অনলাইনে গৃহশিক্ষকের খোঁজ দেবে ইয়োডা

এবার অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে গৃহশিক্ষকের সন্ধান দিতে নতুন প্লাটফর্ম হিসেবে যাত্রা করেছে ‘ইয়োডা’। ঘরে বসেই অনলাইনে শিক্ষক খোজার মার্কেটপ্লেস তৈরি করেছেন উদ্যোক্তা মোহাম্মদ সালমান। অনলাইনে ইয়োডায় নিবন্ধন করলে যে কোন বাবা-মা তাদের সন্তানদের জন্য সেখান থেকে বেছে নিতে পারবেন গৃহশিক্ষক। আর ইয়োডায় শিক্ষকরা নিবন্ধিত হলে পাচ্ছেন নিজের চাহিদামত শিক্ষার্থী।

তিন বছরের শ্রম আর পরিশ্রমের ফলেই প্রতিষ্ঠা পায় ইয়োডা। এজন্য এই দীর্ঘ সময় ধারণাটির পিছনে লেগে ছিলেন মোহাম্মদ সালমান। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে ছোট দুটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ শুরু করেন সালমান। এর পাশাপাশি ইউনিলিভার ও ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোবাকোর মত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন এই উদ্যোক্তা।

দীর্ঘদিন চাকরির পর স্বাধীনভাবে কিছু করার তাগিদ থেকে ভালো বেতনের চাকরি ছেড়ে পুরোদমে উদ্যোক্তা হতে প্রথমে বনানীতে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘ট্রি হাউজ রেস্টুরেন্ট’। এই রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় সফল হওয়ার পর তিনি আর একটি নতুন রেস্টুরেন্ট না দিয়ে জমানো টাকা দিয়ে শুরু করেছেন অনলাইনভিত্তিক শিক্ষক খোজার মার্কেটপ্লেস ‘ইয়োডা’।

প্রশ্নটি মনে হওয়া খুবই স্বাভাবিক কেন এই ইয়োডা প্লাটফর্ম। মোহাম্মাদ সালমান বলেন, সবারই জানা, শিক্ষাই শক্তি, শিক্ষাতেই মুক্তি। যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষার্থীদের মতো করে অভিযোজন তাদের চলমান পরিস্থিতির সঙ্গে অভিযোজন করার সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার হচ্ছে শিক্ষা ও উপযুক্ত শিক্ষক। আমরা সেটা পৌঁছে দেবার নিশ্চয়তা দিচ্ছি।

সাধারণত যখন আমরা বাসায় শিক্ষক ঠিক করি তখন মুখের কথায় সব বিশ্বাস করি। এক্ষেত্রে ইয়োডা শিক্ষকের সব তথ্য শিক্ষার্থীর অভিভাবকের সামনে উপস্থাপন করে। এরপর তথ্য দেখে শিক্ষক পছন্দ করতে পারছেন অভিভাবকরা। এর ফলে এখানে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। নতুন কোন গৃহশিক্ষক খুঁজতে চাইলে ইয়োডার এই ওয়েবসাইটে গিয়ে অ্যাকাউন্ট করতে হবে। অ্যাকাউন্ট তৈরি করে আপনি সহজেই আপনার সন্তানের জন্য পছন্দের শিক্ষক খুজে পাবেন।

ইয়োডার শিক্ষক নিবন্ধ প্রক্রিয়ায় অনেক গুলো ধাপ পার করতে হয়। প্রথম শিক্ষক নিজে সব তথ্য প্রমান দিয়ে নিবন্ধন করবেন এর পর ইয়োডা কতৃপক্ষ সব তথ্য প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলে যাচাই বাছাই করে ইয়োডা প্লাটফর্মে অভিভাবকদের জন্য উন্মুক্ত করবে। এর ফলে অভিভাবকদের কোন ভাবে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা নাই।

সবমিলিয়ে বর্তমানে ১৭ জনের একটি টিম কাজ করছে ইয়োডাকে আরও মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। সালমান নিজে বিজনেস ফ্যাকাল্টির মানুষ হওয়ায় শুরুতে তিনি একটু ঝামেলায় পড়েছিলেন ইয়োডার প্রযুক্তিগত বিষয় নিয়ে। কাজটিকে সহজ করেছেন ইয়োডার সিটিও রিফাত বিন রেজা। যার তত্বাবধানে ইয়োডাতে শিক্ষক খোঁজার পাশাপাশি একটি হোয়াইট বোর্ড ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে অডিও ভিজুয়্যাল ইফেক্টসহ পুরো সেশন রেকর্ড করে রাখা যাবে। এটি মূলত দেশের ইলার্নিংয়ে নতুন সংযোজন। অর্থাৎ কোন শিক্ষক সরাসরি শিক্ষার্থীকে পড়াতে বাসায় না আসতে পারলেও এই ফিচারের মাধ্যমে অনায়াসে পড়াতে পারবেন।

ইয়োডা টিমের হেড অব অপারেশন মহীউদ্দিন কাজী স্মরণ বলেন, আমাদের হোয়াইট বোর্ড ফিচার চিরায়ত শিক্ষা ব্যবস্থাকে অনেক সহজ করবে। আপনার হয়ত ঢাকার যানজট পেরিয়ে ফ্রেঞ্চ শিখতে যাওয়ার সময় নাই। তবে একটি নির্দিষ্ট সময় আপনি ঘরে বসে যদি শিখতে পারেন। তাহলে আপনার সময় ও অর্থ দুটোই বাঁচবে। হোয়াইট বোর্ড ফিচারটির মাধ্যমে আগামী দিনে দেশের রিমোর্ট প্লেসের শিক্ষার্থীদের নিয়েও কাজ করতে চায় ইয়োডা।

আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুর এখনও এক বছর পূর্ণ হয়নি ইয়োডার। শুরুতে শুধু ঢাকায় কাজ করবে ইয়োডা। তবে আগামী দিনে সমগ্র বাংলাদেশে শিক্ষা বিস্তারেও ইয়োডার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এখন অনলাইনের পাশাপাশি একটি অ্যাপও নিয়ে এসেছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!