উচ্ছেদ চলবে, কোনো অজুহাত বরদাশত করা হবে না : নৌ প্রতিমন্ত্রী

লালদিয়ার চরে উচ্ছেদের প্রতিবাদে লাগাতার কর্মসূচি স্থানীয়দের

পূর্বের নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ২৫ ফেব্রুয়ারি লালদিয়ার চরের একাংশে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর। এর প্রতিবাদে বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সড়কে মানববন্ধন করেছে লালদিয়ার চরের লোকজন।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ অভিযানের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে।

বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানার লালদিয়ার চর এলাকায় বিমানবন্দর সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

এদিকে, লালদিয়ার চরবাসীর এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সকাল ৯টা থেকে সেখানে ৫০ জনের অধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে, পুলিশ জানিয়েছে পরিস্থিতি শান্ত ছিল। শান্তিপূর্ণভাবেই কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

মানববন্ধনে স্থানীয়রা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নতুন করে কোনো সিদ্ধান্ত না পেলে আমরা কেউ ঘর থেকে বের হবে না। আমাদের ক্ষতিপূরণের সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এখানে অবস্থিত ২৩০০ পরিবার বৃহস্পতিবার থেকে উক্ত জায়গায় অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি দুপুর আড়াইটার দিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানার লালদিয়ার চর বিমানবন্দর সড়কে আরও একটি মাবনবন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। ওই সময় স্থানীয়দের সঙ্গে মানববন্ধনের একাত্মতা প্রকাশ করেন স্থানীয় কাউন্সিলর মো. ছালেহ আহম্মদ চৌধুরী, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন, সাবেক মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি প্রমুখ।

জানা যায়, ১৯৭২ সাল থেকে লালদিয়ার এলাকায় বসবাস করে আসছেন প্রায় তেইশ শ’ পরিবার। সেখানে এ, বি ও সি ব্লকে বিভক্ত হয়ে গঠিত লালদিয়ার চর। ২০০৫ সালের ১২ জুলাই লালদিয়ার চরের একাংশ উচ্ছেদ করে সেখানে প্রায় পাঁচশ পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল। ২০১৯ সালেও লালদিয়ার চর ঘেঁষেই প্রায় দুইশত পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি লালদিয়ার চরের এ ব্লকের পুরো অংশজুড়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে নোটিশ দিয়ে উচ্ছেদ করার কথা রয়েছে।

জানতে চাইলে পতেঙ্গা থানার ওসি জোবাইর সৈয়দ বলেন, ‘লালদিয়ায় সকাল ১০টা থেকে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

এদিকে, বুধবার বিকেলে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে লালদিয়ার চর উচ্ছেদ প্রসঙ্গে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘লালদিয়ার চরের বসবাসকারিরা অধিকাংশই ভাড়াটিয়া। বন্দরের জায়গায় যারা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড করেছেন সেই সকল স্বার্থান্বেষীদের লোকজনের তালিকা করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গুটিকয়েক মানুষের জন্য বন্দরের সুনাম নষ্ট বিষয়ে কোনো ধরনের অজুহাত বরদাশত করা হবে না। আমরা এতোদিন ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি। উচ্ছেদ চলমান প্রক্রিয়া। সেখানে কোনো ধরনের স্থাপনার রাখার সুযোগ নেই। এতদিন বন্দরের প্রয়োজন না হওয়ায় তাদেরকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সেই সুযোগ এখন আর নেই।’

মুআ/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!