উন্নয়নের মহাপরিকল্পনায় বদলে যাবে কক্সবাজারের পর্যটন স্পট

এস এম আরোজ ফারুক, কক্সবাজার ॥
যে কোন ছুটিতে প্রতিবছরই কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল নামে। সম্ভাবনাময় এ পর্যটন স্পট গুলোতে মনোরম প্রকৃতিক দৃশ্য কিংবা পুরাকৃত্তি ছাড়াও এখানে এমন আরো অনেক সম্ভাবনাময় স্থান আছে যা এখনো অবহেলিত। মুলত কক্সবাজারে যারা বেড়াতে আসে তাদের সবাই নিজ ইচ্ছা থেকে এখানে আসে। কক্সবাজারকে প্রচার করার জন্য তেমন কোন ব্যবস্থা নেই।

thumbnail_beach-top-1

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যটক আকর্ষণে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে পর্যটন স্পটগুলো যেমন-সমুদ্র সৈকত, বৌদ্ধ বিহার, আদিনাথ মন্দির কিংবা পাহাড়ি ঝর্ণাসহ বিভিন্ন স্পটে চিত্ত বিনোদন মূলক পার্ক গড়ে তুলতে হবে।
এছাড়াও কক্সবাজারে এমন কিছু স্থান রয়েছে যেখানে একটু সুনজর দিলে পর্যটকরা শুধু সমুদ্র সৈকত বা ঝর্ণা নিয়ে ব্যস্ত থাকবে না, প্রসারও ঘটবে পর্যটন স্থানের। পর্যটন সংশ্লিষ্টদের মতে, কক্সবাজারের পর্যটনকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা যায়। রুরাল ট্যুরিজম, মাউনটেন ট্যুরিজম, কোস্টাল ট্যুরিজম, ইকো ট্যুরিজম, সী ট্যুরিজম, নাইট বাজার, সিনে প্লেক্স, এমিউজমেন্ট পার্ক, একুরিয়াম মিউজিয়াম। এভাবেই ভাগ করে ট্যুরিজম সেক্টরকে আরো প্রসার করা যায় বলে মনে করছেন জেলার সচেতন ব্যক্তিরা।

 

রামু, উখিয়া বা নাজিরারটেক এই এলাকাকে রুরাল ট্যুরিজম বা গ্রামীণ পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তোলা গেলে শহরের সৌন্দর্য উপভোগ করে পর্যটকরা দুরে কোথাও গিয়ে গ্রামের দৃশ্য উপভোক করতে পারবে। দরিয়া নগর, ইনানী, হিমছড়ি, মহেশখালীতে মাউনটেন বা পাহাড়ী পর্যটন স্পট করা যায় বলে মত দিয়েছেন অনেকে।

 

এতে করে পর্যটকরা পাহাড়ের সৌন্দর্য আলাদা ভাবে উপভোগ করতে পারবে। কুতুবদিয়া, সোনাদিয়া, মহেশখালী দ্বীপগুলোকে উপকূলীয় পর্যটন কেন্দ্রের উপযোগী করে গড়ে তুললে এই অঞ্চলগুলো পর্যটকদের কাছে আলাদা গুরুত্ব পাবে। চকরিয়ার সাফারীপার্ক ও টেকনাফের ন্যাচার পার্ককে ইকো ট্যুরিজমের আওতায় এনে পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষন করা যায়।
কক্সবাজারের তারকা মানের লংবীচ হোটেলের হেড অব অপারেশন মোহাম্মদ তারেক বলেন, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে প্রাকৃতিক মনোরম আবহ এ শহরে খুঁজে পাওয়া যায় ঠিকই তবে দিনে ঘুরার জায়গা থাকলেও সন্ধ্যার পর পর্যটকদের হোটেল কক্ষেই আবদ্ধ থাকতে হয়।

 

অথচ বিশ্বের অন্যান্য পর্যটন স্পট গুলোতে দিন রাত সময় কাটানোর ব্যবস্থা রয়েছে। তাই বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি পর্যটকের কাছে আকৃষ্ট করতে এখানে সিনেপ্লেক্স, নাইট বাজারসহ বিভিন্ন বিনোদনের সুযোগ বৃদ্ধি করা সম্ভব। এছাড়াও এমিউজমেন্ট পার্ক ও একুরিয়াম মিউজিয়াম স্থাপন করা গেলে কক্সবাজারও হতে পারে বিশ্বের অন্যতম পর্যটন শহর। এক্ষেত্রে দরকার সরকারি ও বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগ, দরকার সঠিক পরিকল্পনা।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ বলেন, পর্যটন উন্নয়নের লক্ষ্যে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয়েছে। আমরা প্রথমে একটি মহাপরিকল্পনা করবো আর এই পরিকল্পনার মধ্যে কক্সবাজার শহরসহ পুরো জেলার পর্যটন সম্ভবনাময় স্পটগুলো রাখা হবে। পরবর্তিতে পরিকল্পনা অনুযায়ী পুরো জেলার সকল পর্যটন স্থানগুলো সাজানো হবে।
এদিকে জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন জানান, কক্সবাজারের পর্যটন উন্নয়নে সরকারের মহা পরিকল্পনা আসছে। এই ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নেই। উন্নয়নের কাজ ইতমধ্যে শুরু হয়ে গেছে তারই ধারাবাহিকতায় কাজ চলছে ‘কলাতলীর ডলফিন পয়েন্ট থেকে সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত অংশটি নান্দনিকভাবে সাজানোর। এর জন্য একটি বৃহৎ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

 

এ এস / জি এম এম / আর এস পি :::

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!