উড়াল সেতু নাকি মরার উপর খারার ঘা! অসহনীয় যানজট, ভোগান্তিতে জনসাধারণ : নির্মানের আগে বিকল্প পথ তৈরির দাবী ক্যাবের

প্রতিদিন রিপোর্ট :

চট্টগ্রাম নগরীতে উড়াল সেতু নির্মান করতে গিয়ে সমগ্র চট্টগ্রাম নগরী যেন একটি যানজটের নগরী। যানজট থকে মুক্তি পাবার জন্য উড়াল সেতু নির্মানের কথা বলা হলেও নির্মান শুরুর আগে বিকল্প উপায়ে যান চলাচলের কোন ব্যবস্থা না করে কাজ শুরু দেয়ার কারনে এটা যেন “মরার উপর খারার ঘা” হয়ে আছে নগবাসীর উপর।

news_img3

নগরীর মুল সড়ক বিশেষ করে বহদ্দার হাট, মুরাদপুর, ২নং গেট, জিইসি, ওয়াসা যেন যানজট নয়, মরণ ফাঁদ। অন্যদিকে বিমান বন্দরগামী সড়কে দীর্ঘ যানজটের কারনে যাত্রীদের নির্ধারিত সময়ে বিমান বন্দর পৌঁছানো ও ফেরত আসা পুরোটাই অনিশ্চিত। ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থাকতে হচ্ছে। অপরদিকে অনেকগুলি সড়ক খুলে রাখা, সড়কের উপর সিটি কপোরেশনের ময়লাগুলি শুকিয়ে আবার ধুলায় পরিনত হবার কারনে পুরো নগরী যেন ধুলায় ছেয়ে গেছে। সেকারনে সর্দি, হাফানী ও শ্বাসকষ্ঠ জাতীয় রোগের প্রার্দুভাব প্রকট আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

এ অবস্থায় সিটিকর্পোরেশন, সিডিএ ও ট্রাফিক বিভাগের সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে উড়াল সেতু নির্মানাধীন সড়কগুলিতে যান বাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা দূর করতে বিকল্প কানেন্টিং সড়ক যুক্তকরণ, সিএনজি টেক্সী, প্রাইভেট কার গুলির জন্য পৃথক সড়ক নির্ধারন, কানেন্টিং সড়কগুলি দ্রুত চলাচলের উপযোগী করা, বর্তমান সড়কগুলি খানাখন্দক দ্রুত সংস্কার, নির্মান কাজ চলাকালীন সড়কগুলির ধুলাবালি ছাড়ানো রোধে চটের বেড়া তৈরী করে ধুলাবালি ছড়ানো রোধ, সিটিকর্পোরেশনের ময়লাগুলি না শুকিয়ে দ্রুত অপসারনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থসংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটি।

 

চট্টগ্রামে উড়াল সেতু নির্মান ও ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম গৃহিত হওয়ায় নগরীর প্রধান সড়কগুলিতে প্রচন্ড যানজটের কারনে জনভোগান্তিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে নগর প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় এক বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উড়াল সেতু নির্মানের কারনে রাস্তায় যানজট হবে এটা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না কারন, যে কোন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহনের পুর্বে সাময়িক বিকল্প কি হতে পারে তা নির্ধারন করে প্রকল্প শুরু করা হয়। আর এখানে কোন প্রকার পুর্ব প্রস্তুতি ও বিকল্প নির্ধারন না করে প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে।

 

আর প্রকল্পের কাজ শেষ হতে হতে সে প্রকল্পের ফল জনগন আর ভোগ করতে পারে না। তখন বলা হয় প্রকল্প প্রণয়নে ত্রুটি ছিল। অন্যদিকে চট্টগ্রাম শহরটি যেহেতু কালুরঘাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত লম্বালম্বি আর মূল সকড়টির উন্নয়নে যখন কোন প্রকল্প গৃহিত হবে তখন তার পুর্বেই কানেক্টিং সড়কগুলিকে বিকল্প হিসাবে যান চলাচলের জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলা দরকার ছিল। গণপরিবহন ও ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য পৃথক সড়ক/লেন নির্ধারন করে দেয়া দরকার ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সে ধরনের কোন উদ্যোগ না নিয়ে বদলে যাওয়ার শ্লোগান দিয়ে জনগনের ভোগান্তি বাড়িয়েছে। যা সরকারের বিশাল উন্নয়ন কর্মকান্ডকে ম্লান করছে।

 

নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন নগরীর উন্নয়নে নিয়োজিত সিটিকর্পোরেশন, সিডিএ, সিএমপি, ওয়াসা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানগুলির মাঝে আন্তঃ কার্যকর সমন্বয় না থাকায় এক-এক সময় এক একটি দপ্তর রাস্তা খুড়ে থাকে। আবার অনেকে রাস্তায় নির্ধারিত অংশে তাদের কাজ শেষ করে ক্ষতটি সংস্কার না করেই খুলে রেখে চলে যান ফলে ঐ উন্নয়ন প্রকল্পটি তখন জনগনের জন্য আর্শিবাদ না হয়ে অভিশাপে পরিনত হয়।

 

সংস্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা ও উপদেষ্ঠা পর্যায়ে জনগনের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব না থাকায় বিষয়টি সংস্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ অনুধাবনে সক্ষম হচ্ছে না। তাই নগরবাসীর সেবা প্রদানে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান সমুহে জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক ভাবে স্বীকৃত ভোক্তা সংগঠন ও নাগরিকদের প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান সমুহের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হওয়া দরকার বলে নেতৃবৃন্দ মতপ্রকাশ করেন।

 

বিবৃতিতে যারা স্বাক্ষর করেন তারা হলেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসসিন সুলতানা পারু, সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ।

 

রিপোর্ট : রাজীব সেন প্রিন্স

এ এস / জি এম এম / আর এস পি :::

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!