আমদানির কাপড় নিয়ে অভিনব প্রতারণা চট্টগ্রাম বন্দরে

চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশ করে আমদানি করা কাপড় দেখানো হলো। বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য কিছু নমুনা চালানপত্র দেখিয়ে পূর্ণ মূল্যও নিয়ে নেওয়া হলো। মূল্য পরিশোধের পরও পণ্য বুঝে পেলেন না ক্রেতা। অর্থ বুঝে নিয়ে ছদ্মবেশী বিক্রেতা ততোক্ষণে যোগাযোগের বাইরে চলে গেলেন। এর প্রেক্ষিতে মামলা ঠুকলেন প্রতারিত ব্যবসায়ী।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানালেন, এবার চট্টগ্রাম বন্দরে এমনটাই অভিনব প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। প্রতারিত ওই ব্যক্তির মামলার প্রেক্ষিতে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাদি কুমিল্লার জহিরুল ইসলাম। পোশাক ব্যবসা করেন রাজধানী ঢাকায়। কিশোরগঞ্জের মাহফুজ ইসলাম তাকে প্রস্তাব দেন কম দামে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ডেনিম কাপড় সরবরাহ করবে। মাহফুজ দাবি করেন, তার সঙ্গে কাস্টমস কর্মকর্তাদের সাথে সখ্যতা আছে। তিনি সম্মত হওয়ার পর মাহফুজ জানান, বিদেশ থেকে আমদানি করা প্রায় ৭০ হাজার গজ ডেনিম (জিন্স প্যান্টের কাপড়) যা বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে রক্ষিত আছে। নিলামে কম দামে জহিরুলকে কিনে দিতে পারবেন।

উল্লেখ্য, ওই ডেনিমের বাজারমূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। কিন্তু প্রতারকচক্র দাবি করে, বন্দরের এক কাস্টম কর্মকর্তার যোগসাজশে ওই কাপড় জহিরুল মাত্র চল্লিশ লাখ টাকায় কিনে দিতে পারবে। এ সময় তারা বন্দরে ঢুকে জহিরুল ও কামালকে কাপড় দেখিয়ে নিশ্চিত করে, এ কাপড় বিদেশ থেকে আমদানিকৃত।

মাহফুজ ও তথাকথিত কাস্টমস কর্মকর্তা আমজাদের চাহিদামতো ওই দিনই ঢাকা ব্যাংক, আগ্রাবাদ শাখা থেকে নগদ ৪০ লাখ টাকা তুলে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় আগ্রাবাদ বাদমতলী এলাকার হোটেল জামানে গিয়ে টাকাগুলো হস্তান্তর করেন জহিরুল ও কামাল।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হুমায়ুন কবির জানান, কাপড়ের চালান হিসেবে আমজাদ ও মাহফুজ বেশ কিছু ডেলিভারির চালানপত্রও তাদের দেখিয়েছিলেন। বন্দর পাঁচ নম্বর গেইটের সামনে মালামাল বোঝাই দুটি কাভার্ড ভ্যান দেখিয়ে তারা জানায়, ওই দুই ট্রাকে তাদের কেনা ডেনিম কাপড় রয়েছে। কথিত কাস্টমস অফিসার আমজাদকে টাকাসহ বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে প্রাইভেট কারযোগে সটকে পড়েন । এ সময় তাদের ব্যবহৃত মোবাইলও বন্ধ করে দেন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও জহির ও কামাল বুঝতে পারেন না তারা প্রতারিত হয়েছেন।

এ ঘটনায় প্রতারিত জহিরুল ইসলাম বাদি হয়ে ডবলমুরিং মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

এরপর ডবলমুরিং থানায় মামলা দায়ের করলে সেই মামলার সূত্রে নগর গোয়েন্দা পুলিশের বন্দর জোন প্রতারক মাহফুজকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেন।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার এসএম মোস্তাইন হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত মাহফুজ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় একই কায়দায় অনেক ব্যবসায়ীর সাথে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেন বলে তারা জানিয়েছেন।

এফএম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!