অভিভাবকরা ভোট না দেওয়ায় তিন কিশোরের জন্মনিবন্ধন ছিঁড়লেন ইউপি চেয়ারম্যান

বান্দরবানের রুমা

বান্দরবানের রুমা উপজেলার তিন কিশোর চশৈপ্রু মারমা (১৭), মংচপ্রু মারমা (১৮) ও উমংপ্রু মারমা (১৭)। তাদের তিন জনেরই বসবাস উপজেলার গ্যালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের পান্তলা পাড়ায়। এর মধ্যে চশৈপ্রু দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এবং অপর দুজন জুম চাষে নিয়োজিত। তারা তিনজনই চলমান ভোটার হালনাগাদ তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হতে চেয়েছিলেন। তাই গত ২৯ এপ্রিল জন্মনিবন্ধন সনদের ডিজিটাল কপি সংগ্রহের জন্য যান গ্যালেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদে। আর তাতে বাধ সাধেন গ্যালেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান শৈউ সাই মারমা।

ওই তিন কিশোর জানান, ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হওয়ার জন্য অন্যান্য কাগজের সাথে জন্মনিবন্ধনের ডিজিটাল কপি প্রয়োজন হয়। জন্ম নিবন্ধনপত্রের ডিজিটাল কপির জন্য গত ২৯ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত চারবার ওই ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েছি। কিন্তু চেয়ারম্যান অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আমাদেরকে বারবার ফিরিয়ে দিয়েছে। একপর্যায়ে আমাদের হাতে থাকা জন্ম নিবন্ধনের ডিজিটাল কপিটি স্বাক্ষর ছাড়াই ছিঁড়ে ফেলেন।

তারা আরো জানান, জন্ম নিবন্ধন কপি কেন ছিঁড়ে ফেললেন এমন প্রশ্নে চেয়ারম্যান জানান, আমার অভিভাবকরা নির্বাচনের সময় তাকে ভোট দেয়নি। আর সবসময় বদনাম করে, সবকিছুতে বিরুদ্ধে থাকে বলে চেয়ারম্যান দাবি করেন।

জন্মনিবন্ধনের ডিজিটাল কপি ছিঁড়ে ফেলার বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শৈউসাই মারমা। তিনি বলেন, ইন্টারনেট সমস্যার কারণে ওই তিন কিশোরের জন্ম নিবন্ধনের ডিজিটাল কপি প্রিন্ট করা সম্ভব হয়নি। এছাড়াও তাদের অভিভাবকদের সাথে নিয়ে আসার জন্যও বলেছি।

চেয়ারম্যান আরো জানান, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের সময় ওই তিন কিশোরের অভিভাবকরা দল বেঁধে শপথ নিয়েছিলেন আমাকে ভোট দেবেন না। এতে আমার রাগ নেই। তবে কেন আমাকে ভোট না দিতে শপথ করল তা জানার জন্য ওই কিশোরদের অভিভাবকদের আসতে বলা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ওই তিন কিশোরের অভিভাবকের যদি আসেন, তাহলে কোন দোষ থাকলে তাদের কাছে ক্ষমা চাইব।

তবে গ্যালেঙ্গ্যা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সচিব উবানু মারমা বলেন, স্বাক্ষর না দিয়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ ছিঁড়ে ফেলার কথা লোকেমুখে শুনেছি। তবে চেয়ারম্যানের সাথে এ ব্যাপারে আমার সরাসরি কথা হয়নি।

রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শামসুল আলম বলেন, বিষয়টি মৌখিকভাবে শোনার পর গ্যালেঙ্গ্যা ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা হয়েছে। যা করা প্রয়োজন তা করার জন্য বলে দিয়েছি। এতে কাজ না হলে লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ নিয়মে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানালেন ইউএনও শামসুল আলম।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!