মোছলেম-সুফিয়ানই নয় শুধু, আছেন আরও একজন

চট্টগ্রাম-৮ আসনে ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস

চট্টগ্রাম ৮ আসনের উপনির্বাচনে ৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও মূল আলোচনায় আছেন তিন প্রার্থী। আওয়ামী লীগের মোছলেম উদ্দিন আহমদ, বিএনপির আবু সুফিয়ান ও জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে ঘিরেই চলছে নির্বাচনের নানা হিসেব নিকেশ। এই আসনের ভোটার ও রাজনৈতিক বোদ্ধাদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে নানা বিষয়। কে হাসবে শেষ হাসি? আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের পোড় খাওয়া নেতা মোছলেম, জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা বাবলু নাকি বিএনপির সুফিয়ান!

১৯৭৩ সালে পর এই আসনে কখনোই দলীয় কাউকে সাংসদ হিসেবে পায়নি বোয়ালখালী আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা। এবার সে সুযোগ তৈরি হওয়ায় তা কাজে লাগাতে মরিয়া আওয়ামী লীগ। এছাড়া লম্বা সময় ধরে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেয়া মোছলেম উদ্দিন আহমদের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ারও এগিয়ে রাখছে তাঁকে। তবে এসবের বাইরে মোছলেম উদ্দিনের জন্য সবচেয়ে বড় স্বস্তির জায়গাটি হচ্ছে তাকে ঘিরে তিনভাগে বিভক্ত নগর আওয়ামী লীগও কথা বলছে একই সুরে।

কারও সাথে দৃশ্যমান বিরোধ না থাকায় মোছলেম উদ্দিন মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরিবার ও তাঁদের অনুসারিদের থেকে যেমন সহযোগিতা পাচ্ছেন, তেমনি সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের সাথে তাঁর সখ্যের কারণে এ পক্ষের সমর্থনও ঘরে তুলতে পারছেন তিনি।

সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামও বলছেন, মোছলেম উদ্দীনকে জয়ী করতে সবটুকু করবেন তিনি। সব মিলিয়ে নির্বাচনকে ঘিরে দক্ষিণ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান এবং কর্মীদের আবেগ মোছলেম উদ্দীনকে ফুরফুরে মেজাজে রাখলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু কেন্দ্রীক জোটগত জটিলতাও আছে তাঁর সামনে।

জাতীয় রাজনীতিতে আলোচিত জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু প্রধানমন্ত্রীর আর্শীবাদপুষ্ট নেতা হিসেবে পরিচিত। মাত্র ২৬ বছর বয়সে মন্ত্রী হয়ে চমক দেখানো ডাকসুর সাবেক জিএস বাবলুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার সমৃদ্ধ ও ভালো ইমেজসম্পন্ন। ২০০৮ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে জাতীয় পার্টিকে মহাজোটে আনতে এবং ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের সংকটকালীন সময়ে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে আনতে বাবলুর ভূমিকা বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছিল। এসবের প্রতিদান হিসেবে পুরস্কৃতও হয়েছিলেন বাবলু। সেসময় বাবলুকে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী) আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদও করা হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তাকে কক্সবাজারের একটি আসন থেকে মনোনয়ন দিলেও শেষে স্থানীয় আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফলে মহাজোটের মনোনয়ন তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয় তাঁকে।

এবারও মনোনয়ন জমা দিয়ে বাবলু বলেছেন, মহাজোটের প্রার্থী হতে প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা চলছে। জাতীয় রাজনীতির হিসেব নিকেশে শেষ মুহূর্তে মহাজোটের সমর্থন তিনি পাচ্ছেন কিনা তা দেখার বিষয়।

চট্টগ্রামে বিএনপির রাজনীতিতে ভালো অবস্থানে থাকা আবু সুফিয়ানের জন্য ৮ আসনে নির্বাচনের অভিজ্ঞতা নতুন নয়। সুফিয়ান অনুসারিদের ধারণা, বিএনপির জনপ্রিয়তা এবং তাঁর ব্যক্তিগত অবস্থান ওই আসনে তাঁর জন্য সুবিধাজনক অবস্থা তৈরি করতে পারে। সর্বোপরি নির্বাচনে মোর্শেদ খানের না থাকা তাঁর জন্য বড় প্লাসপয়েন্ট। এছাড়া নির্বাচনে তাঁর জোটগত জটিলতাও নেই। ধারণা করা হচ্ছে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত ফল তাঁর পক্ষে যেতে পারে।

এআরটি/এফএম/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!