আর্জেন্টিনার দাপুটে জয়ের দিনে পেরুর কাছে ব্রাজিলের হার

আর্জেন্টিনার মার্টিনেজের হ্যাটট্রিক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে যখন বড় জয়োৎসবে ব্যস্ত আর্জেন্টিনা তখন পাশের শহর লস এঞ্জেলসে লজ্জায় মুখ লুকানোর পথ খুঁজছে ব্রাজিল। বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনা ৪-০ গোলের বড় ব্যবধানে হারায় মেক্সিকো এবং পেরু ১-০ গোলে হারের তিক্ত ‘স্বাদ’ দেয় ব্রাজিলকে।

আর্জেন্টিনা-মেক্সিকো
দলে ছিলেন না দুই বড় তারকা লিওনেল মেসি ও সার্জিও আগুয়েরো। তাদের ছাড়াই মেক্সিকোর বিপক্ষে ঝড় তুলল আর্জেন্টিনা। প্রীতি ম্যাচে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা তুলে নিয়েছে অনায়াস জয়। আর সেই জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন লাউতারো মার্টিনেজ। হ্যাটট্রিক করেছেন তিনি।

তার দাপটেই টেক্সাসে বুধবার সকালের ম্যাচে ৪-০ গোলে জয় তুলে নেয় আর্জেন্টিনা। লিওনেল স্কালোনির দলের হয়ে তিন গোল করেন ২২ বছর বয়সী মার্টিনেজ। অন্য গোলটি করেন লিয়ান্দ্রো পারেদেস। এ বছর দুর্দান্ত খেলে যাচ্ছেন মার্টিনেজ। এরই মধ্যে আর্জেন্টিনার হয়ে ৯ ম্যাচে করেছেন আট গোল। জাতীয় দলের পক্ষে সব মিলিয়ে ১৩ ম্যাচে ৯ গোল করেছেন এই স্ট্রাইকার।

আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে দলের সেরা তারকা মেসির অভাবটা টের পেতে দেননি মার্টিনেজ। খেলার ১৭তম মিনিটে তার গোলেই এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ২২তম মিনিটে ফের নিশানা খুঁজে নেন তিনি। সতীর্থ এসেকিয়েল পালাসিওসের পা থেকে বল পেয়ে গোল আদায় করে নেন (২-০)।

এরপরই মার্টিনেজের কাট ব্যাক কার্লোস সালসেদোর হাতে লাগলে পেনাল্টি পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। খেলার ৩৩তম মিনিটে স্পট কিক থেকে গোল আদায় করে নেন পারেদেস। ম্যাচ থেকেই ছিটকে পড়ে মেক্সিকো।

তারপর ৪১তম মিনিটে হ্যাটট্রিক গোলটি পেয়ে যান মার্টিনেজ। বুলেট গতির শটে বল প্রতিপক্ষে জালে পাঠিয়ে দেন ইন্টার মিলানের এই স্ট্রাইকার। দেশের হয়ে এটিই প্রথম হ্যাটট্রিক নতুন এই তারকা ফুটবলারের।

ব্রাজিল-পেরু

খেলা শেষের ছয় মিনিট আগে ব্রাজিলের জালে গোলের পর উল্লাসরত পেরুর খেলোয়াড়রা
খেলা শেষের ছয় মিনিট আগে ব্রাজিলের জালে গোলের পর উল্লাসরত পেরুর খেলোয়াড়রা

কোপা আমেরিকার ফাইনালে ৩-১ গোলে পেরুকে হারিয়ে নবমবারের মত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজিল। মাত্র কিছুদিন আগের কথা সেটি। এরপর এই প্রথম মুখোমুখি দুই দেশ। এবার আমেরিকার লস এঞ্জেলেসে শেষ মুহূর্তের গোলে ব্রাজিলকে পরাজিত করে কোপার ফাইনালে হারের ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ দিতে পেরেছে পেরুভিয়ান ফুটবলাররা।

পেরুর বিপক্ষে ম্যাচের ৮৫ মিনিট পর্যন্ত গোল হজম করতে হয়নি। শেষ মুহূর্তে এসে গোল হজম করে ফেলেলো সেলেসাওরা। এই গোলের পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হলো ব্রাজিলকে।

মাঠে নামার আগেই ব্রাজিল কোচ তিতে বলে দিয়েছিলেন, পেরুর বিপক্ষে একটু ভিন্ন টেস্ট নিতে চান। সামনেই বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব। সে কারণে তিনি চান ব্রাজিলের রিজার্ভ বেঞ্চের পরীক্ষা নিতে। এ কারণে নেইমারকে খেলাননি। মাঠে নামাননি দুই সেরা ডিফেন্ডার দানি আলভেজ এবং থিয়াগো সিলভাকেও। মূল গোলরক্ষক অ্যালিসন তো দলেই ছিলেন না।

রবার্তো ফিরমিনো, রিচার্লিসন এবং ডেভিড নেরেসকে দিয়ে আক্রমণভাগ সাজান তিতে। মাঝ মাঠে কৌতিনহো এবং ক্যাসেমিরোর সঙ্গে ছিলেন অ্যালেন। অ্যাডার মিলিতাও, মার্কুইনহোস, অ্যালেক্স সান্দ্রো এবং ফ্যাগনাররা ছিলেন ডিফেন্সে।

তাতে কিছুটা এলোমেলোই লেগেছে ব্রাজিল ফুটবলকে। পেরুর বিপক্ষে প্রথমার্ধে কিছু বিচ্ছিন্ন আক্রমণছাড়া চোখে পড়ার মত কিছুই করতে পারেনি ৫ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। দ্বিতীয়ার্ধে এসেও প্রায় একই অবস্থা। উল্টো ম্যাচের শেষ দিকে এসে, ৮৫ মিনিটে গোল হজম করে বসে নেইমাররা। এ সময় ইয়োসিমার ইয়োতুনের ফ্রি-কিক থেকে নেয়া শটটি ভেসে আসে পোস্টের ওপর। সেখানেই দুর্দান্ত এক হেডে ব্রাজিলের জালে বল জড়িয়ে দেন পেরুর লুইস আব্রাম। এই গোল হজম করার পর সেটাকে ফিরিয়ে দিতে পারেনি আর ব্রাজিল।

অথচ ম্যাচের শেষের দিকে নেইমার, ভিনিসিয়াস জুনিয়র, ফ্যাবিনহো, ব্রুনো হেনরিক্সকে মাঠে নামিয়েও কাঙ্খিত ফল পাননি কোচ তিতে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!