ইকুয়েডরের জালে আর্জেন্টিনার ছয় গোল, ড্রয়ের বৃত্তে ব্রাজিল

আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ

স্পেনের এস্টাডিও ম্যানুয়েল মার্টিনেজ ভ্যালেরোয় লাতিন আমেরিকার আরেক দেশ ইকুয়েডরকে আধাডজন গোলে বিধ্বস্ত করেছে আর্জেন্টাইনরা। আগের ম্যাচে জার্মানির সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছে আর্জেন্টিনা। কোপা আমেরিকার পর লিওনেল মেসি খেলতে পারছেন না নিষেধাজ্ঞার কারণে। দলে রাখা হয়নি সার্জিও আগুয়েরো কিংবা অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াকেও। তাদেরকে ছাড়াই বাজিমাত করে যাচ্ছে আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কোলানি। জার্মানির আগের ম্যাচেই মেক্সিকোকে ৪-০ গোলে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা।অন্যদিকে নেইমারের ব্রাজিল যেন ড্রয়ের বৃত্তে আটকে গেছে। সেনেগালের পর এবার নাইজেরিয়ার কাছে প্রীতি ম্যাচে ১-১ ড্র করেছে সেলেসাও শিবির। এনিয়ে টানা চার ম্যাচ ধরে জয়হীন ব্রাজিল। চার ম্যাচের মধ্যে তিন ম্যাচই ড্র করেছে ব্রাজিল। বাকি ম্যাচটিতে এসেছে লজ্জার হার।

ছিলেন না লিওনেল মেসি। এক পাওলো দিবালা ছাড়া বড় কোনো নাম ছিল না একাদশে। তারুণ্য নির্ভর সেই দল নিয়েই ইকুয়েডরের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে গোলবন্যা ছুটিয়েছে আর্জেন্টিনা। মহাদেশীয় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লিওনেল স্কোলনির শিষ্যদের জয় ৬-১ ব্যবধানে।
এই জয়ে সবশেষ তিন ম্যাচে নিজেদের অপরাজিত রাখল দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। তিনদিন আগে শক্তিশালী জার্মানিকে তাদেরই মাঠে ২-২ গোলে রুখে দিয়েছিল আর্জেন্টিনা। স্কোলনির অধীনে দলটি সবশেষ হার দেখেছে চলতি বছর কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের বিপক্ষে সেদিন ২-০তে হেরেছিল মেসির দল।

রোববার ভ্যালেন্সিয়ার এস্তাদিও ম্যানুয়েল মার্টিনেজ স্টেডিয়ামে ইকুয়েডরের বিপক্ষে জার্মান ম্যাচের লাইনআপের পুরনো ছয়জনকে বসিয়ে নতুনদের সুযোগ দেন কোচ স্কোলনি। তবে আক্রমণভাগ ছিল আগের মতই। লৌতারো মার্টিনেজের সঙ্গে আক্রমণে জুটি গড়েন জার্মান ম্যাচে গোল পাওয়া লুকাস অ্যালাইরো। এ ম্যাচেও ছিলেন না অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া, সার্জিও আগুয়েরোদের মতো তারকারা। জুভেন্টাস ফরোয়ার্ড দিবালাকেও মূল একাদশে রাখেননি সোলারি।

বড় বড় নাম ছাড়াই ৩২ মিনিটের মধ্যে ইকুয়েডরের জালে তিনবার বল জড়ায় আর্জেন্টিনা। ২০ মিনিটে কর্নার থেকে মার্কোস অ্যাকুইনার শটে হেড করে আলবিসেলেস্তেদের এগিয়ে দেন লুকাস অ্যালাইরো। টানা দুই ম্যাচে গোল করলেন বেয়ার লেভারকুসেন ফরোয়ার্ড। সাত মিনিট পর দ্বিতীয় গোলের স্বাদ পায় লা আলবিসেলেস্তেরা। ইকুয়েডর ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাঁ-প্রান্ত ধরে ২৭ মিনিটে মার্কোস অ্যাকুইনার শটে বল প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে জড়িয়ে যায় জালে।

আর্জেন্টিনার তৃতীয় গোলটি পেনাল্টি থেকে। ৩১ মিনিটে লৌতারো মার্টিনেজ ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। পরের মিনিটে স্পটকিকে গোল করেন লিয়ান্দ্রো পারাদেস। বিরতি থেকে ফিরে ৪৯ মিনিটে অ্যাঙ্গেল মিনা এক গোল শোধ দিলেও আর্জেন্টিনার গোলবন্যা থামাতে পারেনি ইকুয়েডর। ৬৬ মিনিটে দিবালার ফ্রি-কিক থেকে হেডে গোল করে হালি পূর্ণ করেন হারম্যান পেজাইয়া।

আর্জেন্টিনার পঞ্চম গোলটি এসেছে বদলি ফরোয়ার্ড নিকোলাস ডমিঙ্গুয়েজের থেকে। ৮২ মিনিটে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে জোরাল শটে বল জালে জড়ান এ মিডফিল্ডার। চার মিনিট পর ডান প্রান্তের দুরূহ কোন থেকে শট নিয়ে দর্শনীয় গোলে বড় জয় নিশ্চিত করেন লুকাস ওকাম্পোস।

নেইমারের ইনজুরির ম্যাচে জয়হীন ব্রাজিল

ম্যাচ শুরু হতে না হতেই ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছাড়েন নেইমার। নেইমারবিহীন ব্রাজিলের আক্রমণভাগ চেষ্টা করেও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি।
ম্যাচ শুরু হতে না হতেই ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছাড়েন নেইমার। নেইমারবিহীন ব্রাজিলের আক্রমণভাগ চেষ্টা করেও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি।

আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও নাইজেরিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে ব্রাজিল। তিনদিন আগে আফ্রিকার আরেক দল সেনেগালের বিপক্ষেও একই ব্যবধানে ড্র করেছিল সেলেসাওরা। এ নিয়ে টানা চার ম্যাচে জয়হীন পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

একই ম্যাচে একটি দুঃসংবাদ পেয়েছে ব্রাজিল। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতে, মাত্র ১০ মিনিট খেলার পরেই বাঁ-পায়ের হ্যামস্ট্রিং চোটে মাঠ ছাড়েন দলের সেরা তারকা নেইমার। তার বদলি হিসেবে মাঠে নামানো হয় বায়ার্ন মিউনিখ তারকা ফিলিপে কৌতিনহোকে। পিএসজি তারকার চোট কতটা গুরুতর সেটা অবশ্য জানা যায়নি।

নেইমারকে হারিয়ে মনস্তাত্ত্বিক ভাবে কিছুটা পিছিয়ে পড়ে ব্রাজিল। সেই সুযোগে আক্রমণের ধার বাড়ায় নাইজেরিয়া। তবে চাপ সামলে ঠিকই গোলের সুযোগ বের করেছিল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ২৮ মিনিটে কাসেমিরোর ক্রস থেকে গ্যাব্রিয়েল জেসাস গোল বরাবর হেড করলেও তা ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন নাইজেরিয়ান গোলরক্ষক। দুই মিনিট পর রবের্তো ফিরমিনোর একটি শটও প্রতিহত হয়েছে এ গোলরক্ষকের হাতে লেগে।

ব্রাজিল সুযোগ হাতছাড়া করলেও নাইজেরিয়া ঠিকই গোল আদায় করে নেয় ৩৫ মিনিটে। ব্রাজিল ডি-বক্সের বাঁ-প্রান্ত দিয়ে মোজেস সিমনের ক্রস থেকে দুই ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান জো আরিবো। পিছিয়ে পড়া ব্রাজিলকে সমতায় ফেরান কাসেমিরো। দ্বিতীয়ার্ধের ৪৮ মিনিটে দানি আলভেজের ক্রসে হেড করেন মার্কুইনহোস। তার হেডে বল ক্রসবারে লেগে ফিরে এলে শট নেন কাসেমিরো। তাতেই মেলে গোল।

সমতায় ফেরার পর ব্যবধান বাড়াতে নাইজেরিয়া রক্ষণে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলাররা। ৫৬ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল সেলেসাওদের সামনে। জেসাসের হেড ঠেকিয়ে দেন নাইজেরিয়ান গোলরক্ষক। ৬০ মিনিটে কাসেমিরোর হেড ফিরেছে বারে লেগে। ম্যাচের শেষভাগে দলকে এগিয়ে দেয়ার সুযোগ পেয়েও তা ছুঁড়ে এসেছেন কৌতিনহো। ৮৫ মিনিটে ডি-বক্সের সুবিধাজনক স্থানে বল পেয়েও গোল এনে দিতে পারেননি এ ফরোয়ার্ড। গোলবার বরাবর বায়ার্ন তারকার দুর্বল শট ফিরিয়ে দিয়ে সেলেসাওদের জয় উল্লাস করতে দেননি নাইজেরিয়ান ডিফেন্ডার সেমি অ্যাজায়ি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!