রিণ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের সুব্রত দাস, সুপারিয়র টেক্সটাইল লিমিটেডের মো. সোলায়মান চৌধুরী, মুন এন্টারপ্রাইজের শুনখো ব্যাপারি, ওকায়ামা লিমিটেডের সুব্রত দাস, পিএফআই সিকিউরিটিজ লিমিটেডের কাজী ফরিদ উদ্দিন (এফসিএ), কনিকা ইন্টারপ্রাইজের রাম প্রসাদ রায়, বর্ণালী ফেব্রিকস লিমিটেডের এম এ রশিদ, এস এ ইন্টারপ্রাইজের শাহ আলম, উইনটেল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের প্রশান্ত কুমার হালদার, নর্দান জুট ম্যানুফেকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের উজ্জল কুমার নন্দী, রহমান ক্যামিকেলস লিমিটেডের রাজিব শম, বেনটেক্স ইন্ডাট্রিজ লিমিটেডের এম এ বারী, মাবকো ফুডস লিমিটেডের আব্দুল মান্নান, ক্রসরোডস কর্পোরেশন লিমিটেডের মো. সিদ্দিকুর রহমান, মিতা টেক্সটাইলে মুস্তাফিজুর রহমান, এম এ জিপার অ্যান্ড ইলাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের কুদরত উল্লাহ সাদাত সেলিম, বিশ্বাস ফেব্রিকস লিমিটেড ও এমবিএ গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেডের মইনুদ্দিন বিশ্বাস, তাইওয়ান ডেভেলপার কোম্পানির সিন শেক উ, প্রাইম সোর্সিং লিমিটেডের সাজেদ খান, এনআরবি এন্টারপ্রাইজের রতন সরকার, ইসলাম ট্রেডিংয়ের গালিব সাত্তার, রেডিও ব্রডকাস্টিং এফএম কোম্পানি লিমিটেডের রফিকুল হক, এম আই স্টি ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের রাজেশ, নন্দন পার্ক লিমিটেডের তুষার, ওমর ফারুক অ্যান্ড কোং এর নাসরিন সুলতানা, বিল্ডিং ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ডিজাইন লিমিটেডের নিজামুল সাইদ, গ্লোব এসেনশিয়াল লিমিটেডের ফারুক, ইভার বেস্ট টেক্সটাইল লিমিটেডের মো. তোফাজ্জেল হোসেন, ওসিশ ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের মো. হেলাল, ডিসেন্টের নাজমুল হোসেন, কোয়ান্টাম প্রোপ্রার্টিজ লিমিটেডের মাহবুব মোরশেদ, তামান্না এন্টারপ্রাইজের মো. মনিরুল ইসলাম, ইন্টার এক্সপোর্টস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের প্রদীব সেন, অনন্যা ফ্যাশনের মো. শাহীন, তাহসিন ট্রেড ইমপেক্সের মিজানুর রহমান, শামীম আজাদ, গ্রান্ড মটরসের মুফিদ আহমেদ চৌধুরী, কাজী আলমগীর হোসেন, ইএন মটরস লিমিটেডের রেজাউল করিম, পুনম সিনেমার আকরাম হোসেন, হাসিবুর রহমান, মধুমতি ফাউন্ডেশন লিমিটেডের শফিকুল ইসলাম, ফাতেমা শিপিং লিমিটেডের আনোয়ারুল ইসলাম, স্মার্ট ট্রান্সপোর্টেক লিমিটেড ও উৎসব কমিউনিকেশন লিমিটেডের কেএস ফিরোজ, ডব্লিউজিএমইসি জয়েন ভেনচার লিমিটেডের ওয়াং লিন, মুসা ম্যানুফাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের ফরিদা ইয়াসমিন, মধুমতি ইন্টারপ্রাইজের শফিকুল ইসলাম ফিরোজ, বিইজি স্টিল ইন্ডাট্রিজ লিমিটেডের বজলুল হক বেগ, লকউড অ্যাসোসিয়েটসের রাজু আহমেদ, এমএস ইয়েন ইলেকট্রনিকসের জহিরুল ইসলাম, ওয়েস্টমন্ট পাওয়ার লিমিটেডের হারুন অর রশিদ, ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্ট সাপোর্ট সিস্টেম লিমিটেডের হায়দার উজ্জামান, ফেয়ার প্লাস্টিক ইন্ডাট্রিজের মহিউদ্দিন, রাইজিং স্টিল লিমিটেডের আমজাদ চৌধুরী, সাদমান পেপারস এর বজলুল কাদের কাফি, তরঙ্গ প্লাস ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের তরিকুল মবিন শিমুল, কেবল ওয়ান ইন্ডাসট্রিজের নাসির উদ্দিন, ফরিদা ইয়াসমিন রাহমান অ্যান্ড এসএম হাবিবুর রহমান, সেলিম আহমেদ, মিতসুমারু বাংলাদেশ লিমিটেডের এটিএম জিয়াউল হাসান, ফাইরস্ট স্টক অ্যান্ড বন্ডস লিমিটেডের সাইফুল ইসলাম, চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ ও চৌধুরী প্যাকেজিং অ্যান্ড একসেসরিজ ইন্ড্রাসট্রিজ লিমিটেডের মো. নিজাম উদ্দিন, জাগুয়ার ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের করিম, ইউনিভার্সাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলোজি কোম্পানির আতিক, খন্দকার ট্রেডিং করপোরেশনের সাইফুল কবির, কুইনির মনসুর আহমেদ, দ্যা এন্টিক লিমিটেডের এটিএম জিয়াউল হাসান, জুবলী ট্রেডার্সের হোসাইন হায়দার আলী, কনটিন্যাশনাল ব্যাটারি ইন্ড্রাসট্রিজ লিমিটেডের জিয়াদ, প্রশান্ত কুমার হালদার, সুবিনস-এর আলমগীর, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেড, মারিয়াম ট্রেডার্সের আশরাফুল হক, নিলুফার খান বীথি, হাল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের প্রশান্ত কুমার হালদার, জেড এ অ্যাপারেলস লিমিটেড ও ডিজাইন সোর্সের সঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম, আরএম একসেসোরিসের একেএম মনজুরুর রহমান, নিউ ইরা হাসপাতাল লিমিটেডের সুজাত হোসেন, ক্যাব ওয়ান লিমিটেডের আলী আহসান খান, মাইক্রো লিজেন্ডের আবু সালেহ, ইমার এন্ট্রারপ্রাইজের সদরুজ্জামান, মদিনা টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের সুইব সারোয়ার মনজু এবং সিএনজি মিডওয়ে গ্রুপের আব্দুর রইস।

শিডিউল ‘বি’ তে আরও রয়েছেন— এসএ এন্টারপ্রাইজের মো. শাহ আলম শেখ, ইমেক্সকোর প্রশান্ত কুমার হালদার, সিগমা ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ইরফানউদ্দিন আহমেদ, মিন্নাত প্লাজার ইকবাল হোসেন, প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজের নজরুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক এবং পিয়ারা বেগম, কুইনির মনসুর আহমেদ, ব্রাইট ইলেকট্রিক হাউজের মাসুদুর রহমান, এসএম রেজাউল করিম অ্যান্ড ডলি রেজা, রিফাদিপ টেক্স মার্ট-এর খুরশীদ আলম, রানি এলিজাবেথ দিয়াস, নিলুফার খান বীথি, ফাস ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের মো. ইয়াসিন আলী, তাল্লু স্পিনিং মিলস লিমিটেডের আতিকুল হক মিথুন, ইপিক হোমের মিজানুর রহমান, এমএ কন্সট্রাকশন আরিফ চৌধুরী, ইস্টার্ণ মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডের মহি উদ্দিন চৌধুরী, ইএম পাওয়ার লিমিটেডের মো. আশরাফ, সিএনজি ডিস্ট্রিবিউশনের ইফতেখার হোসেন, প্লাস্টিক অ্যাকসেসোরিজ লিমিটেডের রুবেল আজিজ, ইউনিভার্সাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেডের মো. আতিক, শাসমসি ল্যাম্পস লিমিটেডের মো. মাহমুদুল হাসান, শরফুদ্দিন চৌধুরী, জামাল মোল্লাহ, অঞ্জন কুমার রায়, মো. আশরাফুল ইসলাম।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!