আনোয়ারায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী ও শাশুড়ি আটক

আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়া ইউনিয়নে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনায় স্বামী ও শাশুড়ির আচরণ অসংলগ্ন হওয়ায় সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের আটক করেছে আনোয়ারা থানা পুলিশ। মৃতের নাম নাসরিন আকতার রিয়া (৩৫)।

জানা গেছে, এ দম্পতির বিয়ে হয়েছে সবে পাঁচ মাস। শুক্রবার স্বামী মনছুর ও তার মা বাচু আকতার মৃত নাসরিনকে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। দায়িত্বরত চিকিৎসকের সন্দেহ হলে নাসরিনকে মৃত ঘোষণা করে থানায় ফোন করেন। আনোয়ারা থানার পুলিশ পরিদর্শক এসআই আকরাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নাসরিনের লাশ উদ্ধার করেন। এ সময় স্বামী ও শাশুড়ির কথা বার্তা সন্দেহজনক মনে হয়। ঘটনাস্থল থেকেই স্বামী মনছুর আলম (২৮) ও তার মা বাচু আকতার (৫৫) কে আটক করে পুলিশ।

নাসরিন আকতারের বাবা আবুল হাশেম মুন্সি মুঠোফোনে জানান, ‘২ বছর পূর্বে আমার মেয়ে সৌদি আরবে চাকরি করতে চলে যায়। এরপর থেকে ওর সাথে আমার যোগাযোগ ছিল না । কিন্তু গত ১৫ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় একটি নাম্বার থেকে আমাকে ফোন করে আমার মেয়ে নাসরিন বলে, ‘বাবা আমাকে বাঁচাও’। এরপর থেকে ঐ নাম্বারে হাজারো বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। শনিবার সকালে আনোয়ারা থানা পুলিশ ফোন করে জানায় আমার মেয়ে মারা গেছে। এখন আমরা চট্টগ্রামের আনোয়ারার পথে।’

মনছুর আলমের মা বাচু আকতার বলেন, আমার ছেলের সাথে ফেসবুকে নাসরিনের সম্পর্কের মাধ্যমে বিবাহ হয়। গত শুক্রবার বিকালে আমি নাসরিনকে তার রুমে ডাকতে গেলে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ছেলেকে জানাই। পরে তার অবস্থা খারাপ দেখে হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তার তাকে দেখে মৃত বলে জানিয়েছে।

এ ব্যপারে জানতে চাইলে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহামুদ বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল সূত্রে জানতে পারি নাসরিন আকতার রিয়া নামে একটি মেয়ে মারা গিয়েছে। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। ওই সময় পুলিশের কাছে স্বামী ও শাশুড়ীর কথা বার্তা সন্দেহজনক মনে হলে দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। লাশটি ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। নাসরিনের পরিবার চাঁদপুর থেকে আসছে বলে জানিয়েছে। মৃত্যু নিয়ে রহস্য থাকায় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রসংগত, নাসরীনের বাড়ি চাঁদপুর, স্বামী মনছুরের বাড়ি আনোয়ারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। ৫ মাস আগে আনুষ্ঠানিক বিয়ে হয় দুজনের। অভাব অনটনের কারণে দুই বছর পূর্ব নাসরিন সৌদি আরবে চাকরির উদ্দেশ্যে চলে যান। সেখান থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সম্পর্ক হয় আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়া ইউনিয়নের মনছুর আলমের সাথে। ৫ মাস আগে নাসরিন দেশে এসে মনছুরের বাড়ি চলে আসেন। সেখানেই ১ লাখ টাকার দেনমোহরে দুজনের বিয়ে হয়।

মৃত নাসরিন চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর থানার ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের বালুচর গ্রামের মো. আবুল হাশেম মুন্সির মেয়ে।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!