ঈদের ছুটির প্রভাব/ চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জটের মাশুল হবে চড়া

পণ্য খালাসে অস্বাভাবিক ধীরগতি

ঈদের টানা ছুটিতে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাস কমে যাওয়ায় কন্টেইনার জটের সৃষ্টি হয়েছে। ঈদের আগে এবং পরে তিনদিন সড়কে পণ্যবাহী যানচলাচল বন্ধ থাকায় জটের সৃষ্টি হয়। ঈদের দিন ৫ জুন বুধবার ১২ ঘন্টা বন্দরের ডেলিভারি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও তারপর থেকে পণ্য ডেলিভারি দিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান বন্দরের একাধিক কর্মকর্তা। তবে পণ্য ডেলিভারি করার সাথে কাস্টমস কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো শতভাগ সক্রিয় না থাকায় বন্দর চাইলেও পণ্য ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে প্রতিদিন বন্দরে কন্টেইনারের সংখ্যা বাড়ছে। অন্যদিকে বন্দরে কন্টেইনার পড়ে থাকার কারণে আমদানিকারদের গুণতে হচ্ছে জরিমানা।

চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক ( পরিবহন) এনামুল করিম জানান, ‘শুধুমাত্র ঈদের দিন কিছু সময়ের জন্য বন্দরের পণ্য উঠানামা কিংবা পণ্য খালাস বন্ধ ছিল। এরপর পণ্য খালাস করতে পুরোপুরি প্রস্তুত আছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। আমদানিকারকরা সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ডেলিভারি নিতে পারবে।’ চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে কী পরিমাণ কন্টেইনার রয়েছে তার তথ্য তিনি (এনামুল করিম) ছুটিতে থাকায় নিশ্চিত করতে পারেননি।

চট্টগ্রাম বন্দরের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, ঈদে বন্দর সচল থাকলেও তার সাথে সংশ্লিষ্ট দপ্তর কিংবা প্রতিষ্ঠানগুলো সচল না থাকলে তার সুফল পাওয়া যায় না। রাস্তায় পণ্যবাহী যান না চললে আমদানিকারকরা পণ্য কিভাবে গন্তব্যে নিয়ে যাবে? তাছাড়া রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন আইসিডিগুলোতে (ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো) অপেক্ষমাণ কন্টেইনারগুলোও বন্দরে নিয়ে যেতে পারছে না সংশ্লিষ্টরা।

সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী নুরুল আলম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, বন্দর থেকে পণ্য খালাস করতে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা রয়েছে। শুধুমাত্র বন্দর সচল থাকলে পণ্য খালাস কিংবা ডেলিভারি সম্ভব নয়। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ থেকে শুরু করে পণ্যবাহী যান চলাচলও স্বাভাবিক থাকতে হয়। বন্দরে আমাদের কন্টেইনারভর্তি পণ্য রয়েছে কিন্তু সড়কে পণ্যবাহী যানচলাচল না করায় ইচ্ছে থাকলেও ডেলিভারি নেওয়া সম্ভব নয়।

একাধিক আমদানিকারক জানান, ঈদে কন্টেইনারজট প্রতিবছরের নিয়মে পরিণত হয়েছে। শুধুমাত্র বন্দর সচল থাকলে পণ্য খালাস নিশ্চিত হয় না। এর সাথে কাস্টমস, শিপিং এজেন্ট, ব্যাংক, পণ্য পরিবহনসহ অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। বন্দরে পণ্য খালাস নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে সরকারকে নতুন করে পরিকল্পনা নিতে হবে। অন্যথায় ঈদের ছুটির ফলে টানা ৭-৮ দিন পণ্য খালাসে ধীরগতির জের টানতে অনেক দিন সময় লেগে যাবে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের সবগুলো ইয়ার্ডে ৪৯ হাজার টিইইউস কন্টোইনার রাখা সম্ভব। স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার কন্টেইনার ডেলিভারি হয়। ঈদের আগে থেকে কন্টেইনার ভেলিভারির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় দেড় থেকে দুই হাজারে। সড়কে পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইয়ার্ডে জমতে থাকে কন্টেইনার। আগামী রোববার (৯ জুন) সকল দপ্তর পুরোদমে কাজ শুরু করলে পণ্য খালাস শুরু হবে পুরোদমে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!