অবৈধ সম্পদ ও অর্থপাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার রেল শ্রমিক লীগ নেতা

অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও লেনদেনের দায়ে চট্টগ্রাম রেলওয়ের কর্মকর্তা ও শ্রমিক লীগ নেতা অলি উল্লাহ সুমনকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুর ১টার দিকে নগরীর আগ্রাবাদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া সুমন ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার বারুইগ্রাম মিশীপুর এলাকার মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম রেলওয়ে চিফ কর্মাশিয়াল ম্যানেজারের (পূর্বাঞ্চল) এর সহকারী দাবি পরিদর্শক এবং সিআরবির শ্রমিক লীগ নেতা।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া অলি উল্লাহ সুমন চাকরিতে থাকাকালীন রেলওয়ের চাকরি দেওয়ার প্রলোভন, তদবির ও ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার নামে বেশ কয়েকটি ব্যাংক ও কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করেন। দুদকের অনুসন্ধানে সর্বশেষ ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা আয়ের অবৈধ উৎসের খোঁজ পায়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ জেলায় অবৈধ টাকায় জমি ক্রয়ের প্রমাণও পায় দুদক।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, অলি উল্লাহ সুমন চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে বিভিন্নজনের কাছ টাকা লেনদেন করেন। এছাড়া কিশোরগঞ্জ জেলায় অবৈধ আয়ের টাকা দিয়ে জমি ক্রয়ের প্রমাণও পাওয়া গেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে আগ্রাবাদ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।’

তিনি বলেন, অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের দায়ে দন্ডবিধির ১৬৩/৪২০ সহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ ২ নম্বর আইনের ৫(২) ধারায় এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ২ (ফ) ধারায় বর্ণিত মানি লন্ডারিং আইনের ৪ (২)ধারায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানায়, অলি উল্লাহ সুমন ২০০৫ সালের ১৬ জানুয়ারিতে রেলওয়ের (পূর্বাঞ্চল) সদরদপ্তরে পিয়ন পদে যোগদান করেন। গত বছরের জুলাইয়ের শেষের দিকে রেলের পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তার দপ্তরে সহকারী দাবি পরিদর্শক (এসিআই, গ্রেড-২) হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি।

এদিকে রেলে কর্মরত অলি উল্লাহ সুমনের পরিবারের ৫ সদস্যের বিষয়েও দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুদক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার সহকর্মীরা জানান, অলি উল্লাহ সুমন চাকরিতে জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি নেওয়ার অভিযোগকে আড়াল করতে রেলওয়ে শ্রমিক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। শ্রমিক নেতা হওয়ার সুবাদে প্রায় তিনি রেলের শ্রমিকদের সঙ্গে প্রভাব খাটাতেন। অফিস ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন তদবির কাজে ব্যস্ত থাকতেন। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পেত না। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে শীর্ষ কর্মকর্তাদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সিএমপির কোতোয়ালী থানার দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-২ এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

আজাদ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!