আফ্রিকায় চট্টগ্রামের যুবক অপহরণের চক্রে বাংলাদেশির সঙ্গে পাকিস্তানিও

দক্ষিণ আফ্রিকায় অপহরণ চক্রে জড়িয়ে পড়া কয়েকজন অপরাধী সেখানে বসেই অপহরণের জাল বিছিয়ে বাংলাদেশ থেকে মুক্তিপণ দাবি করছেন। সেই চক্রে বাংলাদেশির পাশাপাশি রয়েছে পাকিস্তানি ও সে দেশের কিছু অপরাধীও। আফ্রিকায় অপহরণের পর মুক্তিপণের টাকা আদায় করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল বাংলাদেশে। আর সেই টাকার লেনদেন হয় বাংলাদেশের ব্যাংকের মাধ্যমে।

সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় যুবক অপহরণের দুই ঘটনার পর এই চক্রের সাথে জড়িত সন্দেহে এক বাংলাদেশি যুবককে গ্রেপ্তার করেছে আফ্রিকার পুলিশ। তাদের সাথে যোগাযোগ করে এবং বাংলাদেশের ব্যাংক লেনদেনের হিসাব নম্বরের সূত্র ধরে এসব তথ্য জানতে পেরেছে চট্টগ্রামের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।

চট্টগ্রাম কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, গত ৩১ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকার টুইফনটেন এলাকার একটি দোকান থেকে চট্টগ্রামের যুবক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল রেজাকে (২৪) অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে চার কৃষ্ণাঙ্গ। রেজা দুই বছর ধরে খালাত ভাইয়ের দোকানে চাকরি করতেন। চট্টগ্রাম বন্দর থানার মাইলের মাথায় ওই যুবকের বাড়ি। ঘটনার পর দোকান মালিক মো. ফরহাদ দূতাবাসের মাধ্যমে সে দেশে একটি অপহরণ মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করছে দক্ষিণ আফ্রিকা পুলিশের ক্রাইম ইন্টেলিজেন্সের ন্যাশনাল কিডন্যাপিং টাস্ক টিম। গত সপ্তাহে অপহৃত রেজাকে উদ্ধার করে এক বাংলাদেশি ও এক পাকিস্তানি নাগরিককে গ্রেপ্তার করে দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি আমিনুল হক (৩৫) বাংলাদেশের ফেনীর বাসিন্দা।

তিনি আরও জানান, রেজা নামের ওই যুবককে অপহরণের সঙ্গে জড়িতরা বাংলাদেশের একটি ব্যাংক হিসাবে ৫০ লাখ টাকা পরিশোধ করতে বলেছিল অপহৃতের স্বজনদের। রেজার স্বজনরা চট্টগ্রাম কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সাথে সে দেশে হওয়া মামলার নথিপত্র নিয়ে যোগাযোগ করে গত সপ্তাহে। অভিযোগ পেয়ে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তা মামলার বাদির সাথে কথা বলে বিস্তারিত ঘটনা শোনেন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার তদন্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করেন। এ সময় বেসরকারি ব্যাংকটির হিসাবধারী ফেনীতে থাকেন। ওই সময় তাকে (হিসাবধারী) জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান দক্ষিণ আফ্রিকায় তার ছোট বোনের স্বামী আমিনুল তার ব্যাংক হিসাব নম্বরটি নিয়েছে।

পরে বাংলাদেশে সেই ব্যাংক হিসাব নম্বরটি শনাক্ত করে সেখান থেকে মুক্তিপণ হিসেবে আদায় করা এক লাখ টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে আমিনুল অপহরণের সাথে জড়িত থাকলেও বাংলাদেশে তার স্বজন (হিসাবধারী ব্যক্তি) কিছুই জানতেন না সে বিষয়ে। পাশাপাশি আমিনুলকে গ্রেপ্তারের পর দক্ষিণ আফ্রিকা পুলিশও চট্টগ্রামের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে নিশ্চিত করেছে এই ব্যাংক হিসাবধারী এই বিষয়ে কিছু জানেন না।

এডি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!