ইভিএম নিয়ে শঙ্কায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে এবার শঙ্কার কথা বলছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে খোদ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। ইভিএম ভোটের ভোটিং প্যানেলের নিয়ন্ত্রণের বিষয়েই বেশি ভাবনা তাদের। দলীয় সমর্থন পাওয়া কাউন্সিলরদের পক্ষ থেকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে জানিয়ে নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের কঠোর ভূমিকার দাবিও জানান তারা।

এদিকে নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরপরই বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের বেশ কয়েকজনের বাসার সামনে গভীর রাতে গাড়ি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান নেওয়ার খবরও পাওয়া গেছে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রভাবশালী এক বর্তমান কাউন্সিলর চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার এলাকায় বেশিরভাগ মানুষ একেবারেই সহজ-সরল। তারা ইভিএম বোঝে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ আছে। এর বাইরে ইভিএমের দুটো প্যানেলের মধ্যে ভোটিং প্যানেলটা দখল করে ভোট দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে আগের নির্বাচনগুলোতে। এর চেয়েও বড় বিষয় হল ভোটাররা কেন্দ্রে যেতে পারবে কিনা। গেলেও ভোটিং প্যানেল পর্যন্ত যেতে পারে কিনা সে বিষয়ে আমরা শঙ্কিত।’

‘আমার এলাকায় তিনটি কেন্দ্রে এজেন্ট দেওয়া যায় কিনা সে বিষয়েও সন্দেহ আছে। এখন থেকে আমার সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখানো শুরু হয়েছে। সব সন্ত্রাস এক জায়গায় এক হয়েছে। যেহেতু বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচন করছি, সেহেতু প্রশাসনের সহায়তা পাবো বলেও মনে হয় না’— যোগ করেন ওই কাউন্সিলর।

তবে এই বিষয়ে খানিকটা ভিন্নমত ১৩ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মোর্শেদ আকতার চৌধুরীর। চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘ইভিএমকে আমরা স্বাগত জানাই। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সরকার অনেক ভেবেচিন্তে এই উদ্যোগ নিয়েছে। তবে গোপন বুথে যাতে ভোটার ছাড়া অন্য কেউ অবস্থান না করতে পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।’

নির্বাচন করতে গিয়ে দল বা প্রশাসনের দিক থেকে কোন বাধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে কিনা— এই প্রশ্নের জবাবে মোর্শেদ আকতার বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দল বা প্রশাসনের তরফ থেকে ভালমন্দ কিছু বলা হয়নি। তবে স্থানীয় পর্যায়ে আমার কর্মী সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। কেন্দ্রে যেতে দেবে না বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এসবের প্রমাণও আছে আমার কাছে।’

এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করবেন কিনা এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আরেকটু পর্যবেক্ষণ করতে চাই। তাছাড়া নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা শুরু হোক।’

এদিকে নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরপরই বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের বেশ কয়েকজনের বাসার সামনে গভীর রাতে গাড়ি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান নেওয়ার খবরও পাওয়া গেছে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের আতংকিত করতেই এমনটা করা হচ্ছে বলে দাবি তাদের। তবে এই বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি কোন কাউন্সিলরই।

২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ডে দলের মনোনয়ন হারানো বর্তমান কাউন্সিলর সাহেদ ইকবাল বাবু বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির বিষয়ে জানা নেই। যদি তাদের তৎপরতার খবর সত্যি হয় তাহলে তো সেটা বরং ভালোই।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!