উপজেলা নির্বাচন/ নৌকার বিদ্রোহীদের কাছে শাস্তির চিঠি আসছে ২৮ জুলাই

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্তভাবে শাস্তিমূলক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। আগামী ২৮ জুলাই থেকে দলের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যস্থা নেওয়া যাবে না তার কারণ চেয়ে এসব চিঠি পাঠানো হবে। দলের সিদ্ধান্ত অনুসারে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, বোয়ালখালী, লোহাগাড়া ও বাঁশখালী উপজেলার পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতা শাস্তির মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন।

শনিবার (২০ জুলাই) আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর যৌথসভা শেষে এ কথা জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গত ১২ জুলাই সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও প্রত্যেক বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ম সম্পাদকদের কাছ থেকে প্রতিবেদন নিয়েই চূড়ান্ত এ সিদ্ধান্তে আসে আওয়ামী লীগ।

সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন এবং যারা বিদ্রোহের মদদ দিয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায়। সেটা কিভাবে বাস্তবায়ন করা হবে তা নিয়ে আজকের সভায় আলোচনা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘২৮ জুলাই থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ যাবে। কাউকে বহিষ্কারের নোটিশ দেওয়া হবে, আবার কাউকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। যারা জাতীয় নির্বাচনে বিদ্রোহ করেছেন, ধরে নিতে পারেন আগামী নির্বাচনে তাদের মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য হবে না। শুধু বহিষ্কার করাই না, দলীয় শাস্তি অন্যভাবেও দেওয়া যায়। তবে এবারের জাতীয় নির্বাচনে বিদ্রোহীর সংখ্যা খুবই কম।’

এদিকে দলের সিদ্ধান্ত অনুসারে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, বোয়ালখালী, লোহাগাড়া ও বাঁশখালী উপজেলার পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতা শাস্তির মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে ফটিকছড়ি ও লোহাগাড়ায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী দুজন চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিতও হয়েছেন।

চট্টগ্রামে দলীয় পদে থাকার পরও সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচন করায় শাস্তির মুখোমুখি হতে যাওয়া নেতারা হলেন চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুল। বাঁশখালী উপজেলায় দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম। বোয়ালখালীতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল কাদের সুজন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের এডহক কমিটির সহ সভাপতি শ্রমিক নেতা এসএম নুরুল ইসলাম।

এছাড়া আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় কোনও পদে না থাকলেও দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করেছেন পটিয়ায় সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ও বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি মুহাম্মদ সাজ্জাত হোসেন। চন্দনাইশে এলডিপি থেকে এসে আওয়ামী লীগে ফুল দিয়ে যোগ দিলেও আনুষ্ঠানিক কোনো পদে না থাকা নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার।

অন্যদিকে স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচিত হলেও কোনও পদে নেই উপজেলা নির্বাচনের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নুর হোসেন। তবে তাদের বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত না হলেও সরকারদলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে তাদেরও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে বলে ধারণা করছেন নেতারা।

এডি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!