চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ফোরকানিয়া মাদ্রাসার শিশু শ্রেণী পডুয়া ৬ বছর বয়সী এক কন্যা শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার খাগরিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাঙ্গু নদী তীরের ভরাখাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর থেকে খাগরিয়া ইউনিয়নের গণি পাড়ার বক্কর বাড়ির মৃত সোনা মিয়ার ছেলে অভিযুক্ত মো. ইউছুফ ও তার পরিবার ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে বুধবার সকালে থানা পুলিশ শিশুটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে প্রথমে দোহাজারী হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন চিকিৎসকরা। ঘটনার পর থেকে ধর্ষণে অভিযুক্ত ইউছুফ পলাতক রয়েছেন।
বুধবার সকালে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ইউসুফকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকায় মিছিল বের করেন।
ধর্ষিতা শিশুটির মা বলেন, ‘আমার মেয়ে খাগরিয়া ফৌজদার ঘোনা নুরানী মাদ্রাসার শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী। ঘটনার দিন দুপুর ২টার দিকে আমার মেয়েটি হাতে একটি ১০টাকার নোট নিয়ে কেঁদে কেঁদে ঘরের দিকে আসছিল। তার হাতে টাকা দেখে মেয়েকে আমি মারধর করি। পরে ঘরে নিয়ে কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে আমাকে পুরো ঘটনা খুলে বলে। এ বছর আমার মেয়েটি বার্ষিক পরীক্ষা দিচ্ছিল। ঘটনার রাতে আমার মেয়ের গায়ে জ্বর উঠে যায়। এ বিষয়ে আমি থানায় অভিযোগ করবো এবং ধর্ষণকারীকে গ্রেপ্তার করে ফাঁসি দেওয়ার দাবী জানাচ্ছি।’
খাগরিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. মহসিন বলেন, ‘আমাকে বুধবার সকালে চৌকিদার রফিক ফোন করে বলে, তার নাতনী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। সকালে চেয়ারম্যান সাহেবকে অবগত করে সাথে পুলিশ ও এলাকার লোকজন নিয়ে আমি শিশুটির বাড়িতে যাই। তাকে উদ্ধার করে দোহাজারী হাসপাতালে নিয়ে যাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ধর্ষণে অভিযুক্ত ও তার আত্মীয়রা এলাকায় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত। ঘটনার দিন রাতে তারা শিশুটির পরিবারকে টাকা ও হুমকি-ধমকি দিয়ে চাপে রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু শিশুটির প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হলে, শিশুটির মায়ের কাছ থেকে এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়।’
এ ব্যাপারে খাগরিয়া ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু বক্কর বলেন, ‘ধর্ষণে অভিযুক্ত ইউসুফের এমন ঘটনার নজির এলাকায় আগেও রয়েছে। প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার লোকজন সাহস করে মুখ খুলছে না। বুধবার এলাকার কিছু লোকজন ধর্ষকের ফাঁসির দাবীতে মিছিল করেছেন।’
দোহাজারী হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সায়েরা বেগম বলেন, ‘শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।’
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেক মুহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে চমেক হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। শিশুটির অভিভাবকরা মামলা করতে এলে তা রুজু করা হবে। ধর্ষণে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের দুইটি টিম কাজ করছেন।’
এমএফও