আড়ংয়ে পোশাক বদলানোর ভিডিও উঠতো সেলফি স্টিকে

আড়ংয়ের নারীকর্মীদের ‘চেঞ্জ রুমে’ পোশাক পরিবর্তনের ১২০টি ভিডিও নিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের সাবেক এক কর্মীকে ঢাকায় গ্রেপ্তারের কথা জানাজানি হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আড়ংয়ের বনানী শাখায় এ ঘটনা ঘটলেও চট্টগ্রামসহ অন্যান্য শাখাগুলোতেও এ নিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে অভিযুক্তের মোবাইল থেকে ১৩ জন নারীকর্মীর ১২০টি ভিডিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এক বিক্রয়কর্মীর অভিযোগের পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ সিরাজুল ইসলাম সজীব (২২) নামের এক তরুণকে শনিবার (২৫ জানুয়ারি) কাফরুল থানার পূর্ব শেওড়াপাড়া থেকে গ্রেফতার করে। আড়ংয়ের নারীকর্মীদের চেঞ্জ রুমে পোশাক পরিবর্তন করার সময় ১২০টি ভিডিও করেছিল সেলফি স্টিক দিয়ে। এরপর যাদের ভিডিও করা হয়েছে, তাদের কাছে সেই ভিডিও পাঠিয়ে দিতো ফেসবুক মেসেঞ্জারে। এরপর কখনও অর্থ দাবি, আবার কখনও বিকৃত চাহিদার কথা জানাতো তাদের।

আড়ংয়ের বনানী শাখায় কর্মরত এক নারী ১৬ জানুয়ারি ঢাকার কাফরুল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, ১১ জানুয়ারি রাত ১২টা ৩৭ মিনিটে সিরাজুল ইসলাম সজীব তার ফেসবুক মেসেঞ্জারে সীমান্ত সৈকত নামে আরেকটি ফেসবুক আইডি থেকে পাঠানো একটি ভিডিও দেখতে বলে। ওই নারী ভিডিওতে দেখেন, আড়ংয়ের বনানী শাখার চতুর্থ তলার কর্মচারীদের জন্য পোশাক পরিবর্তন রুমে পোশাক পরিবর্তন করার সময় তার ভিডিও ধারণ করে পাঠানো হয়েছে। এসময় সজীব তাকে ভিডিও করে শরীর দেখাতে বলে এবং তার কথামতো কাজ না করলে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দেয়।

পরে ভুক্তভোগী ওই নারী ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগকে বিষয়টি জানান। এরপর কাফরুল থানার পূর্ব শেওড়াপাড়ার মনিপুর স্কুলের সামনে থেকে অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম সজীবকে গ্রেফতার করা হয়। সজীব আড়ংয়ের বনানী শাখার সাবেক কর্মী। তার বাবার নাম মৃত নূরে আলম স্বপন মুন্সী। গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশন থানার আমিনাবাদে। ১০৯৮ নম্বর পূর্ব শেওড়াপাড়ার একটি বাসায় সে থাকতো। তার কাছ থেকে একটি রেডমি ৫ প্লাস ফোনসেট জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় ওই মোবাইলে তার নিজের ফেসবুক আইডি লগইন অবস্থায় পাওয়া যায়। ২০১৯ সালের অক্টোবরে এক নারীকর্মীর ভিডিও করার অভিযোগে ডিসেম্বর মাসে সজীবকে চাকরিচ্যূত করা হয়। তবে আগে করা সব ভিডিও তার মোবাইলে সংরক্ষিত ছিল।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সজীব জানিয়েছে, সে আড়ংয়ে চাকরি করতো। চাকরিরত অবস্থায় চতুর্থ তলার কর্মচারী চেঞ্জরুমের বাইরের সানসেট-এ দাঁড়িয়ে সেলফি স্টিক দিয়ে মোবাইল ক্যামেরার মাধ্যমে আড়ংয়ের নারী কর্মচারীদের অজান্তে তাদের নিজস্ব ইউনিফর্ম পরিবর্তন করার সময় ভিডিও ধারণ করতো।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!