‘অলরাউন্ডার’ সাইফ ব্যাটে-বলে বাংলাদেশকে সিরিজ জেতালেন

সেঞ্চুরির পাশাপাশি বল হাতে ২ উইকেট নেন সাইফ

সাইফ হাসান বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে শুরু করে সব জায়গায় দলের হয়ে ইনিংসের গোড়াপত্তন করেন প্রায়ই। শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সিরিজেও এর ব্যতিক্রম দেখা যায়নি। ধারাবাহিকভাবে রান করে যাওয়া এই সম্ভাবনাময়ী ব্যাটসম্যান অফস্পিন বলও করতে পারেন। কিন্তু বল হাতে তাকে খুব একটা দেখা যায় না। সেই সাইফই শনিবার (১২ অক্টোবর) শ্রীলঙ্কায় বল হাতে দলের সেরা বোলার। ভাবছেন এদিন বুঝি ব্যাট হাতে কিছুই করতে পারেননি সাইফ? না, তিনি ১১০ বলে ১২ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় ১১৭ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেলেন।

শ্রীলঙ্কায় তিন অনানুষ্ঠানিক ওয়ানডের সিরিজে প্রথমটি হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে টানা দুই জয়ে সিরিজ বগলদাবা করল মোহাম্মদ মিঠুনের দল। সিরিজে ছিল ১-১ সমতা! শেষ ম্যাচটা তাইতো হয়ে যায় অলিখিত ফাইনাল। সেই লড়াইয়ে দাপুটে জয় বাংলাদেশ ‘এ’ দলের। আর সেই জয়ের নায়ক সাইফ হাসান। তার শতরানের পর বল হাতে দুই উইকেট হাসি ফোটায় সফরকারীদের। কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শনিবার ডাকওয়ার্থ-লুইস ম্যাথডে বাংলাদেশ ‘এ’ দল জিতেছে ৯৮ রানে।

৩ ম্যাচের সিরিজের প্রথমটিতে জেতে শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দল। পরেরটিতে শেষ বলে জিতে সমতা ফিরিয়ে ছিল বাংলাদেশ। আর শেষ ম্যাচটি জিতে ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে মোহাম্মদ মিঠুনের দল। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ব্যাটসম্যানরাই করে দিয়ে ছিলেন জয়ের পথ। শুরুতেই ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। কথা বলেছে সাইফ হাসানের ব্যাটও। এই ওপেনারের সেঞ্চুরিতে তৃতীয় ও শেষ আনঅফিসিয়াল ওয়ানডেতে ৯ উইকেটে ৩২২ রান তুলে বাংলাদেশ। সাইফ করেন ১১৭, নাঈম ৬৬।

জবাবে নেমে বোলারদের দাপট। দলের যখন জয়ের মঞ্চ তৈরি তখনই আলোর স্বল্পতায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়। বেশ কিছুটা সময় অপেক্ষা করার পরও যখন এ অবস্থার উন্নতি হলো না, এরপর ম্যাচ অফিসিয়ালরা ডিএল ম্যাথডে ৯৮ রানে জয়ী ঘোষণা করে বাংলাদেশকে। তখন লঙ্কানদের সংগ্রহে ছিল ২৪.৪ ওভারে ৬ উইকেটে ১৩০।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন সাইফ ও নাঈম। দু’জন গড়েন ১২০ রানের জুটি। এরমধ্যে নাঈম অদ্ভুদ আউটে ফেরেন সাজঘরে। ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ আউট হয়ে যান তিনি। তার ব্যাটে ৭৬ বলে দুই ছয় ও ৫ চারে ৬৬। তারপরই অবশ্য ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত (২) ও এনামুল হক (১৫)। শান্ত কিছুতেই পাচ্ছেন না রানের দেখা।

চতুর্থ উইকেটে সাইফ এগিয়ে যান মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে। তারা গড়েন ৯৯ রানের জুটি। আর সাইফ ১১০ বলে ১২ চার ও তিন ছয়ে তুলেন ১১৭ রান। মিঠুন ৩৫ বলে ৩২। শ্রীলঙ্কার শিরান ফার্নান্দো ৪ উইকেট শিকার করেন ৫০ রানে।

জবাবে নেমে আফিফ হোসেন ও আবু হায়দারের বোলিং দাপটে কোণঠাসা হয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। অবশ্য প্রিয়াঞ্জন আশান ও কামিন্দু মেন্ডিস কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। তাদের ৬৮ রানের জুটি ভাঙেন সাইফ হাসান। লঙ্কান অধিনায়ক প্রিয়াঞ্জন করেন ৬৫ বলে ৫৫ রান। মেন্ডিসের ব্যাটে ৫৫। তারপর অবশ্য পথ হারায় স্বাগতিকরা। খেলা যখন আলোর স্বল্পতায় বন্ধ হয় তখন জয়ের দ্বারপ্রান্তে ছিল বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ‘এ’ দল: ৫০ ওভারে ৩২২/৯ (সাইফ ১১৭, নাঈম ৬৬, শান্ত ২, এনামুল ১৫, মিঠুন ৩২, আফিফ ১২, সোহান ১৭, আরিফুল ৬, আবু হায়দার ৮, সানজামুল ১২*, ইবাদত ৩*; বিশ্ব ৩/৬৯, শিরান ৪/৫০, আপন্সো ১/৬১)
শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দল: (লক্ষ্য ২৪.৪ ওভারে ২২৯) ২৪.৪ ওভারে ১৩০/৬ (নিসানকা ৬, বিরাক্কডি ১৮, কামিন্দু ৫৫, প্রিয়াঞ্জন ৩৪, পেরেরা ৭, বান্দারা ৬, করুনারত্নে ১*, রমেশ ১*; আবু হায়দার ১/২৮, আফিফ ১/৩৬, ইবাদত ২/২৬, সাইফ ২/২৫)
ফল: ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ৯৮ রানে জয়ী বাংলাদেশ
ম্যাচসেরা: সাইফ হাসান
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয়ী বাংলাদেশ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!