উত্তাপ ছড়াচ্ছে চট্টগ্রাম ছাত্রলীগের তিন থানা কমিটি

ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত তিন থানা কমিটিকে ঘিরে উত্তাপ ছড়াচ্ছে চট্টগ্রামে। ইমরান আহমেদ ইমু এবং জাকারিয়া দস্তগীর স্বাক্ষরিত আকবর শাহ, পতেঙ্গা ও বন্দর থানা ছাত্রলীগের কমিটি প্রকাশের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মাঠপর্যায়ে সৃষ্টি হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। বিভিন্ন এলাকায় কমিটি স্থগিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে। তবে এই প্রতিক্রিয়া সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলেও আশংকা করছেন নগরের ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টরা।

কমিটি নিয়ে বিতর্কে ঘি ঢেলে এক দিনের মাথায় ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন আকবরশাহ থানা ছাত্রলীগের কমিটিতে থাকা ৪ নেতা। পদত্যাগ করা ওই চার নেতা হলেন আকবরশাহ থানার আইন সম্পাদক নয়ন নাইমুল, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সাব্বির আহমেদ, অর্থ সম্পাদক পারভেজ উদ্দিন সজল, প্রচার সম্পাদক রকিবুল ইসলাম।

তাদের অভিযোগ নগর ছাত্রলীগের দায়িত্বশীলদের সাথে আলোচনা না করেই চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর, পতেঙ্গা ও আকবর শাহ থানা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এসব কমিটিতে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর তাদের ‘মাই ম্যান’ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদেরই দায়িত্ব দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। বিতর্ক আছে ছাত্রদল ছাত্রশিবিরের কর্মীদেরও পদ দেয়া হয়েছে এসব কমিটিতে।

২৭ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ঘোষিত এই তিন কমিটিতে রাখা হয়নি নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের। বাদ দেওয়া হয়েছে মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীদের আরেকটি অংশকেও। তবে শুরু থেকেই এই বিষয়ে নাছির উদ্দীনের অনুসারীরা চুপচাপ থাকলেও প্রথম প্রতিবাদটা আসে ইমু দস্তগীরের ঘরের ভেতর থেকেই। ওদিন সন্ধ্যায় কর্ণেল হাটে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে আকবরশাহ ইউনিট ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। যারা কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য মনোয়ারুল হক নোবেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

তবে দৃশ্যত চুপচাপ থাকলেও বরাবরই এই পরিস্থিতে সতর্ক নজর রাখছে আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীরাও। আপাতত ইমু দস্তগীরের বিরুদ্ধে ঘরের ভেতর থেকে বিদ্রোহ শুরু হওয়ায় তারা চুপচাপ থাকাকেই বেছে নিয়েছে। তবে তিন কমিটি ইস্যুতে গত কয়েকদিনে দফায় দফায় মিটিংও করেছেন তারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী একজন ছাত্রনেতা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, এই কমিটিগুলো কতটা হঠকারী হয়েছে তা সবাই দেখেছে। ইমু দস্তগীর নিজেদের মনমতো পকেট কমিটি দিয়েছে। কারো সাথে আলাপ করেনি। এমনকি তাদের সাথের লোকজনই এসবের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেছে। আমরা শুধু এটুকু বলতে চাই এই কমিটিগুলোকে যেকোন মূল্যে প্রতিহত করা হবে।

তিন থানার কমিটি নিয়ে চলমান বিতর্কের বিষয়ে কথা বলতে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমুর সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সফল হওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত গত ২৭ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের আলাদা প্যাডে মো. কাইয়ুমকে সভাপতি ও নুরুজ্জামানকে সাধারণ সম্পাদক করে বন্দর থানার কমিটি, হাসান হাবিব সেতুকে সভাপতি ও মেহেরাজ তৌফিককে সাধারণ সম্পাদক করে পতেঙ্গা থানা এবং জুয়েল সিদ্দিকীকে সভাপতি ও সৈয়দ তৌহিদুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে আকবর শাহ থানা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করে নগর ছাত্রলীগ। এই কমিটিতে রাখা হয়নি নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের। বাদ দেওয়া হয়েছে মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীদের আরেকটি অংশকেও।

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!