আজানের ‘আওয়াজে’ আপত্তি চিটাগং ক্লাব সভাপতির, মহল্লা কমিটি থানায়

চট্টগ্রাম নগরীর পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকার একটি জামে মসজিদে উচ্চস্বরে আজানের ‘আওয়াজ’ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি লিখিত আপত্তি জানিয়েছেন চিটাগং ক্লাবের চেয়ারম্যান শিল্পপতি নাদের খাঁন ও তার স্ত্রী হাসিনা খাঁন। এদিকে এই দুজনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে থানায় জিডি করেছেন পূর্ব নাসিরাবাদ মহল্লা কমিটির নেতারা।

চট্টগ্রাম নগরীর পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকায় সপরিবারে বসবাস করেন চিটাগং ক্লাবের সভাপতি ও পেডরোলো গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাদের খাঁন।

জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে তিনি ওই এলাকার প্রধান শাহী জামে মসজিদে আযানের সময় উচ্চস্বরে মাইক ব্যবহার নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। তাতেও কাজ না হওয়ায় গত ১৪ ডিসেম্বর পূর্ব নাসিরাবাদ শাহী জামে মসজিদের সেক্রেটারি বরাবরে লিখিত একটি চিঠি পাঠান তিনি ও তার স্ত্রী।

মসজিদের আযানের আওয়াজ মসজিদের ভেতরেই সীমাবদ্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়ে লেখা সেই চিঠিতে তারা মসজিদ কমিটিকে সতর্ক করে দিয়ে লিখেছেন— ‘আপনারা যদি আমাদের অনুরোধ অগ্রাহ্য করেন, তবে সব ধরনের সহযোগিতা থেকে আমরা বিরত থাকবো।’

শিল্পপতি নাদের খাঁন ও তার স্ত্রী হাসিনা খাঁন চিঠিতে লিখেছেন— ‘আপনার নিকট এবং কমিটির অন্যান্য সম্মানিত সদস্যের নিকট বারবার অনুরোধ করেও এই পর্যন্ত শোনার ও বোঝার চেষ্টা করছেন না— আমাদের এই এলাকায় একই সাথে ৮-৯টি মসজিদ হতে আযান শোনা যায়। অথচ আপনারা কেউ কেউ এ কথাও বলেছেন যে, আপনারা যেহেতু দূরে থাকেন, শোনার সুবিধার জন্য মাইকের আওয়াজ বাড়িয়ে রাখেন। এই বিষয়টি আল্লাহতায়ালা নিশ্চয়ই পছন্দ করবেন না।’

চিঠিতে লেখা হয়, ‘শুক্রবারে মসজিদে মাইকের মাধ্যমে ওয়াজ প্রচার করা হয়। আপনাদের অনুরোধ করেছি— এই আওয়াজ আপনারা মসজিদের ভেতরে রাখেন— কিন্তু এই পর্যন্ত তাও হলো না! অনেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন। শিশুর ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার অসুবিধা হতে পারে, অসুস্থ লোকের অসুবিধা হতে পারে— অন্য ধর্মাবলম্বীদের বিরক্তির কারণ হতে পারে— সবচেয়ে বড় কথা বিকট আওয়াজ ছাড়া আর কিছুই বোঝা যায় না।’

নাদের খাঁন ও তার স্ত্রী হাসিনা খাঁন মসজিদ কমিটির কাছে অনুরোধের সুরে লিখেছেন— ‘মসজিদুল হারাম, মসজিদুল নববী— এই সকল মসজিদে এই ধরনের মাইক ব্যবহার হচ্ছে কিনা খবর নেন। আপনারা যদি আমাদের অনুরোধ অগ্রাহ্য করেন, তবে সব ধরনের সহযোগিতা থেকে আমরা বিরত থাকবো।’

এদিকে এমন চিঠির কথা জানাজানি হওয়ার পর পূর্ব নাসিরাবাদ মহল্লা কমিটির সভাপতি আমির হোসেন খান ও সাধারণ সম্পাদক অহিদ চৌধুরী মুক্তি এ নিয়ে খুলশী থানায় একটি জিডি (নম্বর ১১৬৫) করেছেন।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) দায়ের করা অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, এলাকাবাসী ও মসজিদের মুসল্লিরা নাদের খাঁন ও হাসিনা খাঁনের ওপর খুবই ক্ষুব্ধ ও ঘৃণা প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিয়ে ‘এলাকাবাসী উত্তেজিত’ উল্লেখ করে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের অঘটন ঘটার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

জিডিতে বিষয়টি নিয়ে নাদের খাঁন ও হাসিনা খাঁনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।

এ ব্যাপারে নাদের খাঁনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে তার স্ত্রী হাসিনা খাঁনের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। পরে হাসিনা খাঁনের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!