হাইকোর্টের নির্দেশে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে নিহত সাত জন শ্রমিকের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে মোট ৩৫ লাখ টাকা দিতে হয়েছে এস আলম গ্রুপকে।
নিহতদের পরিবারকে টাকা দেওয়া সংক্রান্ত প্রতিবেদন রোববার (২৫ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন একক বেঞ্চে দাখিল করা হয়েছে।
এস আলম গ্রুপের আইনজীবী মোহাম্মদ আরশাদুর রহমান এ প্রতিবেদন দাখিল করেন।
গত ১৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ৭ শ্রমিক নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়।
তবে ওই ঘটনায় ডিসি ও এসপির নেতৃত্বে গঠন করা দু’টি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আদালতে দাখিল করার জন্যে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন রাষ্ট্রপক্ষ।
এ ছাড়া রোববার (২৫ জুলাই) সংশ্লিষ্ট কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার বলেন, ডিসি ও এসপির নেতৃত্বে গঠিত দু’টি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল করতে আদালত ৪৫ দিন সময় দিয়েছিলেন। আমরা আদালতের কাছে আরো সময় চেয়েছি।
গত ৪ মে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ৭ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় পরিবারগুলোকে আপাতত ৫ লাখ টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে তিন কোটি টাকা ও আহত প্রত্যেকের পরিবারকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
এছাড়া ওই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। পাশাপাশি ডিসি ও এসপির নেতৃত্বে গঠন করা দু’টি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ৪৫ দিনের মধ্যে দাখিল করতে বলা হয়।
হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে ওইদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন।
গত ২২ এপ্রিল একটি মানবাধিকার সংগঠন চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
রিটে পুলিশের গুলিতে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে তিন কোটি টাকা ও আহত প্রত্যেকের পরিবারকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন এ রিট দায়ের করেন।
পরে ২৭ এপ্রিল একই ঘটনায় আরো ৫টি সংগঠন হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), নিজেরা করি, সেফটি অ্যান্ড রাইটস ও অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি)।