অপর্যাপ্ত পিপিই, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীতে অসন্তোষ

বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের জন্য পর্যাপ্ত পিপিই নিশ্চিত করা হয়নি। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ১ মাসের মাথায় পিপিই এলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। এ নিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে।

জানা গেছে, গত ২৯ এপ্রিল রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ৭টি ইউনিটের জন্য পিপিই পাঠানো হয় ২০০টি। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য রয়েছেন ৪৩৫ জন। ২০০ জনের মধ্যে পিপিইগুলো বিতরণ করা হলেও বাকিদের মধ্যে কাজ করছে আতংক, ক্ষোভ।

রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য জানান, ব্যারাকে গাদাগাদি করে সদস্যদের থাকতে হয়। প্রথম দিকে তাই চট্টগ্রামের মধ্যে যাদের বাড়ি তাদের ছুটি দেওয়া হয় যেন ব্যারাকে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা যায়। কিন্তু ২৬ মার্চ সরকারি প্রজ্ঞাপনে প্রত্যেক সরকারি বিভাগে আইনশৃঙ্খলায় দায়িত্বরতদের ছুটি বাতিল করে হেডকোয়ার্টারে অবস্থান ও দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এই প্রজ্ঞাপনের পর রেলওয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের যাদের ছুটি ছিল তারাও ব্যারাকে ফিরে আসে। কিন্তু রাষ্ট্রের সকল নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সুরক্ষা পোশাক হিসেবে পর্যাপ্ত পিপিই পেলেও পায়নি রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। ১ মাস পর পিপিই পাঠালেও প্রয়োজনের তুলনায় পাঠানো হয়েছে অর্ধেকেরও কম।

জানা গেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর ৭টি ইউনিটে ৪৩৫ জন সদস্য রয়েছে। এর মধ্যে জেনারেল শাখায় চাহিদা আছে ১৩৮টি, কিন্তু দেওয়া হয় ৪০টি। অস্ত্র শাখায় ১১৭টি পিপিই’র চাহিদার বিপরীতে মিলেছে ৩০টি। সিজিপিওয়াই ইউনিটে ৯৩টির বিপরীতে বিতরণ করা হয় ২৫টি পিপিই। লাকসাম ইউনিটকে ৬৮টির চাহিদার বিপরীতে দেওয়া হয় ৩০টি। ওয়ার্কসপে ৪২টি চাহিদার বিপরীতে পিপিই দেওয়া হয় ২০টি। এছাড়া স্টোর ইউনিটে ৪২টির চাহিদা ছিল, মিলেছে ২০টি। আর সিআরবি ইউনিটে ২৯টির বিপরীতে বিতরণ করা হয় ২০টি পিপিই।

রেলওয়ে নিরাপত্তা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেকেরও কম পিপিই আসায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে কাজ করছে ক্ষোভও। কারণ পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করছে প্রত্যেক সদস্য। কিন্তু কারও পিপিই আছে, কারও নেই। একজনের সুরক্ষা পোশাক নিশ্চিত হল, অন্যজনের হয়নি। অথচ সবাই সমান ঝুঁকির মধ্যেই কাজ করছে। তাই দ্রুত পর্যাপ্ত পিপিই প্রয়োজন রয়েছে।’

চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের চিফ ইন্সপেক্টর আমান উল্লাহ বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য আছেন ১৩৮ জন৷ কিন্তু পেয়েছি ৪০টি। চাহিদার ৩ ভাগের ১ ভাগ এই পিপিইগুলো ঝুকিপূর্ণভাবে দায়িত্ব পালনকারীদের বিতরণ করেছি। এতে বাকিদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। হয়তো তারা বলতেও পারে আমি পিপিই বিতরণে স্বজনপ্রীতি করেছি।’

রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম বিভাগীয় চিফ কমান্ডেন্ট জহিরুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বাহিনীর সদস্যরা আসলেই ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছে। বাহিনীর সদস্য অনেক। একসাথে তাই পিপিই তৈরি করে সরবরাহ করতে দেরি হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রথম থেকেই আমরা বাহিনীর সদস্যদের প্রাথমিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিয়েছি। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় সচ্ছতা নিশ্চিত করতে ২ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। সুশৃঙ্খল বাহিনীর সবদিক শৃঙ্খলার মধ্যে থাকবে, এটাই নিয়ম।’

জেএস/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!