অস্ত্রধারী হাটহাজারীর সেই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে আরেক অভিযোগ

দ্বন্দ্বটা পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে। একপক্ষ চায় ভাগ হয়ে যাক। অন্যপক্ষ যে ক’দিন পারে জমিজমা ভোগদখলে রাখতে চায়। এ নিয়ে দ্বন্দ্বটা রুপ নেয় মারামারিতে। রামদা হাতে উদ্যতো হওয়ার ঘটনাও ঘটে। অভিযোগ যায় থানায়। মাস পেরোলেও সে অভিযোগ তদন্তের অগ্রগতি নেই।

এরই মধ্যে ঘটনা লম্বা হল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। একপক্ষ অন্যপক্ষের বিরুদ্ধে লিখতে শুরু করলো আপত্তিকর ভাষায় লিখালিখি।

অমুকের স্ত্রীকে সে দুইবার ডিভোর্স দিয়েছে। এখন তাদের সম্পর্ক অবৈধ।- এ ধরণের আপত্তিকর স্ট্যাটাসও দেখা গেছে একপক্ষের ফেসবুক আইডিতে। এবার সে ঘটনাও গড়ালো থানা পর্যন্ত।

রামদা হাতে ভাইরাল হওয়া হাটহাজারীর ফতেপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল মনির
বিরুদ্ধেই এবার দায়ের হল ডিজিটাল নিরপত্তা আইনে অভিযোগ।

বুধবার (১৩ মে) হাটহাজারী থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এরশাদ হোসেনের স্ত্রী ফারজানা শিকদার। এরশাদ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সহ সম্পাদক ছিলেন।

অভিযোগের ফারজানা শিকদার উল্লেখ করেন, গত ১৮ এপ্রিল রাত ৯টা ৭ মিনিটে তিনি ও তার স্বামী এরশাদ হোসেনকে অপমান করার লক্ষ্যে রাসেল মনি ফেসবুকে একটা পোস্ট দেন। এতে রাসেল মনি লিখেন, ‘এরশাদ তার স্ত্রীকে অনেকবার মেরেছে এবং তার স্ত্রীর সাথে তার দুইবার ডিভোর্স হয়েছে এবং তাদের সম্পর্ক এখন অবৈধ। স্বামী স্ত্রীর মারামারিতে আমরা তাকে অনেকবার রক্ষা করেছি।’ এই ভিত্তিহীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত স্ট্যাটাসের কারণে তারা সমাজে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন। রাসেল মনি এই স্ট্যাটাসের মাধ্যমে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট অপরাধ সংঘটিত করেছেন। এর মাধ্যে রাসের ফারজানা, তার স্ত্রী এরশাদ ও তাদের পরিবারের দুই কোটি টাকার সম্মানহানি হয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযোগকারী ফারজানা শিকদার বলেন, ‘ফেসবুক পোস্টে রাসেল মনি আমি ও আমার স্বামীকে নিয়ে কুৎসিত ও অত্যন্ত জঘন্য ভাষায় মিথ্যাচার করেছেন। আমাদের মানসম্মানে আঘাত করেছেন। যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ অনুযায়ী অপরাধ। এ ঘটনায় আমি মামলা দায়ের করতে হাটহাজারী এজাহার জমা দিয়েছি। আমার স্বামীর একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা রয়েছে। এভাবে আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে রাসেল মনি যা ইচ্ছে তা করতে পারেন না। এর আগে তিনি অস্ত্র হাতে আমাদের পরিবারে হামলা চালাতে এসেছেন। অস্ত্র হাতে তার স্পষ্ট ছবি ও ভিডিও থাকার পরও হাটহাজারী থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি।’

এ বিষয়ে হাটহাজারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাজীব শর্মা বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মানহানিকর তথ্য দিয়ে লেখালেখির ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ এসেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এর আগে গত ১৭ এপ্রিল রামদা হাতে প্রতিপক্ষকে আঘাত করতে রাসেল মনির উদ্যত হওয়ার ছবি ভাইরাল হয় ফেসবুকে। এ ঘটনায় হাটহাজারী উপজেলা জুড়ে সৃষ্টি হয় তোলপাড়।

ওই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও এখনো রাসেল মনিকে আটক করেনি হাটহাজারী থানা।

এ ঘটনায় হাটহাজারী থানা এখনো কোন মামলা রেকর্ড করেনি।

এ ঘটনায় আয়েশা আক্তার নামে একজন হাটহাজারী থানায় অভিযোগ দায়ের করে। আয়েশা আক্তার সিদ্দিক আহমদের সন্তান হাসান লিটনের স্ত্রী।

গত ২৭ এপ্রিল এ ঘটনায় ‘অস্ত্র উঁচিয়ে ভাইরাল নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি আওয়ামী লীগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয় চট্টগ্রাম প্রতিদিনে।

এফএম/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!