আন্দরকিল্লায় মন্ত্রীর সামনে হঠাৎই ৪০ ভিক্ষুকের দল নাছোড়বান্দা

আশ্বাস মিলল চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার

ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়ার বিনিময়ে জুটেছিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের চাকরি। সেই চাকরি হারানোর পর ভিক্ষাবৃত্তিতে ফিরে না গিয়ে চাকরি ফিরে পেতে এবার মন্ত্রীর গাড়ি আটকালেন ৪০ ভিক্ষুক। গাড়িতে বসেই তাদের কথা শুনে মন্ত্রীও দিলেন চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস। মন্ত্রীর সেই আশ্বাসে রাস্তা ছেড়ে দাঁড়ান ভিক্ষুকরা।

শনিবার (২৭ নভেম্বর) নগরের আন্দরকিল্লা পুরাতন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ভবনে একটি অনুষ্ঠান শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, নগরীর আন্দরকিল্লায় পুরাতন সিটি করপোরেশন ভবনে জাতীয় স্থানীয় সরকার ইন্সটিটিউটের আয়োজনে চসিক কাউন্সিলরদের ‘সিটি কর্পোরেশন প্রশাসন অবহিতকরণ’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

মন্ত্রী আসবেন জেনে সকাল থেকে সেখানেই অবস্থান নেন চসিক থেকে চাকরিচ্যূত ৪০ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী। এরা ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দেওয়ার শর্তে চসিকের চাকরি পেয়েছিলেন ২০১০ সালে। পরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে তাদের চাকরিচ্যূত করা হয়।

আন্দরকিল্লায় মন্ত্রীর সামনে হঠাৎই ৪০ ভিক্ষুকের দল নাছোড়বান্দা 1

পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের প্রতিনিধিত্বকারী কামাল হোসেন বলেন, ‘পুরাতন নগর ভবন থেকে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মহোদয় বের হওয়ার সময় গাড়ির সামনে গিয়ে আমরা দাঁড়িয়ে ছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘দারোয়ান ও পুলিশ আমাদের বাধা দিলেও আমরা মন্ত্রীর সাথে কথা বলতে চাই শুনে মন্ত্রী মহোদয় আমাদের সাথে কথা বলেন।’

মন্ত্রীর সঙ্গে আলাপচারিতার বর্ণনা দিয়ে কামাল হোসেন বলেন, ‘মন্ত্রী আমাদের কাছে আমাদের দাবি জানতে চান। আমরা উনাকে সব খুলে বলি। আমাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাই। একটা লিখিত আবেদনও উনাকে দিয়েছি। উনি সব শুনে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি দেখবেন বলে কথা দিয়েছেন।’

এর আগে চাকরি ফিরে পেতে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এবং চসিক ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপির কাছে যান এই ৪০ ভিক্ষুক।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আসর শুরু হলে নগরীকে ভিক্ষুকমুক্ত করার অংশ হিসেবে ২৫০ জন ভিক্ষুককে ৪ হাজার ৫০০ টাকা করে ভাতা দেওয়ার উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।

এছাড়া ৪৬ ভিক্ষুককে নিয়োগ দেওয়া হয় নগরীর মোড়গুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য। প্রথমে তাদের সিটি করপোরেশনের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে ৬ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হতো। নয় বছরে চার দফায় বেতন বেড়ে ১০ হাজার ৭০০ টাকা দাঁড়ায়। ৪৬ জনের মধ্যে দুইজন সুস্থ সবল সুপারভাইজার ছিলেন এবং চারজন মারা যান।

অবশিষ্ট ৪০ জন ভিক্ষুক পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করতেন। কিন্তু কর্মস্থলে উপস্থিত না হওয়ার অভিযোগে তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আদেশ দেয় চসিক।

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!