অনুমতির আগেই পশুর হাট ইজারা দিয়ে দিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন

জেলা প্রশাসনের অনুমতি না নিয়েই করোনা দূর্যোগে চট্টগ্রাম নগরীতে ৪টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর আয়োজন করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)।

ইতোমধ্যে চসিক তিনটি হাটের ইজারাদার নিয়োগের দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্নও করেছে। একটি হাটের দরপত্র জমা না পড়ায় সেটি নিয়ে মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) বৈঠকে বসবে চসিক কর্তৃপক্ষ।

চসিক কর্মকর্তাদের দাবি, পুলিশের পক্ষে থেকে আপত্তি নেই। জেলা প্রশাসনও কাজ এগিয়ে নিতে মৌখিক অনুমতি দিয়েছে। আনুষ্ঠানিক অনুমতিও দিয়ে দিবে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীতে মুরাদপুর এলাকার বিবিরহাট এবং পাহাড়তলীর সাগরিকা গরু বাজার হলো স্থায়ী গরু হাট।
কোরবানি ঈদ উপলক্ষে নগরীতের অন্যান্য বছর আরো সাতটি অস্থায়ী হাট বসতো। সেগুলো হলো- এক কিলোমিটার কর্ণফুলী গরুর হাট, কমল মহাজন হাট, নিউমুরিং আবাসিক এলাকা, পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, বাটারফ্লাই পার্ক এলাকার মাঠ, সল্টগোলা ও স্টিল মিল বাজার।

করোনা ছাড়াও এবার বিমানবন্দর সড়কে চলছে এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের কাজ। ইপিজেডের শ্রমিক ও বিমানবন্দরগামী যাত্রীর অসুবিধার কথা বিবেচনায় সল্টগোলা, স্টিল মিল বাজার, ও পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গরু বসানো নিয়ে আপত্তি জানায় চট্টগ্রাম নগর পুলিশ (সিএমপি)।

সিএমপির আপত্তির মুখে চসিক এই তিনটি অস্থায়ী বাজার বসানো থেকে সরে আসে। তবে এক কিলোমিটার এলাকার কর্ণফুলী গরুর হাট, নিউমুরিং আবাসিক এলাকা, কমল মহাজন হাট, বাটারফ্লাই পার্ক এলাকার মাঠ ইজারার দরপত্র আহবান করে।

এদিকে এক কিলোমিটার এলাকার কর্ণফুলী গরুর হাট ইজারা নিতে কেউ দরপত্রে অংশ নেয়নি। কারণ প্রত্যেক বছর এই হাটের আয়োজক থাকতো ঋণ খেলাপীর মামলায় কারারুদ্ধ বিএনপি নেতা শামসুল আলম।

অন্যদিকে নিউমুরিং আবাসিক এলাকা, কমল মহাজন হাট, বাটারফ্লাই পার্ক এলাকার মাঠ ইজারার প্রক্রিয়া শেষ করেছে চসিক। কর্ণফুলী গরুর হাট নিয়েও চসিক সিদ্ধান্ত নিতে চায় দ্রুত।

আবার বিবিরহাট ও সাগরিকা স্থায়ী হাট দুটি বাংলা বছরের শুরুতে ইজারা দেওয়া হয়েছে। এবার করোনায় ‘সংক্রমণ শঙ্কামুক্ত’ হাট পরিচালনার বিষয়ে চসিক তদারকি করবে বলে জানা গেছে।

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘কোরবানি উপলক্ষে প্রতি বছর দুটি স্থায়ী হাটের পাশাপাশি আরও সাতটি অস্থায়ী হাট ইজারা দেওয়া হতো। এবার পুলিশের পক্ষ থেকে তিনটি বাজার ইজারা না দেওয়ার অনুরোধ ছিল। আমরা সে তিনটি বাজার ইজারা দিইনি। বাকি চারটি অস্থায়ী বাজারের বিষয়ে পুলিশেরও আপত্তি নেই, জেলা প্রশাসনেরও আপত্তি নেই। সময় সল্পতা বিবেচনায় আমরা দরপত্র চূড়ান্ত করেছি। এখনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। কয়েকদিনের মধ্যে ইজারাদারদের বরাদ্দপত্র দেওয়া হবে। যেটিতে দরপত্র জমা পড়েনি সেটির বিষয়েও দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘পুলিশের পক্ষ থেকে যে তিন অস্থায়ী বাজার নিয়ে আপত্তি দেওয়া হয়েছে সে তিনটি বাজারের দরপত্র আহবান করা হয়নি। বাকি চারটির বিষয়ে আমরা অনুমতি দিবো। স্থায়ী অস্থায়ী সব বাজারেই মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মানা, সুরক্ষা উপকরণ রাখা, বিক্রেতাদের থাকা, খাওয়া এবং মেডিকেল টিম রাখাসহ সার্বিক বিষয়ে তদারকি করতে হবে।’

জানা গেছে, তবে মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সকাল ১১টা পর্যন্ত চসিক জেলা প্রশাসন থেকে আনুষ্ঠানিক অনুমতি চায়নি। করোনা পরিস্থিতিতে সব কাজ সমন্বিতভাবে করার নির্দেশনা থাকলেও বারবার সমন্বয়হীনতার অভিযোগ উঠেছে শুরু থেকেই। সর্বশেষ গরু বাজার নিয়ে একই অভিযোগই উঠলো।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!