অন্যের বাড়ির গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছিল মন্ত্রীপুত্র মুজিবের ঘরে

অবৈধ গ্যাস সংযোগ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের তৎপরতায় নড়েচড়ে বসেছে এবার কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিভিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। অভিযান চালিয়েছে তারা সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির পুত্র মুজিবুর রহমানের বাড়িতে। অভিযানে ২২টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

শনিবার (১২ জুন) চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার সানোয়ারা আবাসিক এলাকায় সানোয়ারা গ্রুপের মালিক ও সাবেক প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির পুত্র মুজিবুর রহমানের বাড়িতে এসব অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

এর আগে ১০ জুন সরকারিভাবে চট্টগ্রামে আবাসিক গ্যাস বন্ধ থাকার পরও কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে মুজিবুর রহমানের বাড়িতে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া এবং স্থানান্তরের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করে দুদক)।

দুদক মামলা দায়ের পরপরই কেজিডিসিএল’র মহাব্যবস্থাপক মো. সারওয়ার হোসেন, বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলী চৌধুরী এবং বিক্রয় দক্ষিণ আগ্রাবাদ জোনের সি গ্রেড সার্ভিসের টেকনিশিয়ান মো. দিদারুল আলমকে গ্রেপ্তার করে দুদক। ওইদিনই তাদেরকে কারাগারে পাঠায় করে চট্টগ্রামের একটি আদালত।

একই মামলার পলাতক দুই আসামি হলেন, এই প্রতিষ্ঠানটির লোড ডেসপাচ ট্রান্সমিশনের ব্যবস্থাপক মো. মজিবুর রহমান (৫৭) এবং প্রতিষ্ঠানটির আবাসিক গ্রাহক সাবেক মন্ত্রী নুরুল বিএসসি পুত্র মুজিবুর রহমান।

দুদক সুত্রে জানা যায়, হালিশহরে এম এ সালাম নামে কেজিডিসিএল থেকে বরাদ্ধ পাওয়া ১৮ টি দ্বৈত চুলার সংযোগ থেকে ১২টি সংযোগ চান্দগাঁও থানার সানোয়ারা আবাসিক এলাকায় মুজিবুর রহমানের বাড়িতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এক গ্রাহকের নামে বরাদ্দ সংযোগ অন্য গ্রাহককে গ্যাস হস্তান্তর করার নিয়ম নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিবার কল করা হলেও সাড়া মেলেনি। এরপর তার পিএস কামরুল ইসলামকে একাধিবার মুঠোফোনে কল করা হলেও তার সাড়াও পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কেজিডিসিএল’র মহাব্যবস্থাপক (কোম্পানি সচিব) মোহাম্মদ নূরুল আবসার সিকদার বলেন, ‘গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকার পরও অবৈধ প্রক্রিয়ায় সাবেক মন্ত্রীপুত্র মুজিবুর রহমানের বাসায় ২২ টি দ্বৈত চুলার গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। এগুলো বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। কেজিডিসিএল’র নিয়ম না মেনে এ জালিয়াতিতে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিতে মামলা দায়ের করেছে দুদক। বিপনন বিভাগের পক্ষ থেকেও জড়িতদের বিরুদ্ধে নিয়মনীতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে চট্টগ্রামে গ্যাস সংযোগ দেয়া বন্ধ থাকলেও সানোয়ারা আবাসিক এলাকায় মুজিবুর রহমানের নামে আরও ১০টি সংযোগ দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর ১০ জুন অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেওয়ার দায়ে কেজিডিসিএল শীর্ষ তিন কর্মকর্তা সহ মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে দুদক।

মুআ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!