হত্যা ও অস্ত্রমামলাসহ বহু মামলার এক আসামিকে বগলদাবা করে পুলিশের অনুষ্ঠানে নিয়ে গেলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। তবে গুরুত্বপূর্ণ ওই অনুষ্ঠানে এমন বিপজ্জনক সন্ত্রাসীর উপস্থিতি পুলিশের কেউ আগে থেকে আঁচ করতে পারেননি।
রোববার (২৬ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপির) সদর দপ্তরে এলএইডি লাইট স্থাপন কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে গিয়েছিলেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিএমপি কমিশনার মো. মাহবুবর রহমানসহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন একাধিক মামলার আসামি ও পূর্ব বাকলিয়া এলাকার ত্রাস মো. সোলাইমান নামের এক ব্যক্তি। বাকলিয়া এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দেওয়া সোলাইমান স্থানীয় রাজনীতিতে আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
রোববার সিএমপির ওই অনুষ্ঠানে কখনও মেয়রের পাশে, কখনও সিএমপি কমিশনারের পাশে, আবার কখনও নগর পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের পাশে চিহ্নিত এই সন্ত্রাসীকে দেখা গেছে ফেসবুকে শেয়ার করা বিভিন্ন ছবি ও ভিডিওতে।
বালু ব্যবসায়ী সোলাইমানের বিরুদ্ধে বাকলিয়া থানায় মাহবুব হত্যা মামলা, কোস্টগার্ডের হাতে চারটি অস্ত্র ও গুলিসহ হাতেনাতে আটকের মামলা, বাকলিয়া ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক মানিককে হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন অভিযোগে কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে। এছাড়া শিক্ষা উপমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম-৯ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর লেখালেখির অভিযোগে কিছুদিন আগে সোলাইমানের ছোট ভাই এনামুলকেও গ্রেপ্তার করেছে বাকলিয়া থানা পুলিশ।
হত্যা ও অস্ত্র মামলার একজন আসামি কিভাবে সিএমপি সদরদপ্তরে এই ধরনের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিল— এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। এই বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপির মুখপাত্র এডিসি মির্জা সায়েম জানিয়েছেন, ‘অনুষ্ঠানে সিএমপি কাউকে দাওয়াত করেনি। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকেই বাতিগুলো বসানো হয়েছে। এটির উদ্বোধনে সিএমপি কমিশনারসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তবে সেখানে আর কে আসবে না আসবে সে বিষয়টা সিএমপির দায়িত্বের মধ্যে ছিল না।’
সূত্রগুলো বলছে, মূলত মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনই সঙ্গে করে ওই অনুষ্ঠানে নিয়ে যান সোলাইমানকে। তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে মেয়রের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সফল হওয়া যায়নি।
এআরটি/সিপি