ঈদযাত্রায় সঙ্গী চার গুণ ভাড়া আর দুর্ব্যবহার!

ঈদুল আজহায় ঘরমুখো যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে স্বাভাবিকের চেয়ে চারগুণ বেশি ভাড়া। সেই সাথে যোগ হয়েছে বাসের হেলপার ও দালালদের চরম দুর্ব্যবহার। সড়কে বাস পরিবহন সংশ্লিষ্টদের এমন আগ্রাসী আচরণে যাত্রীরা রীতিমতো হতবাক। যে কোন মূল্যে বাড়ি ফিরতে হবে তাই এমন দুঃসহ ঘটনা সহ্য করে গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছেন যাত্রীরা।

উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী কাউন্টারভিত্তিক, আন্তঃজেলা কিংবা লোকাল বাস সব পরিবহনেই একই চিত্র দেখা গেছে।

চট্টগ্রাম থেকে ফেনী এবং নোয়াখালী রুটে চলাচলকারী লোকাল বাসগুলোর নির্ধারিত ভাড়া না থাকলেও ঈদের সময় এলেই আদায় করে ইচ্ছেমতো ভাড়া। বিভিন্ন নামে চলাচলকারী এসব লোকাল বাসগুলো চট্টগ্রামের একে খান মোড় থেকে ফেনী পর্যন্ত ৭০ থেকে ১০০ টাকা আদায় করলেও ঈদ উপলক্ষে আদায় করছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। যাত্রী এই রুটের যেখানেই নামুক তাকে ফেনীর ভাড়াই পরিশোধ করতে হচ্ছে।

পোশাক কারখানার এক কর্মকর্তা মিজান রহমান জানান, বৃহস্পতিবার বাসে ভিড় হবে সে কারণে শুক্রবার বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। দুপুরে একে খান মোড়ে এসে দেখি লোকে লোকারণ্য। বাসে ওঠার সময় হেলপারের সাথে দেখা যায় দালালের দৌরাত্ম্য। যারা যাত্রীদের সাথে ভাড়ার দরকষাকষির করছে। ভাড়া নিয়ে বাসের হেলপার এবং দালালদের সাথে বাকবিতণ্ডা করতেও দেখা গেছে।

মিজান রহমান বলেন, আন্তঃজেলার লোকাল বাসে চট্টগ্রাম থেকে মিরসরাইয়ের ঠাকুরদীঘির ভাড়া ৫০ টাকা। অথচ আমাকে দিতে হলো ২শ টাাকা। চারগুণ ভাড়া নেওয়ার সময় বাসের হেলপার বলেছিলো আসনের বাইরে যাত্রী নেবেনা তারা। বাসে ওঠার সময় ভাড়া আদায় করার পর পাল্টাতে থাকে বাস ড্রাইভার ও হেলপারের আচরণ। নির্দিষ্ট আসনের দ্বিগুণ যাত্রী নেওয়ার সময় যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে তাদের উপর চড়াও হয় বাস হেলপার ও ড্রাইভার। ঝামেলা এড়ানোর জন্য যাত্রীদেরও এমন দুর্ভোগ সহ্য করে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।

বিকাল পাঁচটায় চট্টগ্রামের এ কে খান মোড়ে গিয়ে দেখা যায় ঘরমুখো যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড়। ফেনীগামী যাত্রী নুরুল হুদা বলেন, স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে ১ ঘণ্টার মতো দাড়িয়ে আছি। অন্য সময় বাস হেলপাররা যাত্রীদের সথে মোটামুটি ভালো আচরণ করলেও দেখছি তার পুরেটাই উল্টো। বাসের চেয়ে যাত্রী বেশি হওয়ায় তারা ভাড়া নিয়ে অশালীন আরচণ করছে।

ক্ষোভের সাথে তিনি বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা শুনলওে এখানে তা দেখছিনা। ঈদ এলে মানুষকে জিম্মি করার এই সংস্কৃতি থেকে কি আমাদের কোন দিন মুক্তি মিলবেনা?

একে খানে যাত্রী নেওয়ার সময় একাধিক বাস ড্রাইভারের সাথে কথা বললে তারা জানায়, চট্টগ্রামে থেকে ফেরার পথে যাত্রী শূন্য থাকে। এই ঘাটতি পুরণ করতে হলে ভাড়া বেশি নিতেই হবে।

বাড়তি ভাড়া নেওয়ার একই চিত্র দেখে গেছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী গণপরিবহনে। নতুন ব্রিজ থেকে ছেড়ে যাওয়া লোকাল বাসগুলো ভাড়া আদায় করছে দুই থেকে তিনগুণ।

নতুন ব্রিজ থেকে পেকুয়াগামী যাত্রী এহসান জানান, ঈদে ভাড়া নিয়ে এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে বাসচালকরা। কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়া আদায়ের পাশাপাশি যাত্রীদের সাথে দুর্ব্যবহারও করছে তারা।

এসসি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!