আল্লামা জুবাইর’র গাড়ি বহরে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত

ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ আল্লামা কাজী আনোয়ারুল ইসলাম খান বলেছেন,- গতকাল চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ইসলামী ছাত্রসেনার সমাবেশে যাওয়ার পথে হাটহাজারীতে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মহাসচিব জাতীয় নেতা দেশের বরেণ্য ইসলামী স্কলার, অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর’র উপর দুর্বৃত্ত সন্ত্রাসীদের ন্যাক্কারজনক হামলা সভ্যতার গালে প্রচন্ড চপেটাঘাত। এ বর্বর হামলার কারণে সুন্নী মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ কোনভাবেই থামছে না। এ জঘন্য হামলায় দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ খুবই উদ্বিগ্ন। কেননা এর আগেও দেশের শীর্ষ ১০জন আলেমদের বিরুদ্ধে জঙ্গী হুমকীর মধ্যেও তিনি ছিলেন অন্যতম একজন। এছাড়াও ২০০৬ সালে ৪ দলীয় জোট সরকারের আমলে রাজধানী ঢাকার পান্থপথেও তাঁর উপর দুর্বৃত্তের হামলার ঘটনা ঘটেছিলো। গতকালের এ হামলাও বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। দুর্বৃত্তরা গতকালও আল্লামা জুবাইরের প্রাণ নাশের উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের মাথায় টুপি ও মুখে দাড়ি রয়েছে। আদর্শিক আন্দোলন সংগ্রামে পরাজিত হয়ে দুর্বৃত্তরা সহিংসতা নাশকতা ও চোরাগুপ্তা হামলার পথ বেচে নিয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন,- ইসলামের নামে যেসব বিপথগামী যুবক জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসে লিপ্ত হয়ে বিশ্বদরবারে এদেশকে একটি অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়, এদের সাথে হামলাকারীদের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। এসব হামলাকারীদের সাথে আবশ্যকীয়ভাবে জঙ্গী কানেকশন রয়েছে। এদের গ্রেপ্তারপূর্বক রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে বাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন ও বাড়ী-ঘর পোড়ানোর সাথে সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলতে পারে। আমরা আল্লামা জুবাইরের নিরাপত্তা নিয়ে খুবই শংকিত। তাই তাঁকে সার্বক্ষণিক পুলিশি নিরাপত্তা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। উপরন্তু উক্ত ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
আলহাজ্ব এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুর বলেছেন,- ইসলাম শান্তি ও মানবতার ধর্ম। কোনপ্রকার সন্ত্রাস ও গর্হিত কর্মকান্ডকে ইসলাম কখনও সমর্থন করে না। ইসলামের নামে যারা সহিংসতা ও নাশকতামূলক কর্মকান্ডকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়, তারা কখনও মুসলমান হতে পারে না। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের দেশে মানুষের ধর্মানুরাগ থাকা দোষের নয়। তবে ধর্মান্ধ হওয়াটা মোটেও বাঞ্চনীয় হতে পারে না। এদেশের মানুষের মধ্যে সাম্য-মৈত্রী, সৌহার্দ্যবোধ তথা পারস্পরিক ভ্রাতৃত্বের যে অটুট সেতুবন্ধন রয়েছে, যা শুধু দেশে নয়, সমগ্র বিশ্বব্যাপী সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য যে, দুষ্টচক্র সময়ে-অসময়ে, কারণে-অকারণে এদেশে শিশাঢালা প্রাচীরের ন্যায় প্রতিষ্ঠিত সম্প্রীতি বিনষ্ট করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দেশের আর্থ সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সুস্থতা বিনষ্টের অপপ্রয়াস চালায়। কিন্তু এদেশের সচেতন মানুষের দেশপ্রেমের নিকট সকল প্রকার চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র অসহায়ভাবে পরাজিত হতে বাধ্য হয়েছে। তাই ভবিষ্যতেও দেশ ও ধর্ম বিরোধী সর্বপ্রকার ষড়যন্ত্র এদেশের জনগণ নস্যাৎ করে দেবে। অতএব, জঙ্গীবাদী কর্মকান্ড পরিহার করে সুস্থধারায় ফিরে আসার জন্য এসব বিপথগামীদের প্রতি তিনি উদাত্ত আহবান জানান।
সমাবেশ থেকে আগামী ২৩ জানুয়ারী থেকে ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ইং পর্যন্ত সকল থানা সদরে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ও ইসলামী ছাত্রসেনা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন এবং ০৪ ফেব্রুয়ারী শনিবার বিকেল ০৩টায় ঐতিহাসিক লালদিঘী চত্ত্বরে চট্টগ্রাম জেলা ইসলামিক ফ্রন্টের উদ্যোগে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়।
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে অদ্য ২২ জানুয়ারী ২০১৭ইং রোজ রোববার বিকেল ০৩টায় জামালখানস্থ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্ত্বরে দেশখ্যাত ইসলামী স্কলার আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইরের গাড়ী বহরে দুর্বৃত্তের হামলার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আলহাজ্ব এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ আল্লামা কাজী আনোয়ারুল ইসলাম খান। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন,- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আলহাজ্ব সিরাজ উদ্দিন তৈয়বী, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি রাজনীতিবিদ স ম হামেদ হোসাইন, উত্তর জেলা ইসলামিক ফ্রন্টের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ হাফেজ আহমদ। ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর সহ সাংগঠনকি সম্পাদক এ এম মঈন উদ্দিন চৌধুরী হালিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন,- আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ জসিম উদ্দিন তৈয়বী, আহলে সুন্নাত নেতা মাওলানা সৈয়দ রফিকুল ইসলাম তাহেরী, কে এম নুরুল ইসলাম হুলাইনী, স ম শহিদুল হক ফারুকী, এম মহিউল আলম চৌধুরী, রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, জাহাঙ্গীর কবির আল হোসাইনী, ডাঃ হাসমত আলী তাহেরী, ছাত্রসেনা নেতা আহমদ রেজা, খ ম জামাল উদ্দিন, কাজী সোলতান আহমদ, এনামুল হক ও কামরুল ইসলাম শাকিল প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আন্দরকিল্লা মোড়ে এসে সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষিত হয়। মিছিলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ছাত্রসেনা সহ সর্বস্তরের অসংখ্য ধর্মপ্রাণ সুন্নী জনতা অংশগ্রহন করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।