করোনাভাইরাস আতঙ্ক/ আমদানিতে চীনের বিকল্প খুঁজছে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা

আমদানি-রপ্তানির জন্য চীনের ওপর অনেকটা নির্ভরশীল ব্যবসায়ীরা। কিন্তু করোনাভাইরাস অতঙ্কে চীনের বিকল্প দেশ খুঁজলেও পাওয়া যাচ্ছে না। পেলেও খরচের সাথে কাঁচামাল ক্রয়ে পত্তা মিলছেনা। অন্য দেশ থেকে কাঁচামাল কিনতে খরচ পড়ছে চীন থেকে ৪০/৫০ শতাংশ বেশি। এতে ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন পণ্য উৎপাদককারী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো।

জানা গেছে, চীনে করোনাভাইরাস মহামারীর প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পণ্য উৎপাদনকারী এবং রফতানিকারীদের কাঁচামাল, রাসায়নিক এবং যন্ত্রপাতি ক্রয়ের বিকল্প স্থান খুঁজতে অসুবিধা হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উপর।

জানুয়ারির পর থেকে চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ফলে ব্যবসায়ীদেরকে কাঁচামাল আমদানির জন্য অন্য দেশ সন্ধানে বাধ্য করেছে। কিন্তু তারা বুঝতে পেরেছেন এটি খুব সহজ কাজ নয়। তাছাড়া বিকল্প আমদানির উৎস সন্ধানের ক্ষেত্রে দামও একটি কারণ বলে শিল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) পরিচালক মোহাম্মদ আতিক বলেন, নতুন উৎস খুঁজে পাওয়া সহজ নয়। চীন এমন একটি দেশ যেখানে সব কিছু পাওয়া যায়। কম দামে পাওয়া যায়। তাই আমরা সব ধরণের কাঁচামাল চীন থেকেই আনি।

তিনি বলেন, গত বছর যে এলসিগুলো করা হয়েছে সেই মাল এখনও আসে নি। যদিও গার্মেন্টস সেক্টরে স্টক কাঁচামাল দিয়ে এখনো চলছে। কিন্তু কয়েকদিন পর ঠিকই অনেক গামেন্টস বন্ধ করে দিতে হবে। কারণ কাঁচামাল পাওয়া যাবে না।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সহসভাপতি নাছির উদ্দিন বলেছেন, চীন মানসম্পন্ন কাঁচামালের একটি বড় কেন্দ্র। যা প্রতিযোগিতামূলক দামে কেনা যায়। কিন্তু আমাদের বিকল্প পেতে মশকিল হচ্ছে। চীনের পরিবর্তে অন্য দেশ থেকে রাসায়নিক সোর্সিংয়ের ব্যয় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বাড়বে। সিরামিক খাত কাঁচামাল এবং রাসায়নিকের জন্য সম্পূর্ণ চীনের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু এ মুহূর্তে অন্য উৎস খোঁজা সহজ নয়। আমরা যদি অন্য উৎস থেকে আমদানি করতে চাই, তবে সেগুলি হবে ইউরোপীয় কাউন্টার এবং এটি কোনও কার্যকর সমাধান হবে না।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, আমাদের বিকল্প দেশ খুঁজতেই হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে হলে চীনের উপর নির্ভরশীলতা কমানোর সময় এসেছে।

চট্টগ্রামের কেমিক্যাল আমাদানিকারক সাহির ট্রেডের স্বত্ত্বাধিকারী সরওয়ার আলম খান বলেন, কেমিক্যাল আমদানির জন্য জানুয়ারি মাসে এলসি করেছি ৫৪ হাজার ডলার। কিন্তু চীন থেকে এখনও শিপমেন্ট দিতে পারেনি সে দেশের কোম্পানি।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমস দিয়ে প্রতি মাসে ১৫ হাজার টন কেমিক্যাল আমদানি হতো। কিন্তু সম্প্রতি হচ্ছে মাত্র ৫ হাজার টন। করোনাভাইরাসের কারণে কমে প্রায় ৬৫ শতাংশ কেমিক্যাল আমদানি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত পোশাক খাতের বিকল্প উৎস হতে পারে, তবে দেশটিও মূল রাসায়নিকের জন্য চীনের উপর নির্ভরশীল। এখন কাঁচামালের উচ্চমূল্যের দাবি করছে ভারতও। তদুপরি, মোবাইল ফোন এবং ইলেকট্রনিক্স শিল্পগুলো কাঁচামাল, রাসায়নিক এবং প্রযুক্তির জন্য সম্পূর্ণ চীনের উপর নির্ভরশীল।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!