তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, উন্নয়নের অনেকগুলো সূচকে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভারতকেও অতিক্রম করেছে। আমাদের মাথাপিছু আয় পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে কয়েক বছর আগেই। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ভারতকেও ছাড়িয়ে যাবে। এসব কোনো ম্যাজিকে হয়নি। হয়েছে বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার ম্যাজিক্যাল নেতৃত্বে।
তিনি শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) ১৬তম বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। ‘ইন্টেন্সিফিকেশন অব লাইভস্টক অ্যান্ড ফিশারিজ ফর অ্যাচিভিং ফুড সেফটি অ্যান্ড নিউট্রিশনাল সিকিউরিটি: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড অপরচ্যুনিটি’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদসহ তিন শতাধিক গবেষক অংশগ্রহণ করছেন।
তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, দেশ যখন স্বাধীন হয় এদেশের মানুষ ছিল সাত কোটির কিছু বেশি। বর্তমানে তা দ্বিগুণের চেয়েও বেশি হয়েছে। তার বিপরীতে আমাদের আবাদি জমি কমেছে ক্রমবর্ধমান হারে। এরপরও বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে খাদ্য রপ্তানি করছি।
হাছান মাহমুদ বলেন, কোনো দেশ স্বপ্ন ছাড়া বেশিদূর অগ্রসর হতে পারে না। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং দিনবদলের সনদ ঘোষণার মাধ্যমে উন্নত বাংলাদেশ গঠনের যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, তা আজ বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে চলে এসেছি আমরা।
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মানবসভ্যতার ইতিহাসে প্রথম শিল্পবিপ্লব হলো ১৭৮৪ সালে বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে। তার প্রায় শত বছর পর আমরা ইঞ্জিন ব্যবহার করেছি। দ্বিতীয় শিল্পবিপ্লব ১৮৭০ সালে বিদ্যুৎ আবিষ্কার। আমরা ৬০ বছর পর বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করেছি। ১৯৬৯ সালে ইন্টারনেট আবিষ্কারকে তৃতীয় শিল্পবিপ্লব বলা হয়। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ইন্টারনেটকে সবার জন্য উন্মুক্ত করেছেন। বিশ্বব্যাপী চতুর্থ শিল্পবিপ্লব নিয়ে এখন আলোচনা চলছে। বাংলাদেশে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযুক্ত দক্ষ জনবল তৈরি হচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে সামনের কাতারে থাকবো।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তনের উপর তার সুনাম ও মর্যাদা নির্ভর করে না। শিক্ষার মান ও গবেষণা-ই সাক্ষ্য দেয় বিশ্ববিদ্যালয়টি কত বড়। সিভাসুতে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি না করিয়ে গুণগত শিক্ষা ও গবেষণার উপর জোর দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের গবেষণার ফলে আমরা পশু উৎপাদনেও স্বয়ংসম্পূর্ণ। গত ঈদুল আযহাতে আমাদের বিদেশ থেকে পশু আমদানি করতে হয়নি।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গুণগত শিক্ষা ও গবেষণা ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই সরকার গবেষণাকর্মে উৎসাহ দেওয়ার জন্য উত্তরোত্তর বরাদ্দ বাড়িয়েছে। গবেষণার মাধ্যমে সিভাসু নতুন নতুন যে জ্ঞান সৃজন করছে, তা প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে হবে।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দা সরওয়ার জাহান বলেন, সীমিত সম্পদে বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা বিশাল চ্যালেঞ্জের বিষয়। তবুও সব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিতে আপনাদের মতো বিজ্ঞানীদের গবেষণা আগামী দিনে মাইলফলক হয়ে থাকবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের আহবায়ক অধ্যাপক ড. শারমীন চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন সিভাসুর উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ।
এফএম/সিআর