অপহরণের ২৬ দিন পর বাঁশখালীর মাদ্রাসা ছাত্রী পতেঙ্গায় উদ্ধার
অপহরণের ২৬ দিন পর বাঁশখালীর এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে রোববার (১৬ জুন) বেলা তিনটার দিকে পতেঙ্গার বিজয়নগর এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে বাঁশখালী থানা পুলিশ। ওই সময় অপহরণকারী মো. মুরাদ প্রকাশ মুরালীকে (৩৪) পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তিন সন্তানের জনক মুরালী আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গহিরা গ্রামের মৃত মফজল আহমদের পুত্র। অপহৃতার বাড়ি বাঁশখালীর খানখানাবাদ ইউনিয়নের রায়ছটা গ্রামে। রায়ছটার একটি মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।
পুলিশ জানায়, অপহরণকারী মো. মুরাদ প্রকাশ মুরালীর বাড়ি আনোয়ারা উপজেলায় হলেও বাঁশখালীর রায়ছটা গ্রামে তার আত্মীয় রয়েছে। তিন সন্তানের জনক মুরালী আত্মীয়তার সুবাদে প্রায়ই বাঁশখালী আসতেন। আসা-যাওয়ার পথে ষষ্ঠ শ্রেণির ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে নানাভাবে উত্যক্ত করতেন মুরালী। বিষয়টি তার স্থানীয় আত্মীয়কে জানালে হয়রানির মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
গত ২২ মে ওই ছাত্রী মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে মুরালী তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে অপহৃতার বাবা নানাভাবে খোঁজাখুজি করেও খোঁজ পাননি। কয়েকদিন আগে অপহরণকারী মুরালী অপহৃতার বাবাকে মোবাইলে ফোন করে জানান, ‘৫০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দাও। নইলে তোমার মেয়েকে পাবে না।’ গত শনিবার রাতে অপহৃতার বাবা বিষয়টি জানিয়ে থানায় এজাহার দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জলিল বলেন, ‘এজাহারটি পেয়ে অপহরণকারী মো. মুরাদ প্রকাশ মুরালীকে রবিবার (১৬ জুন) পতেঙ্গা থানার বিজয়নগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপহৃতাকেও এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে।’
পেশায় রিক্সা গ্যারেজের মেকানিক অপহৃতার বাবা বলেন, ‘আমি দরিদ্র ও অশিক্ষিত। ৬ কন্যার বাবা। কোন ছেলেসন্তান নেই। অনেক কষ্টে মেয়েগুলোকে খেয়ে না খেয়ে লেখাপড়া শিখিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছি। বখাটে মুরালী আমার কন্যাকে অপহরণ করে আমাকে চরমভাবে হতাশায় ফেলেছিল। দীর্ঘদিন ধরে অসহায়ত্বের মাঝে গ্রামের মো. জসীম নামের এক ব্যক্তির কথায় গত শনিবার রাতে বাঁশখালী থানায় এজাহার দায়ের করি। পুলিশ কম সময়ে যে আমার মেয়েকে আমার বুকে ফিরিয়ে দিয়েছে সেজন্য পুলিশ প্রশাসনকে অসংখ্য ধন্যবাদ। পুলিশ যে ভাল কাজ করে তা বুঝতে পারলাম।’