আর্চার অ্যাকশনে জয় দিয়ে শুরু স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ মিশন

ইংল্যান্ডের হয়ে বিশ্বকাপ খেলতে নেমে নিজের প্রথম ম্যাচেই আগুন ঝরাচ্ছেন ক্যারিবীয় বংশোদ্ভূত গতিতারকা জোফ্রা আর্চার। তার গতির তোপে রীতিমতো কেঁপে উঠে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপ। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসেই তুমুল গতির এক বাউন্সারে মাঠ ছাড়া করেন হাশিম আমলাকে। পরে তিনি তুলে নিয়েছেন এইডেন মারক্রাম এবং অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিসের উইকেট।

দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারে থাকা জোফ্রা আর্চারের নিখুঁত বাউন্সারটি সরাসরি আঘাত হানে আমলার হেলমেটে। শুরুতে মনে হচ্ছিল আমলা হয়তো চালিয়ে নিতে পারবেন খেলা। কিন্তু রোজা রেখে খেলতে থাকা আমলা খানিক পরই বুঝতে পারেন এখন আর ব্যাটিং করা সম্ভব নয়।

তাই ফিজিওর সঙ্গে মাঠ ছেড়ে চলে যান তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ তখন বিনা উইকেটে ১৪ রান, আমলা খেলছিলেন ৮ বলে ৫ রান নিয়ে। তিনি মাঠ ছাড়লে উইকেটে আসেন এইডেন মারক্রাম। তবে আর্চারের গতির সামনে টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। অষ্টম ওভারেই মারক্রামকে সাজঘরে পাঠান আর্চার। স্লিপে দাঁড়িয়ে বেশ কঠিন এক ক্যাচকে সহজ বানিয়ে ধরেন জো রুট। আউট হওয়ার আগে ১২ বলে ১১ রান করেন মারক্রাম। আর্চারের পরের ওভারেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন প্রোটিয়া অধিনায়ক ডু প্লেসিস। তার ব্যাটের ওপরের কানায় লাগা বলটি তালুবন্দি করেন মঈন আলি। ৭ বল খেলে মাত্র ৫ রান করতে সক্ষম হন প্লেসিস।
আর্চার অ্যাকশনে জয় দিয়ে শুরু স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ মিশন 1
ইংল্যান্ডের ছুঁড়ে দেওয়া ৩১২ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা এভাবেই অসহায় আত্মসমর্পন করে ২০৭ রানে অলআউট হয়েছে। ৩৯.৫ ওভারে অলআউট হয় প্রোটিয়ারা। তাতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক ইংল্যান্ড ১০৪ রানের বিশাল জয় তুলে নেয়।

বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ১২তম আসরের পর্দা ওঠে ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার উদ্বোধনী ম্যাচ দিয়ে। টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস। ইনজুরির কারণে উদ্বোধনী ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার দলে ছিলেন না পেসার ডেল স্টেইন। বেন স্টোকস, ইয়ন মরগান, জো রুট আর জেসন রয়ের ফিফটিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ইংলিশরা তোলে ৩১১ রান।

ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের সামলাতে রণকৌশলের প্রথমে লেগ স্পিনার ইমরান তাহিরের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস। অধিনায়ককে হতাশ করেননি তাহির। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে তুলেন দারুণ ফর্মে থাকা জনি বেয়ারেস্ট্রোর উইকেট। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম বলে শূন্য রানে উইকেটকিপার কুইন্টন ডি ককের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান।

প্রথম ওভারেই ওপেনার জনি বেয়ারেস্ট্রোর উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে ইংল্যান্ড। তবে ওপেনার জেসন রয় এবং জো রুটের ব্যাটিংয়ে ভর করে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠে ইংলিশরা। দু’জনই তুলে নেন অর্ধশতক। জেসন রয় (৫০) করে ফেলুকাওয়ের শিকার হয়ে ফিরে যান। ফাফ ডু প্লেসিসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন রয়।

আর পরের ওভারে জো রুটকে (৫১) নিজের শিকার বানান কাগিসো রাবাডা। ডুমিনির হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন রুট। দলীয় ২১৭ রানে তাহিরের বলে মারকারামের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ইংলিশ দলপতি ইয়ন মরগান। বিদায়ের আগে তিনি ৬০ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছয়ের মারে ৫৭ রান করেন। ম্যাচের ৪১ তম ওভারে এনগিডির বলে বোল্ড হোন ১৬ বলে ১৮ রান করা বাটলার। ৪৩ তম ওভারের শেষ বলে এনগিডির বলে ক্যাচ তুলে দেন মঈন আলী।

৪৮তম ওভারে বিদায় নেন ক্রিস ওকস। রাবাডার বলে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে ওকস করেন ১৪ বলে ১৩ রান। ৪৯তম ওভারে আউট হন বেন স্টোকস। রাবাডার বলে আমলার হাতে ধরা পড়ার আগে ৭৯ বলে ৯টি চারের সাহায্যে করেন ৮৯ রান। লিয়াম প্লাংকেট ৯ আর জোফরা আর্চার ৭ রানে অপরাজিত থাকেন।
আর্চার অ্যাকশনে জয় দিয়ে শুরু স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ মিশন 2
৩১২ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ব্যক্তিগত ৫ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন প্রোটিয়া ওপেনার হাশিম আমলা। ইনিংসের অষ্টম ওভারে আর্চারের বলে জো রুটের হাতে ক্যাচ তুলে দেন প্রোটিয়া ওপেনার মার্কারাম। ১২ বল খেলে ২ চারের মারে ১১ রান করেন তিনি। নবম ওভারে আর্চারের দ্বিতীয় শিকার হন প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস। আর্চারের বলে ফাইন লেগে ক্যাচ তুলে দিলে মঈন আলী সহজেই তালুবন্দি করেন। আউট হওয়ার আগে ৭ বল খেলে ৫ রান করেন তিনি।

২২তম ওভারের শেষ বলে প্লাংকেটের বলে হাফ সেঞ্চুরিয়ান ডি কক স্কোয়ার লেগে জো রুটের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হন। ৭৪ বল খেলে তার ৬৮ রানের ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ২টি ছয়ের মার। ২৬তম ওভারে মঈন আলিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বেন স্টোকসের হাতে ধরা পড়েন ১১ বলে ৮ রান করা জেডি ডুমিনি। পরের ওভারে রান আউট হয়ে বিদায় নেন ডুইয়ান প্রিটরিয়াস (১)। ম্যাচের ৩১তম ওভারে আর্চারের তৃতীয় শিকার হন হাফ সেঞ্চুরিয়ান ভ্যান ডার ডুসেন। তার ৬১ বলে সাজানো ৫০ রানের ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ১টি ছয়ের মার। ডুসেনের বিদায়ের পর আবারো ব্যাট হাতে নামেন হাশিম আমলা। তবে ম্যাচের ৩৮তম ওভারে ২৩ বলে খেলে ১৩ রানে প্লাংকেটের বলে বাটলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি।

ইনিংসের ৩৫তম ওভারে আদিল রশিদের বলে বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচ তুলে দেন আন্দেইল ফেলুকাওয়ো। বেন স্টোকসের দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফেরার আগে তিনি ২৫ বলে চারটি বাউন্ডারিতে করেন ২৪ রান।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!