অর্ধশতাধিক তরুণীর সর্বনাশ করে দুই প্রতারক র‌্যাবের জালে

সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার হিসেবে ভুয়া পরিচয় দিয়ে তার কাজই ছিল তরুণীদের সঙ্গে নানা কৌশলে সম্পর্ক গড়ে তোলা। সফল হলে ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার চাপ দিতেন। কারও কারও কাছে আবার দাবি করতেন নির্ধারিত অংকের টাকা। এভাবে অন্তত অর্ধশতাধিক তরুণীর সর্বনাশ করে শেষ পর্যন্ত ধরা পড়লেন এক সহযোগীসহ কক্সবাজারের প্রতারক যুবক।
ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কের জন্য চাপ দেওয়া হতো

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকালে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার চৌমুহনী বাজার থেকে ওই দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এর মধ্যে জহির উদ্দিন (৩২) মূল হোতা এবং অপরজন মো. সরোয়ার (২৪) তার বন্ধু ও অপকর্মের সহযোগী। দুজনের বাড়িই পেকুয়ায়।

র‌্যাব চট্টগ্রাম জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মো. রেজোয়ানুর রহমান জানান, সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসারের মিথ্যা পরিচয়ে জহির পেকুয়ার এক এনজিওকর্মী তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়। এছাড়া এক নারীর সঙ্গেও প্রতারণা করে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সে।

তিনি জানান, এ রকম প্রতারণা করে প্রায় অর্ধশতাধিক তরুণীর ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করেছে তারা।

জানা গেছে, তরুণীদের সঙ্গে নানা কৌশলে সম্পর্ক গড়ে তুলে ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার চাপ দিতেন জহির ও সরোয়ার। কারও কারও কাছে আবার দাবি করতেন নির্ধারিত অংকের টাকা।

সম্প্রতি পেকুয়ার এক এনজিওকর্মী তরুণীর ব্যক্তিগত মুহূর্তের বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে তাকে ব্ল্যাকমেইলিং শুরু করেন জহির। একপর্যায়ে তাকে আরও নগ্ন ছবি ও ভিডিও পাঠানোর জন্য চাপ দেন। পরে তাকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্যও চাপ দেন। কিন্তু ওই তরুণী এমন প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন জহির।

জানা গেছে, এমন হুমকির মুখে বাধ্য হয়ে এনজিওকর্মী ওই তরুণী টাকা দিতে রাজি হন। কিন্তু টাকা দিতে খানিকটা দেরি হওয়ায় তরুণীর ছবি ও ভিডিও জহির তার বন্ধু সরোয়ারের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দেন।

এবার ব্ল্যাকমেইলিং করতে থাকেন সরোয়ারও। তরুণীকে ফোন করে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন তিনি। কিন্তু টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সরোয়ার সেই ছবি ও ভিডিও তরুণীর চাচাতো ভাইয়ের কাছে পাঠিয়ে দেন। চাচাতো ভাই এ নিয়ে তরুণী জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি ঘটনা খুলে বলেন। এরপর তারা র‌্যাবের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ দেন।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!