চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার স্টোরকিপার এনামুল কবীরকে অপহরণ করা হয়েছে নাকি নিখোঁজ— এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। পরিবারের পক্ষ থেকে অপহরণ করা হয়েছে দাবি করলেও পুলিশ জিডি নিয়েছে নিখোঁজের।
এনামুল কবীরের স্ত্রী মাহিন আক্তার বাদি হয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় বুধবার (২০ নভেম্বর) নিখোঁজ ডায়েরি (১২৩৮) করেন। তবে অপহরণ দাবি করে থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ জোর করে নিখোঁজ ডায়েরি লিপিবদ্ধ করান বলে জানান বাদি মাহিন আক্তার।
এ ব্যাপারে পাঁচলাইশ থানায় যোগাযোগ করা হলে ওসি আবুল কাসেম ভূঁইয়ার ফোন রিসিভ করে ওসি (তদন্ত) শাহদাত হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, সুন্নিয়া মাদ্রাসার স্টোর কিপারের নিখোঁজের কথা শুনেছি। বিস্তারিত কিছুই এখনও জানতে পারিনি, কোন ক্লু উদ্ধার করাও সম্ভব হয়নি।
এনামুল কবীরের শ্যালক জাহেদুল ইসলাম জানান, ‘মাদ্রাসায় চাকরির সুবাদে আমার দুলাভাই পাশের খতিবের হাট মনু কাওয়ালের ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। প্রতিদিনের মতো বুধবার সকাল ৮টায় মাদ্রাসায় আসার জন্য বাসা থেকে বের হন। কিন্তু সন্ধ্যায়ও তিনি ঘরে ফেরেন নি। দুপুরের দিকে আমার বোন এনামুল কবীরের মোবাইলে যোগাযোগ করলে সেটা বন্ধ পাওয়া যায়।’ পরে সন্ধ্যায় তিনি থানায় অভিযোগ করেন।
এদিকে নিখোঁজের দুইদিন অতিবাহিত হলেও এখনও সুন্নিয়া মাদ্রাসার এই হিসাবরক্ষকের খোঁজ পায়নি পুলিশ ও স্বজনরা।
জাহেদুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সাথে দেড় লাখ টাকার হিসাবে গরমিল নিয়ে অধ্যক্ষের সাথে বিরোধ চলছে এনামুল কবীরের। ফলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে এনামুল কবীর অপহরণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে গত দুই দিনে মুক্তিপণ বা কোন হুমকি দিয়ে পরিবারের সাথে কেউ যোগাযোগ করেনি।
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার অফিস সহকারী ওসমান গণি বলেন, স্টোরকিপার এনামুল কবীর মাদ্রাসায় আসেননি সকালে। তিনি মাদ্রাসায় না আসায় আমরা দুপুরের দিকে পিয়ন পাঠাই বাসায়। কারণ তার কাছে স্টোর রুমের চাবি ছিল। কিন্তু বাসায় খোঁজ নিয়ে তাকে পাওয়া না যাওয়ায় আমরা অফিসের সিসি ক্যামেরা চেক করি। সেখানেও তার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। পরে পরিবারকে তার ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দিয়েছি।
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ ড. লিয়াকত আলী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের স্টোরকিপার এনামুল কবীর বুধবার থেকে মাদ্রাসায় আসেননি। পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়েছে বলে শুনেছি।’
অধ্যক্ষের সাথে দেড় লাখ টাকার হিসাবের গরমিল নিয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে অপরপ্রান্ত থেকে আরমান হোসেন নামে একজন ফোন ধরে বলেন, ‘হুজুর ওয়াজ মাহফিলে ব্যস্ত আছেন।’
এএস/এসএ