৬ কোটি টাকার সড়ক নির্মাণে এতো অনিয়ম বাঘাইছড়িতে!

রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে এলজিইডির সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত উপজেলার মারিশ্যা বাজার, মাইনিমূখ বাজার, ভায়া বাবুপাড়া বটতলা ও দক্ষিণ সারোয়াতলী পর্যন্ত ১ দশমিক ৯০৫ কিমি সড়ক নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়মের এ অভিযোগ উঠে।

জানা গেছে, সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে মাটি ভরাট, ইট বিছানোর কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইউটিমং ও এসএস ট্রেড্রাস। ১৭-১৮ অর্থ বছরে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া সড়কের কালভার্ট, ড্রেন, ব্রিজ ও গার্ডওয়ালের কাজ পায় মেসার্স নিপা এন্টারপ্রাইজ ও এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

অভিযোগ রয়েছে, সড়ক নির্মাণ কাজের শুরুতেই অনিয়মের অভিযোগে স্থানীয় গ্রামবাসী কাজে বাধা দিলেও উপজেলা প্রকৌশলীর যোগসাজশে ইচ্ছেমত কাজ চালিয়ে যায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো। পরবর্তী স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও কারবারিদের অভিযোগের কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তবে কাজ পুরোপুরি শেষ না করলেও উপজেলা প্রকৌশলীর যোগসাজশে চূড়ান্ত বিল উঠিয়ে নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো।

৬ কোটি টাকার সড়ক নির্মাণে এতো অনিয়ম বাঘাইছড়িতে! 1

৩০ নম্বর সারোয়াতলী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান জোতিন রায় চাকমা অভিযোগ করেন সড়কের ড্রেন, কালভার্ট ও ব্রিজ নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইট ও খোয়া। এছাড়া বালি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে পাহাড়কাটা মাটি। পর্যাপ্ত পরিমাণে সিমেন্টগুলো ব্যবহার করা হয়নি। ফলে কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার আগেই বেশিরভাগ স্থানে গার্ডওয়ালসহ ড্রেন ধসে যাচ্ছে।

এই জনপ্রতিনিধি আক্ষেপ করে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ঠিকাদারের ব্যাপক দুর্নীতির কারণে শিডিউল অনুযায়ী কাজ হয়নি। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের সঠিক তদারকি থাকলে সড়কের এই বেহাল দশা হতো না।

৩৮৪ নম্বর সারোয়াতলী মৌজার কারবারি প্রকাশ চাকমা বলেন, কাজের কোন তদারকি ছিল না। কাজ শেষ না করেই ঠিকাদাররা পুরো টাকা নিয়ে গেছে। সড়কের দুই পাশে ওয়াল ও মাটি ভরাট করার কথা থাকলেও মাটি ভরাট করা হয়নি। তাই সড়কের মাটি সরে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

৬ কোটি টাকার সড়ক নির্মাণে এতো অনিয়ম বাঘাইছড়িতে! 2

কাজে অনিয়ম বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, প্রকল্পের দশ শতাংশ জামানত এখনও অফিসে জমা আছে। কাজে কোন ধরণের সমস্যা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেবো।

বাঘাইছড়ি এলজিইডি বিভাগের প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান ঠিকাদারের পক্ষ নিয়ে বলেন, বিষয়টি লেখালেখির দরকার নেই। অফিস থেকে ঠিকাদারকে চিঠির মাধ্যমে কাজ সমাপ্তির জন্য বলা হবে। যদি কাজ না করে তবে জামানত বাতিল করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, সড়কটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে অনিয়মের সত্যতা পেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!