১৮ মামলার আসামি ডাইল কাদের পুলিশের জালে, হোম ডেলিভারি দেয় ফেন্সিডিল

0

তার নাম ডাইল কাদের। ছোটবেলা থেকেই ফেনসিডিলের সাথে সখ্যতা তার। সে সুবাধে নগরে ফেনসিডিলের ডন হিসেবে কামিয়েছেন অর্থ ও বিত্ত। এই ফেনসিডিলের কারণে তাকে জড়াতে হয়েছে ১৮টি মাদক মামলায়। শুধু তাই নয়, মাদক ব্যবসার প্রসার ঘটাতে একাধিক কর্মচারীর মাধ্যমে ফেন্সিডিল হোম ডেলিভারি করে এই কুখ্যাত মাদকবিক্রেতা।

কিন্তু প্রতিবারই যেন পার পেয়ে যায় সে। তবে শেষমেশ আর রেহাই মিললো না। এবার সেই ‘ডাইল কাদের’কে দুই সহযোগীসহ আটক করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।

সোমবার (২৮জুন) ফিশারিঘাট এলাকা থেকে ভোররাতে ফেনসিডিল সহ মো. আব্দুল কাদের প্রকাশ ডাইল কাদের (৪০), মো. শিপন (২৬) ও মো. নিশান (৩০) নামে তিন মাদক বিক্রেতাকে আটক করে কোতয়ালী থানা পুলিশ।

s alam president – mobile

এসময় তাদের কাছ থেকে ১৫০ পিস ফেনসেডিল ও একটি পিক-আপ ভ্যান জব্দ করা হয়। এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, ‘কাদের একজন কুখ্যাত মাদক বিক্রেতা। সোমবার ভোররাতে ১৫০ পিস ফেনসিডিল সহ কাদের ও তার দুই সহযোগিকে আটক করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘তাকে মাদকসহ একাধিকবার আটক করলেও জামিনে বের হয় সে পুনরায় মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। তার নামে মোট ১৮টি মামলা রয়েছে এবং সবগুলোই মাদক মামলা।’

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মাদক বিক্রির উদ্দেশ্যে একটি পিক-আপ ভ্যান মাদক নিয়ে কক্সবাজারের যাবে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোতোয়ালী থানা পুলিশ ফিরিঙ্গিবাজার ও ফিশারিঘাট এলাকায় টহল দিতে থাকে। একটি পিকআপ ভ্যানকে সন্দেহ হলে ডিউটিরত পুলিশ তাকে থামার নির্দেশ দিলেও গাড়িটি গতি বাড়িয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

Yakub Group

এ সময় পুলিশ ধাওয়া দিয়ে গাড়িটিকে মাদক সহ আটক করে। অভিযান চলাকালে আরও দুই মাদক বিক্রেতা পালিয়ে যায় বলেও পুলিশ জানায়।

উল্লেখ্য, আটক ডাইল কাদেরের বিরুদ্ধে সিএমপি’র কোতোয়ালী, ডবলমুরিং ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানায় সর্বমোট ১৮টি মাদকদ্রব্য আইনের মামলা আছে। অপর আসামি নিশানের বিরুদ্ধে নগরীর পাঁচলাইশ ও কুমিল্লার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত আসামি আব্দুল কাদের প্রকাশ ডাইল কাদের, মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি থানার ইয়াকুব বাড়ির মৃত আবদুর রহমানের পুত্র। বর্তমানে সে পাঁচলাইশ থানার ২নং গেইট রহমান নগর এস আলম ফ্যাক্টরির পাশে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে। অপর আসামি নিশান পাঁচলাইশ থানার ২নং গেইট এলাকার মেয়র গলির সৈয়দ মো. নওশেদের পুত্র। এবং শিপন কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার মৃত ফজলুল হকের পুত্র। বর্তমানে সে সদরঘাট থানার মাদারবাড়ি মাঝিরঘাট এলাকার ইব্রাহিম সওদাগরের বাড়িতে বসবাস করে।

পুলিশের কাছে মাদক ব্যবসার কথা স্বীকার করে কাদের জানায়, ১৪ (চৌদ্দ) বছর বয়স থেকে রেলস্টেশনে ঘুমাত সে। বরিশাল কলোনির মাদক বিক্রেতা ডন ফারুকের মাদক ক্রয় বিক্রয়ের সাথে সে জড়িত। একপর্যায়ে ফারুকের ফেন্সিডিলের ক্রয় বিক্রয়ের দায়িত্বে পেয়ে কাদের পরিচিতি লাভ করে ডাইল কাদের হিসেবে।

পুলিশ ও র‌্যাবের বিভিন্ন অভিযানে একাধিকবার গ্রেপ্তার হওয়ার পরেও জামিনে বের হয়ে সেই কাদের পুনরায় ফেন্সিডিল (ডাইল) ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত এবং চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্নস্থানে ফেন্সিডিল বিক্রয়ে তার কমিশন এজেন্ট রয়েছে বলে স্বীকার করে।

কাদের জানায়, বর্তমানে ইয়াবার চাইতেও ফেন্সিডিলে লাভ বেশি। একসময় ফেন্সিডিলের দাম ৫০০-৬০০ টাকা হলেও বর্তমানে ১টি ফেন্সিডিলের দাম ৩৩০০ টাকা বলে জানায়। অধিক লাভবান হওয়ার কারণে সে এই ব্যবসা থেকে ফিরে যেতে চায় না। বর্তমানে সে মোটরসাইকেল, রিক্সা, পিকআপ সহ বিভিন্ন যানবাহন যোগে একাধিক কর্মচারীর মাধ্যমে ফেন্সিডিল হোম ডেলিভারি দেয় বলে জানায়।

বিএস/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!