চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার জট নিরসনে নতুন করে ৬ ধরনের পণ্য বেসরকারি ইনল্যান্ড কনটেইনারে ডিপোতে (অফডকে) সংরক্ষণের অনুমোদন দেওয়া হলেও বন্দরের কনটেইনার জট কমার সম্ভাবনা কম। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওই আদেশেও খুব একটা সুফল মিলবে না বলে মনে করছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।
নতুন এই ৬ পণ্য হচ্ছে সব ধরনের বীজ, ফাইবার, ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের আমদানি করা ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদিত ব্লক লিস্টের পণ্য, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের আমদানি করা সুতা, ইনসেকটিসাইড এবং টায়ার কর্ড। এ আদেশ ৩০ জুন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, বন্দরে ৪৯ হাজার কনটেইনারের জটের মধ্যে এ ৬ ধরনের আমদানি পণ্যের কনটেইনার খুব বেশি হবে না। অফডকগুলোতে সাড়ে ১৮ হাজারের বেশি কনটেইনার নেওয়ার সুযোগ থাকলেও ৬টি পণ্য নির্ধারণ করে দেওয়ায় জট খুব একটা কমবে না। তবে যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে সেটি মন্দের ভালো। বর্তমানে বহির্নোঙরে সব রেকর্ড ছাড়িয়ে শুধু অপেক্ষমাণ কনটেইনার জাহাজই আছে ৩৭টি। যে ধীরগতিতে কনটেইনার হ্যান্ডলিং হচ্ছে জেটিতে, তাতে তিন সপ্তাহ লাগবে এ জাহাজগুলো বন্দর ছাড়তে।
এদিকে ২৭ মার্চ থেকে বন্দরে আসা কনটেইনারগুলো ২০ এপ্রিলের মধ্যে খালাস নিলে স্টোর রেন্ট ১০০ ভাগ মওকুফ থাকবে। এর পরদিন থেকে খালাস নিলে মওকুফ প্রযোজ্য হবে না। প্রচলিত নিয়মে স্টোর রেন্ট পরিশোধ করতে হবে।
কিন্তু এরপর বন্দরের কনটেইনার জট নিরসেন কোন সুফল আসবে কিনা জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল আবুল কালাম আজাদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা কনটেইনার ডেলিভারি না নেওয়া চরম জটের কারণে বন্দরের অচলবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু ৬ পণ্যে অফডকে পাঠানো হলেও সুফল কতটুকু পাওয়া যাবে, সেটাই দেখতে হবে আমাদের। অপেক্ষা করে দেখি, কী করা যায়। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, বন্দরের কনটেইনার জট নিরসনে চট্টগ্রামের অফডকগুলোতে অনুমোদিত ৩৮টি পণ্যের পাশাপাশি আরও ৬টি পণ্য সাময়িকভাবে সংরক্ষণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বেসরকারি ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান নুরুল কাইয়ুম খান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ছয়টি পণ্য অফডকে রাখার অনুমতি দিয়েছে। এই ৬টি পণ্যের কনটেইনার ১ হাজার টিইউএস থেকে বেশি হবে না। এতে বন্দরের কনটেইনার জট কমানোর উদ্দেশ্য সফল হবে না।’
তিনি বলেন, বন্দরের কনটেইনার জট কমাতে হলে কমপক্ষে ২০ হাজার টিইউএস কনটেইনার সরাতে হবে। এক্ষেত্রে অফডকে আরো পণ্য পাঠাতে পারে। এতেই সুফল আসবে।
বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) খায়রুল কবীর সুজন বলেন, বন্দরে এখন যে পরিমাণ জট সৃষ্টি হয়েছে সেটি নিরসন করা অনেক দুরূহ কাজ হবে। কারণ ছয়টি পণ্য অফডকে নেওয়া হলেও তাতে সামান্য পরিমাণ কনটেইনার কমবে। এতে বন্দরের অচলাবস্থা নিরসন হবে না। অচলাবস্থা নিরসনের জন্য বন্দর থেকে কনটেইনার দ্রুত ডেলিভারি হতে হবে।
এএস/সিপি