আধিপত্য বিস্তারে হামলা মামলায় পুরুষ শূন্য আদর্শপাড়া

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একের পর এক ঘটছে সংঘর্ষের ঘটনা। ইতিমধ্যে দু’পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রাম পুলিশ ও নারীসহ আহত হয়েছেন কয়েকজন। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে থানায়। এরপর থেকে এলাকায় আসামি আটকে চলছে পুলিশের অভিযান। ফলে আটকের ভয়ে এখন পুরুষ শূন্য পুরো এলাকা।

স্থানীয়রা সূত্রে জানা যায়, দুইটি গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলছে বিরোধ। অতীতে স্থানীয় নির্বাচনেও তারা দুই দলের পক্ষে কাজ করেছেন। ধীরে ধীরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চরম রূপ ধারণ করে। দুই পক্ষেই রয়েছে ২০-২২ বছরের কিছু উঠতি বয়সী যুবক। এসব বিপদগামী তরুণদের কারণে এলাকার সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। ওদের পরিবারের অভিভাবকরাও বিব্রত হচ্ছে ছেলেদের এমন বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে। কয়েকদিন আগেও দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে মামলা হয় থানায়। কিছুদিন নিরব থাকলেও পরে আবারও আধিপত্য বিস্তারে তাদের মধ্যে শুরু হয় গন্ডগোল। এরা রাতের আঁধারে দল বেঁধে একে অন্যের বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। নিজস্ব বলয় থাকায় দমাতে কষ্ট হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনেরও।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবারের (১৪ মে) সংঘর্ষের ঘটনায় আসমা খাতুন (৫০), মনিরুল ইসলাম (৩৬), গ্রাম পুলিশ লোকমান (৪৫) গুরুত্ব আহত হয়। এসময়ে উভয় পক্ষের মোহাম্মদ সোলাইমান, আমির হোসেন আমু, মোহাম্মদ হোসাইন, আয়শা খাতুন ও আবদুল মান্নানের বসত ঘরে ভাংচুর চালানো হয়। ওই রাতে অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ২ জনকে আটক করে। পাল্টাপাল্টি মামলার ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পারস্পরিক বিরোধের ঘটনায় আটকের ভয়ে এখন এলাকা পুরুষ শূন্য।

স্থানীয় মোছাম্মৎ পারভীন আকতার জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার স্বামী লোকমান কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার পথে আদর্শপাড়া চরহাজারী মৎস্য প্রজেক্টের সামনে তার উপর হামলা চালানো হয়। এসময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে দুর্বত্তরা পাশের জমিতে তাকে ফেলে পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় মামলা করলে পরিবারের বড় ধরণের ক্ষতি করবে বলে হুমকিও দেয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

ভূক্তভোগি খুরশিদা বেগম, লাকি আকতার ও কামরুল নেচ্ছা বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমাদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালায় মান্নান ও তার কিশোর গ্যাং সদস্যরা। তাদের উৎপাতে অতিষ্ঠ আমরা। যারা তাদের কথা মত না চলবে তাদের হতে হয় হামলার শিকার। প্রতিটি ঘরের তরুণদের নাকি যেতে হবে তাদের গ্রুপে। আমাদের ছেলে-মেয়েরা বের হতে পারে না। বের হলে তাদের নানা ধরণের অশ্লীল কথাবার্তা বলে হুমকি-ধমকি দেয়। পুরো এলাকার সাধারণ মানুষ মান্নান ও তার গ্রুপের আতঙ্কে রয়েছে। আমরা এটার সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, মারামারি ঘটনায় দু’পক্ষ থানায় মামলা করেছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!