আসামির নাম পছন্দ না হওয়ায় মামলা নিচ্ছে না চকবাজার থানা পুলিশ

চট্টগ্রাম কলেজে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় ৭ জন আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক হয় একজন। অভিযোগ উঠেছে, বাদির জমা দেওয়া এজাহারে উল্লিখিত আসামির নাম পছন্দ হচ্ছে না পুলিশের, তাই এ ঘটনায় মামলা নিচ্ছে না পুলিশ।

বুধবার (১৬ জুন) দুপুর দেড়টায় সংঘটিত এ ঘটনার পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ৫ ঘণ্টা থানার বারান্দায় ঘুরেও মামলা রুজু করতে পুলিশের ‘মন গলাতে’ পারছে না বলে অভিযোগ করেছেন সংঘর্ষের ঘটনায় আহত কলেজ ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা। মধ্য রাতের পরে অবশ্য পুলিশ মামলা নেন বলে জানা যায়।

এর আগে বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ বহিরাগতদের নিয়ে সভাপতি মাহমুদুল করিমের সমর্থকদের উপর হামলা চালায়।

এতে মাহমুদুল করিমের অনুসারী আব্দুল্লাহ আল সায়মন, কাজী মো. আব্দুল মালেক রুমি ও মো. ইমনসহ সাতজন আহত হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর আহত সায়মন ও রুমি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

মামলা গ্রহণ না করার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীরের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদুল করিমের অনুসারীদের অভিযোগ, এ ঘটনায় নূর মোস্তফা টিনুকে প্রধান আসামি করে মামলা করতে গেলে চকবাজার থানা পুলিশ মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। থানায় ৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করেও মামলা দায়ের করা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ যুবলীগ নামধারী নূর মোস্তফা টিনুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

এ ব্যাপারে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘নগরীর শীর্ষ সন্ত্রাসী টিনুকে বাঁচাতে পুলিশ মামলা নিচ্ছে না। আমরা আহত শিক্ষার্থীদের নিয়ে ৫ ঘণ্টা থানায় অবস্থান করেও পুলিশকে মামলা নিতে রাজি করাতে পারিনি। পুলিশ কি লাভে মামলা নিচ্ছেনা তা একমাত্র পুলিশই জানে।’

এদিকে হামলার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠেছে নিন্দার ঝড়। এ ঘটনাকে ‘কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্রদের উপর বহিরাগতদের হামলা’ উল্লেখ করে কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন ক্ষোভ।

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মজার ব্যাপার হচ্ছে, বাদির দেওয়া নামে আসামির নাম পছন্দ না হওয়ায় এখনো মামলা গ্রহন করেনি পুলিশ।’

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পুলিশ নিজেদের হিসাব নিকাশের জন্য টিনুর নামে মামলা নিতে চাইছেনা। এখন টিনুর মত শীর্ষ সন্ত্রাসীর সাথে পুলিশের কি হট কানেকশান তা একমাত্র উপরওয়ালাই জানে।’

সংঘর্ষের ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। এরা হলেন বহিরাগত সৌরভ সাহা ও চট্টগ্রাম কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র সিরাজুল ইসলাম তোরাব।

আটককৃত দুইজনই নূর মোস্তফা টিনুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর চকবাজারের কাপাসগোলা থেকে একটি পিস্তল ও পাঁচ রাউন্ড গুলিসহ টিনুকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। পরে টিনুর বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি শটগান ও ৬৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। টিনু বর্তমানে এই মামলায় জামিনে আছেন।

বিএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!