চট্টগ্রামের আনোয়ারার বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাসেল নামের এক জেলে নিহত হয়েছেন। তার পরিবারের দাবি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে গুলি করেছে।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ১১টায় আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বাতিঘর ছত্তার মাঝির ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রাসেল উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পরুয়াপাড়ার ২ নম্বর ওয়ার্ডের মুন্না মাঝির বাড়ি মোহাম্মদ রফিকের ছেলে।
আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব চিকিৎসক নিশাত সুলতানা বলেন, গুলিবিদ্ধ এক লোককে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়।
নিহতের সঙ্গে নৌকায় থাকা মাঝি মোহাম্মদ এনাম বলেন, চিংড়ি মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতের মাছ ধরার জন্য আমরা সাগরে জাল বসায়। সে জালগুলো তুলতে আমার ভাগিনা রাসেলকে নিয়ে বাতিঘর ছত্তার মাঝিরঘাটে যায়। ওই সময় দু’টি স্পিডবোটে করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিচয়ে আমাদের জাল তুলে নিতে বাধা দেয়। এরপর দু’টি গুলি করে তারা। তাদের ছোঁড়া গুলি রাসেলের পেটে লাগলে ঘটনাস্থলে মারা যায় সে। ঘটনার পর স্থানীয়দের সহযোগিতার আমরা তাকে মেডিকেলে নিয়ে আসি।
নিহতের পিতা মোহাম্মদ রফিক বলেন, আমার চার ছেলেমেয়ের মধ্যে রাসেল মেজ। গত ৫ মাস আগে বিয়ে করেছে সে। জীবিকার তাগিদে সাগরে গিয়েছিল মাছ ধরতে। কোস্টগার্ড প্রায় সময় জেলেদের মারধর করে এবং জেলেদের জাল নিয়ে যায়। এখন তারাই গুলি করে মেরেছে আমার ছেলেকে। এটার বিচার চাই।
রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন শরীফ বলেন, এরা হচ্ছে সাধারণ জেলে। মৎস্যশিকার করে সংসার চালায়। মাছ ধরার জন্য সাগরে ফেলা জাল সকালে ডিঙি নৌকা করে আনতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্ত করে অপরাধীর বিচারের দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে।
তবে উপজেলা মৎস্য অফিস অভিযান পরিচালনা করতে গেলে নৌপুলিশ আর সাঙ্গু কোস্টগার্ডকে সঙ্গে নেন। সেদিন উপজেলা প্রশাসনের কোনো অভিযান ছিল না বলে জানিয়েছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. রাশেদুল হক।
রাশেদুল হক বলেন, সাগরে মৎস্যশিকার বন্ধ থাকাকালে যদি আমরা কোনো অভিযান চালায়, তাহলে অভিযানে কোস্টগার্ড বা নৌপুলিশ সঙ্গে থাকে। ঘটনার পর আমরা কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। অভিযানের বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিদারুল ইসলাম সিকদার বলেন, লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। নৌপুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হবে।
ডিজে