আনন্দবাজারের বস্তিবাসীর পাশে কেউ নেই, ১৫ হাজার মানুষ অনটনে

নগরীর বুকেই বসবাস তাদের। খেটে খাওয়া মানুষগুলো উপার্জনের পথ হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। করোনা ভাইরাসের এমন দুর্যোগে তাদের খোঁজ নেওয়ারও কেউ নেই। করোনা ভাইরাসের কারণে চলমান লকডাউনের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানার ৩৭ নং ওয়ার্ড টিজি কলোনির বস্তিগুলোতে বসবাসরত কয়েক হাজার কর্মহীন পরিবারের ভাগ্যে এখনও পর্যন্ত জোটেনি কোন ত্রাণ কিংবা খাদ্যসামগ্রী।

ওই এলাকা ঘুরতে গিয়ে বস্তিবাসী জানালো সরকারি, বেসরকারি কেউ এগিয়ে আসেনি তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করার জন্য। পারুল বেগম নামের একজন বললেন, ‘পরিবার পরিজন নিয়ে আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। কাজে গেলে আমাদের ভাত জোটে আর না হয় উপোস থাকতে হয়। আমাদের খবর কে রাখে! আমাদের পেটে কি ক্ষিদে নেই?’

বস্তি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আনন্দবাজার এলাকার চাঁন্দাপাড়া থেকে টিজি কলোনি পর্যন্ত ৩৯টি ঘনবসতি রয়েছে। যা বস্তি হিসাবে পরিচিত। সেখানে প্রায় ৩ হাজার ৩৫০ পরিবারের ১৫ হাজার মানুষের বসবাস। যাদের অধিকাংশের কর্মসংস্থান সিটি কর্পোরেশনের ময়লার ডিপোর ওপর নির্ভরশীল। আবার এর মধ্যে রয়েছে রিক্সাচালক, দিনমজুর, ভ্যানচালক, গার্মেন্টস কর্মীসহ নানা পেশার শ্রমজীবি মানুষ। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ভোলা, লক্ষীপুর, নোয়াখালী, সন্দ্বীপ এবং হাতিয়া থেকে আসা নদীভাঙ্গা দরিদ্র পরিবারেরগুলোর বসবাস এখানে।

আনন্দবাজারের বস্তিবাসীর পাশে কেউ নেই, ১৫ হাজার মানুষ অনটনে 1

বস্তির বাসিন্দা মো.কালু মিয়া বলেন, ‘টমটম চালিয়ে কোন রকম সংসার চালাই। ভাইরাসের কারণে গাড়ি চালানো বন্ধ। অনেক দিন ধরে বেকার। এখন একবেলা খেয়ে আরেক বেলা উপোস থাকতে হয়। শুনছি সরকার নাকি অনেক কিছু দিচ্ছে। কই আমরা গরিব বস্তিবাসীরা তো কিছুই পাইলাম না। কয়েক দিন আগে কমিশনারের লোকজন ২০-৩০ জনের নামের তালিকা করেছে শুনেছি। আমরা যাবো কোথায়?’

আনন্দবাজার এলাকায় বসবাসরত ভোলা জেলা সমিতি চট্টগ্রাম শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহীম ফরাজী বলেন, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে লকডাউনের সময় আনন্দ বাজার এলাকার বস্তিবাসী এখনও পর্যন্ত কোন ত্রাণ পায়নি যা খুবই দুঃখজনক। এখানকার অধিকাংশ মানুষের কর্মসংস্থান ময়লার ডিপোর ওপর নির্ভরশীল, যা তাদের স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, আনন্দ বাজারের ময়লার ডিপো এলাকা এমনিতেই বস্তি এলাকা। বস্তিবাসীরা এখনও ত্রাণ বা খাদ্য সামগ্রী না পাওয়ার মূল কারণ স্থানীয় কাউন্সিলরদের আন্তরিকতা ও সমন্বয়হীনতা। বস্তিবাসীর ত্রাণ না পাওয়া বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেবো।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!